Thursday, September 28, 2023
Homeইসলামঘুমানোর আগের ও পরের দোয়া আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

ঘুমানোর আগের ও পরের দোয়া আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

প্রায় সব লোকেরাই রাতের খাবারের পর ঘুমিয়ে পড়ে। তবে অনেকেই আছে, যারা রাতের খাবারের পর আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য বিভিন্ন ধরণের আমল করে থাকে। অর্থাৎ, যাই করা হোক না কেন সবাই কিন্তু একসময় ঘুমাতে যায়। তাই ঘুমানোর আগে ও পরে নবী (সাঃ) যে দোয়া পাঠ করতেন, তাঁর উম্মত ও মুসলমান হিসেবে আমাদের তা জানা প্রয়োজন। একারণে আজকের আর্টিকেলে আমি ঘুমানোর আগের ও পরের দোয়া আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ সম্পর্কে আলোচনা করব।

ঘুমানোর আগের দোয়া, আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

হজরত হুযাইফাহ (রা) বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রাতের বেলায় নিজ বিছানায় শোয়ার (ঘুমানোর আগে) সময় নিজের হাত গালের নিচে রাখতেন। তারপর নিচের দোয়াটি বলতেন-

ঘুমানোর আগের দোয়া, আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ
ঘুমানোর আগের দোয়া, আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

ঘুমানোর দোয়া আরবি-

‏ اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا

বাংলা উচ্চারণ- “আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।”

বাংলা অনুবাদ / অর্থ : “হে আল্লাহ! আপনারই নামে মরে যাই আবার আপনারই নামে জীবন লাভ করি।”

ঘুমানোর পরের দোয়া, আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

আর রাসূল (সাঃ) যখন (ঘুম থেকে) সজাগ হতেন, তখন বলতেন-

ঘুমানোর পরের দোয়া, আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ
ঘুমানোর পরের দোয়া, আরবি ও অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

ঘুম থেকে সজাগ হওয়ার দোয়া আরবিঃ

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

বাংলা উচ্চারণ- “আলহামদু লিল্লাহিল লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।”

বাংলা অনুবাদ /অর্থ : “সব প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করেছেন এবং তার দিকেই আমাদের পুনরুত্থান।”

ঘুমানোর সময়ের যিকির / দোআ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘তোমাদের কোনো ব্যক্তি তার বিছানা ত্যাগ করলো, আবার ঘুমাতে ফিরে এলো সে যেন তার চাদর বা লুঙ্গির আঁচল দিয়ে তিনবার বিছানাটি ঝেড়ে নেয়। আর যেন সে বিসমিল্লাহ পড়ে, (আল্লাহর নাম নেয়); কেননা সে জানে না যে, তার চলে যাবার পর এতে কী পতিত হয়েছে।

তারপর সে যখন শোয়, তখন যেন এ দোয়াটি বলে,

بِاسْمِكَ رَبِّيْ وَضَعْتُ جَنْبِيْ، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، فَإِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِيْ فارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا، بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِيْنَ

আরবি উচ্চারণ: বিইসমিকারব্বী ওয়াদা‘তু জাম্বী, ওয়া বিকা আরফা‘উহু। ফাইন্ আম্‌সাক্তা নাফ্‌সী ফারহামহা, ওয়াইন আরসালতাহা ফাহ্‌ফায্‌হা বিমা তাহ্‌ফাযু বিহী ‘ইবা-দাকাস সা-লিহীন

বাংলা অর্থ: আমার রব! আপনার নামে আমি আমার পার্শ্বদেশ রেখেছি (শুয়েছি) এবং আপনারই নাম নিয়ে আমি তা উঠাবো। যদি আপনি (ঘুমন্ত অবস্থায়) আমার প্রাণ আটকে রাখেন, তবে আপনি তাকে দয়া করুন। আর যদি আপনি তা ফেরত পাঠিয়ে দেন, তাহলে আপনি তার হেফাযত করুন যেভাবে আপনি আপনার সৎকর্মশীল বান্দাগণকে হেফাযত করে থাকেন।

অন্য আরেকটি জিকির হলো –

اَللّٰهُمَّ إِنَّكَ خَلَقْتَ نَفْسِيْ وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا، لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْيَاهَا، إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا، وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا، اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ

উচ্চারণ: “আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা খালাক্তা নাফসী ওয়া আন্তা তাওয়াফ্‌ফাহা। লাকা মামা-তুহা ওয়া মাহ্‌ইয়া-হা। ইন্ আহ্ইয়াইতাহা ফাহ্‌ফায্‌হা ওয়াইন আমাত্তাহা ফাগফির লাহা। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল ‘আ-ফিয়াতা।”

