Home Blog

WeChat / উইচ্যাট একাউন্ট বিক্রি করবেন কীভাবে?

0

চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যবহৃত সামাজিক নেটওয়ার্কগুলির মাঝে একটি হলো WeChat/ উইচ্যাট।মোটকথা, বলা হয় যে এটি ছাড়া আপনি সেখানে থাকতে পারবেন না। একটু গভীরে খনন করলে সেটা জানা উচিত এটি একটি মেসেজিং অ্যাপ (কল এবং বার্তা) মোবাইল। আমরা বলতে পারি যে এটি হোয়াটসঅ্যাপের মতো, তবে চীনা ভাষায়। আপনি যদি আপনার WeChat / উইচ্যাট একাউন্ট বিক্রি করতে চান, তাহলে এ আর্টিকেলটি আপনার জন্য। চলুন তাহলে WeChat / উইচ্যাট একাউন্ট বিক্রি করবেন কীভাবে? এটি সম্পর্কে জেনে নেই।

উইচ্যাট /WeChat একাউন্ট বিক্রি

এটি তৈরি করেছে টেনসেন্ট কোম্পানি এবং সর্বোত্তম ফলাফল পেতে এটিতে ঢেলে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি প্রায়শই আপডেট করা হয় কারণ তারা সর্বদা সমস্ত স্তরে এর কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করে।

WeChat / উইচ্যাট একাউন্ট বিক্রি করবেন কীভাবে? / বিক্রি করার নিয়মাবলি

Wechat একাউন্ট নিড আনলিমিটেড।

৬মাস/১বছর বয়সি একাউন্ট নিড অনলি।প্রুভ সহ।

নিয়মাবলি

১. নাম্বার পাসওয়ার্ড চেন্জ করে একাউন্ট নেওয়া হয়।
২. বিদেশি বায়ার নাম্বার চেন্জ করবে যেহেতু একাউন্ট নাম্বার চেন্জ করার পর ১২/২৪ ঘন্টা লাগবে আপডেট আসতে,সো একটু সময় দিতে হবে একাউন্ট নেওয়ার জন্য।
৩. নাম্বার চেন্জ করার পর একাউন্ট লগ আউট হয়ে যাবে তারপর ভুল করেও একাউন্ট নতুন করে লগ ইন করার ট্রাই করবেন না,একাউন্ট ব্লক যেতে পারে।
৪. ব্লক রিস্ক সম্পুর্ন আপনার নিজের।
৫. একাউন্ট আপডেট দেওয়ার সাথে প্রেমেন্ট পেয়ে যাবেন।বিকাশ/নগদে/ডলারের মাধ্যমে।
৬. সব শেষে আপনার ফোন থেকে এপসটার ডাটা ক্লিয়ার করে একটা স্কিন রেকর্ড ভিডিও দিবেন। তাহলে সব ওকে।।
৭.ভুল কোন ইনফরমেশন দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

যোগাযোগের উপায়

আইডি সেল করার জন্য https://www.facebook.com/asifmia.asif.5 এই ফেসবুক আইডিতে যোগাযোগ করবেন অথবা https://tinyurl.com/yj8jmau3 এই Whatsapp এ যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।।।

ত্বকের যত্ন নেওয়ার চিরকালীন টিপস এবং ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে জেনে নিন

0

সারা বিশ্বের যারা যারা বিউটি ইন্ডাস্ট্রির সাথে আছেন, তারা খুব ভালো করেই জানেন ত্বক পরিচর্যা সম্পর্কে। ত্বক পরিচর্যার সামগ্রীতে সক্রিয় উপাদান হিসেবে নানা প্রাকৃতিক ও ভেষজ উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে। আধুনিক বিউটি প্রডাক্টে যেসব উপাদানগুলো নতুন করে জায়গা করে নিচ্ছে সে সব উপাদান হল। রোজই নিম, অ্যালোভেরা, অলিভ অয়েল সমৃদ্ধ নতুন নতুন ফেসওয়াশ, সাবান, বডি অয়েল, এসব জনপ্রিয় হয়ে উঠতেও বেশি সময় লাগচ্ছে না।

ত্বকের যত্ন নেওয়ার চিরকালীন টিপস এবং ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে জেনে নিন
ত্বকের যত্ন নেওয়ার চিরকালীন টিপস এবং ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে জেনে নিন

ত্বক পরিচর্যার এই উপাদানগুলোকে ব্যবহার করে যদি ফল পাওয়া যায় তাহলে আমাদের অনেক পয়সারও সাশ্রয় হবে । উপাদানগুলো ব্যবহার করার টিপস।

নিম

বাংলাদেশে এখনও প্রচুর নিমগাছ রয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতে ত্বকের যত্নে নিম ব্যব্যহার করা হচ্ছে। ব্রণ, র‍্যাশ, সংক্রমণ আটকে ত্বক সুস্থ ও তরতাজা রাখে নিম। ১০/১২টা টাটকা নিমপাতা বেটে আঙুল দিয়ে সারা মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন তারপর দেখুন ম্যাজিক। আর কখনোই ব্রণ হবে না।