অর্থ: “হে আল্লাহ! নিশ্চয় আপনি আমার আত্মাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনি তার মৃত্যু ঘটাবেন। তার মৃত্যু ও তার জীবন আপনার মালিকানায়। যদি তাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে আপনি তার হেফাযত করুন, আর যদি তার মৃত্যু ঘটান তবে তাকে মাফ করে দিন। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে নিরাপত্তা চাই।”

আরেকটি জিকির হলো –

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তাঁর ডান হাত তাঁর গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দো‘আটি বলতেন:

اَللّٰهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ

উচ্চারণ: “আল্লা-হুম্মা ক্বিনী ‘আযা-বাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ‘ইবা-দাকা।”

বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাকে আপনার আযাব থেকে রক্ষা করুন, যেদিন আপনি আপনার বান্দাদেরকে পুনর্জীবিত করবেন।”

ঘুমানের সময়ের আরেকটি যিকির হলো –

بِاسْمِكَ اَللّٰهُمَّ أَمُوْتُ وَأَحْيَا

আরবি উচ্চারণ: “বিস্‌মিকাল্লা-হুম্মা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া।”

বাংলা অনুবাদ: “হে আল্লাহ ! আপনার নাম নিয়েই আমি মরছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হবো।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী (রা:) এবং ফাতেমাকে (রা:) বলেন:

“আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু বলে দিবো না যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষাও উত্তম হবে? যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তোমরা দু’জনে ৩৩ বার

سُبْحَانَ اللّٰهِ

উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লাহ

অনুবাদ: আল্লাহ অতি-পবিত্র

৩৩ বার

وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা-হ

অনুবাদ: সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য

৩৪ বার

وَاللّٰهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণ: আল্লা-হু আকবার

অনুবাদ: আল্লাহ অতি-মহান

…বলবে, যা তা খাদেম অপেক্ষাও তোমাদের জন্য উত্তম হবে’’।

আরেকটি জিকির হলো –

اَللّٰهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَرَبَّ الْأَرْضِ، وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ، فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى، وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيْلِ، وَالْفُرْقَانِ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ،

উচ্চারণ- “আল্লা-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তিস্ সাব‘ই ওয়া রব্বাল ‘আরশিল ‘আযীম, রব্বনা ওয়া রব্বা কুল্লি শাই’ইন্, ফা-লিক্বাল হাব্বি ওয়ান-নাওয়া, ওয়া মুনযিলাত্-তাওরা-তি ওয়াল ইনজীলি ওয়াল ফুরক্বা-ন, আ‘ঊযু বিকা মিন শাররি কুল্লি শাই’ইন্ আনতা আ-খিযুম-বিনা-সিয়াতিহি।”

অনুবাদ: “হে আল্লাহ! হে সপ্ত আকাশের রব্ব, যমিনের রব্ব, মহান ‘আরশের রব্ব, আমাদের রব্ব ও প্রত্যেক বস্তুর রব্ব, হে শস্য-বীজ ও আঁটি বিদীর্ণকারী, হে তাওরাত, ইনজীল ও কুরআন নাযিলকারী, আমি প্রত্যেক এমন বস্তুর অনিষ্ট থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, যার (মাথার) অগ্রভাগ আপনি ধরে রেখেছেন (নিয়ন্ত্রণ করছেন)।”

আবার,

اَللّٰهُمَّ أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُوْنَكَ شَيْءٌ، اِقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ

উচ্চারণ: “আল্লা-হুম্মা আনতাল আউওয়ালু ফালাইসা ক্বাবলাকা শাইউন। ওয়া আনতাল আ-খিরু ফালাইসা বা‘দাকা শাইউন। ওয়া আনতায যা-হিরু ফালাইসা ফাওক্বাকা শাইউন। ওয়া আনতাল বা-ত্বিনু ফালাইসা দূনাকা শাইউন। ইক্বদ্বি ‘আন্নাদ্-দাইনা ওয়া আগনিনা মিনাল ফাক্বরি।”

অনুবাদ: “হে আল্লাহ! আপনিই প্রথম, আপনার পূর্বে কিছুই ছিল না; আপনি সর্বশেষ, আপনার পরে কোনো কিছু থাকবে না; আপনি সব কিছুর উপরে, আপনার উপরে কিছুই নেই; আপনি সর্বনিকটে, আপনার চেয়ে নিকটবর্তী কিছু নেই, আপনি আমাদের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং আমাদেরকে অভাবগ্রস্ততা থেকে অভাবমুক্ত করুন।”

ঘুমানোর সময়ের জিকির –

اَللّٰهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيْكَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِيْ، وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطانِ وَشِرْكِهِ، وَأَنْ أَقْتَرِفَ عَلَى نَفْسِيْ سُوْءًا، أَوْ أَجُرَّهُ إِلَى مُسْلِمٍ

উচ্চারণ- “আল্লা-হুম্মা ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ শাহা-দাতি, ফা-ত্বিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, রাব্বা কুল্লি শাই’ইন ওয়া মালীকাহু, আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, আ‘উযু বিকা মিন শাররি নাফসী, ওয়ামিন শাররিশ শাইত্বা-নী ওয়াশিরকিহী, ওয়া আন আক্বতারিফা ‘আলা নাফসী সূ’আন আউ আজুররাহু ইলা মুসলিম।”

অনুবাদ – “হে আল্লাহ! হে গায়েব ও উপস্থিতের জ্ঞানী, হে আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা, হে সব কিছুর রব্ব ও মালিক! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আমার আত্মার অনিষ্ট থেকে, শয়তানের অনিষ্টতা থেকে ও তার শির্ক বা তার ফাঁদ থেকে, আমার নিজের উপর কোনো অনিষ্ট করা, অথবা কোনো মুসলিমের দিকে তা টেনে নেওয়া থেকে।”

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“যখন তুমি বিছানা গ্রহণ করবে, তখন নামাযের মত ওযু করবে, তারপর তোমার ডান পার্শ্বদেশে শুয়ে পড়বে। তারপর বল,

اَللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِيْ إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِيْ إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِيْ إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِيْ إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَّرَهْبَةً إِلَيْكَ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِيْ أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ

উচ্চারণ – “আল্লা-হুম্মা আস্‌লামতু নাফ্‌সী ইলাইকা, ওয়া ফাউওয়াদ্বতু আমরী ইলাইকা, ওয়া ওয়াজ্জাহ্‌তু ওয়াজহিয়া ইলাইকা, ওয়াআলজা’তু যাহ্‌রী ইলাইকা, রাগবাতান ওয়া রাহবাতান ইলাইকা। লা মালজা’আ ওয়ালা মান্‌জা মিনকা ইল্লা ইলাইকা। আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা ওয়াবিনাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা।”

অনুবাদ- “হে আল্লাহ! আমি নিজেকে আপনার কাছে সঁপে দিলাম। আমার যাবতীয় বিষয় আপনার কাছেই সোপর্দ করলাম, আমার চেহারা আপনার দিকেই ফিরালাম, আর আমার পৃষ্ঠদেশকে আপনার দিকেই ন্যস্ত করলাম; আপনার প্রতি অনুরাগী হয়ে এবং আপনার ভয়ে ভীত হয়ে। একমাত্র আপনার নিকট ছাড়া আপনার (পাকড়াও) থেকে বাঁচার কোনো আশ্রয়স্থল নেই এবং কোনো মুক্তির উপায় নেই। আমি ঈমান এনেছি আপনার নাযিলকৃত কিতাবের উপর এবং আপনার প্রেরিত নবীর উপর।”

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যাকে এ দো‘আটি শিক্ষা দিলেন, তাকে বলেন: “যদি তুমি ঐ রাতে মারা যাও তবে ‘ফিতরাত’ তথা দীন ইসলামের উপর মারা গেলে।”

বারা ইবনুল আযিব (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) আমাকে বলেন, “বিছানায় যাওয়ার সময় তুমি সালাতের ওযূর মতো ওযূ করবে। এরপর ডান কাতে শুয়ে বলবে: (উপরের দুআটি)। এ তোমার শেষ কথা হবে (এর পরে আর কথাবার্তা বলবে না)। এ রাতে মৃত্যু হলে তুমি ফিতরাতের উপরে (নিষ্পাপভাবে) মৃত্যুবরণ করবে। আর বেঁচে থাকলে তুমি কল্যাণ লাভ করবে।”

অন্য একটি হাদিসে আছে –

بِاسْمِكَ رَبِّيْ وَضَعْتُ جَنْبِيْ فَاغْفِرْ لِيْ ذَنْبِيْ

উচ্চারণ – “বিসমিকা রাব্বী, ওয়াদ্বা‘অ্তু জানবী, ফাগফির লী যাম্বী।”

অনুবাদ – “হে আমার প্রভু , আপনারই নামে শয়ন করলাম। আপনি আমার গোনাহ ক্ষমা করে দিন।”

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রা) বলেন, নবীজী (স) যখন বিছানায় ঘুমের জন্য শয়ন করতেন, তখন উপরোল্লেখিত দু‘আটি বলতেন।

জাবির (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) সূরা সাজদাহ (32:1) ও সূরা মুলক (67:1) তিলাওয়াত না করে ঘুমাতেন না।

আয়েশা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) সূরা বানী ইসরাঈল (17:1) ও সূরা যুমার (39:1) তিলাওয়াত না করে ঘুমাতেন না।

অন্য হাদীসে আয়েশা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) প্রত্যেক রাতে সূরা সাজদাহ (32:1) ও সূরা যুমার (39:1) পাঠ করতেন। হাদীসগুলো সহীহ।

সুতরাং বলা যায়, ঘুমানোর সময়ের অনেক জিকির আছে। এগুলো পালন করলে অনেক সওয়াব হবে।

ঘুম থেকে জেগে উঠার সময়ের জিকির

لَا إِلٰهَ إِلاَّ اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ، سُبْحَانَ اللّٰهِ، وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ، وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ، وَاللّٰهُ أَكْبَرُ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيْمِ، رَبِّ اغْفِرْ لِيْ

আরবি উচ্চারণঃ “লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহূ লা- শারীকালাহূ, লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর। সুবহা-নাল্লাহি, ওয়ালহামদু লিল্লাহি, ওয়া লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়ালা- কুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হিল ‘আলিয়্যিল ‘আযীম, রাব্বিগফির লী।”

বাংলা অনুবাদঃ “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্‌র। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সুউচ্চ সুমহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই। হে রব্ব ! আমাকে ক্ষমা করুন।”

যে ব্যক্তি উপরের দোয়াটি বলবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যদি সে দোয়া করে, তবে তার দোয়া কবুল হবে। যদি সে উঠে ওযু করে নামায পড়ে, তবে তার নামায কবুল করা হবে।

অন্য একটি দোয়ায় বলা হয়েছে যে,

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ عَافَانِيْ فِيْ جَسَدِيْ، وَرَدَّ عَلَيَّ رُوْحِيْ، وَأَذِنَ لِيْ بِذِكْرِهِ

আরবি উচ্চারণ: “আল্‌হামদু লিল্লা-হিল্লাযী ‘আ-ফা-নী ফী জাসাদী, ওয়ারদ্দা ‘আলাইয়্যা রূহী ওয়া আযিনা লী বিযিকরিহী।”

বাংলা অনুবাদ / অর্থ: “সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য, যিনি আমার দেহকে নিরাপদ করেছেন, আমার রূহকে আমার নিকট ফেরত দিয়েছেন এবং আমাকে তাঁর যিক্‌র করার অনুমতি (সুযোগ) দিয়েছেন।”

ঘুমানোর সময় পার্শ্ব পরিবর্তন করার দোআ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন বিছানায় পার্শ্ব পরিবর্তন করতেন তখন বলতেন,

لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ، رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ

উচ্চারণ – “লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল ওয়াহিদুল কাহ্‌হারু রব্বুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরদ্বি ওয়ামা বাইনাহুমাল-‘আযীযুল গাফ্‌ফার।”

বাংলা অর্থ – “মহাপ্রতাপশালী এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। (তিনি) আসমানসমূহ, যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যস্থিত সবকিছুর রব্ব, প্রবলপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল।”

ঘুমন্ত অবস্থায় ভয় এবং একাকিত্বের অস্বস্তিতে পড়ার দো‘আ

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ، وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ

উচ্চারণ – “আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লাহিত্তা-ম্মাতি মিন্ গাদ্বাবিহি ওয়া ইক্বা-বিহি ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহি ওয়ামিন হামাযা-তিশ্‌শায়া-ত্বীনি ওয়া আন ইয়াহ্‌দুরূন।”

বাংলা অনুবাদ- “আমি আশ্রয় চাই আল্লাহ্‌র পরিপূর্ণ কালামসমূহের অসীলায় তাঁর ক্রোধ থেকে, তাঁর শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে, শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে এবং তাদের উপস্থিতি থেকে।”

ঘুমানোর সময় খারাপ স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দেখলে যা করবে

সৎ ও ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে হয়ে থাকে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের তরফ হতে হয়ে থাকে। তাই যখন কেউ পছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন এমন লোকের কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে। …

আর, খারাপ বা অপছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখলে যা যা করা উচিৎঃ

১. তার বাম দিকে হাল্কা থুতু ফেলবে। (৩ বার)

২. শয়তান থেকে এবং যা দেখেছে তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে প্রার্থনা করবে। (৩ বার)

৩. কাউকে এ ব্যাপারে কিছু বলবে না।

৪. অতঃপর যে পার্শ্বে সে ঘুমিয়েছিল তা পরিবর্তন করবে।

৫. যদি ইচ্ছা করে তবে উঠে সালাত আদায় করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Subscribe

- Never miss a story with notifications

- Gain full access to our premium content

- Browse free from up to 5 devices at once

Must read