মধু

নানারকম ফেসপ্যাক বা ক্রিমে অ্যাকটিভ উপাদান হিসেবে মধু যোগ করা হয়। মধুতে অ্যান্টি অক্সিডান্ট থাকে, ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও মধু খুবই উপকার করে। সারা মুখে মধুর প্রলেপ মেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। জোজোবা অয়েলের সঙ্গে মধু মিশিয়েও মুখে মাখতে পারেন। ত্বক পরিষ্কার ও নরমও হবে।

আমলকি

বাজারে আমলকি সারা বছরই পাওয়া যায়। আমলকি থেঁতো করে রসটা বের করে নিন। মধুর সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। দশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ত্বক উজ্জ্বল হবে দাগের কোন চিহ্নও থাকবে না।

মুলতানি মাটি

ত্বকের যে কোন সমস্যায় মুলতানি মাটির ব্যবহার করা হয়। নানারকম দামি ব্র্যান্ডের ফেসপ্যাকেও ব্যবহার করা হয় মুলতানি মাটি। এবার নিজেই তৈরি করে ফেলুন আপনার এক্সক্লুসিভ মাডপ্যাক। এক চামচ মুলতানি মাটি, এক চামচ মধু আর এক চামচ গোলাপজল, ব্যস! ভালো করে মিশিয়ে মুখে লাগান, শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করে দেখুন ত্বকের ম্যাজিক।

হলুদ

সাবার পরিচিত উপাদান হল হলুদ। ব্রণর উপশম, ব্রণর ক্ষতচিহ্ন, দাগছোপ কমানো, বয়সের ছাপ প্রতিরোধের মতো নানা ব্যাপারে হলুদ খুব কার্যকর ভূমিকা নেয়। তবে গায়ের রং উজ্জ্বল করতে হলুদের ভূমিকা রয়েছে। চন্দনবাটা আর মধুর সঙ্গে হলুদ বাটা মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করে দেখুন ত্বকের কেমন পরিবর্তন আসবে।

মেহেদী পাতা

সব উপাদানের মধ্যে মেহেদী পাতাও খুব ভাল একটা উপাদান। এটা মনে হয় সবাই চিনেন। বাজারে কিনতেও পাওয়া যায়। কিছু মেহেদী পাতা বেটে নিন তারপর মুখে লাগান শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর মুখটা আলতোভাবে ধুয়ে ফেলুন। তারপর দেখুন ত্বক কতটা ছফট হয়। এতে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

বর্ণমালা কালে বলে? বাংলা বর্ণমালা পরিচিতি

0

বাংলা বর্ণমালাঃ বাংলা বর্ণমালায় বর্ণের সংখ্যা মোট ৫০টি। এর মধ্যে স্বরবর্ণ ১১টি এবং ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯টি। নিম্নে বর্ণমালা কালে বলে? বাংলা বর্ণমালা এর পরিচয়, মাত্রা, স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো –

বাংলা বর্ণমালা
বাংলা বর্ণমালা

বর্ণমালা / বঙ্গলিপি কালে বলে?

বর্ণমালাঃ যে কোন ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সেই ভাষার বর্ণমালা বলে। যেমন – অ,আ,ক,খ ইত্যাদি।

পড়ুন – বর্ণ (Letter) কাকে বলে? বর্ণ কত প্রকার ও কি কি?

বঙ্গলিপিঃ যে বর্ণমালায় বাংলা ভাষা লিখিত হয়, তাকে বঙ্গলিপি বলে।

পড়ুন – বচন কি বা কাকে বলে? বচনের প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ

বাংলা বর্ণমালা পরিচিতি

বাংলা বর্ণমালায় মোট ৫০ টি বর্ণ রয়েছে। এর মাঝে ১১ টি স্বরবর্ণ আর বাকি ৩৯ টি ব্যঞ্জনবর্ণ। নিম্নে এগুলো দেওয়া হলো –

পড়ুন – ধাতু কি বা কাকে বলে? ধাতুর প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ

নামবর্ণমালাসংখ্যা
স্বরবর্ণঅ,আ,ই,ঈ,উ,ঊ,ঋ,এ,ঐ,ও,ঔ১১ টি
ব্যঞ্জনবর্ণক,খ,গ,ঘ,ঙ৫ টি
চ,ছ,জ,ঝঞ৫ টি
ট,ঠ,ড,ঢ,ণ৫ টি
ত,থ,দ,ধ,ন৫ টি
প,ফ,ব,ভ,ম৫ টি
য,র,ল৩ টি
শ,ষ,স,হ৪ টি
ড়,ঢ়,য়,ৎ৪ টি
ং,ঃ,ঁ৩ টি
মোট=৫০টি

স্বরবর্ণ কাকে বলে?

স্বরবর্ণ: যেসকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোন প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরবর্ণ।বাংলা স্বরবর্ণ ১১ টি। যেমন – অ,আ,ই,ঈ ইত্যাদি।

স্বরবর্ণ আবার ৩ প্রকার। যথা-

  • হ্রস্বস্বর
  • দীর্ঘস্বর
  • দ্বৈতস্বর বা যৌগিক স্বর

ব্যাঞ্জনবর্ণ কাকে বলে

ব্যাঞ্জনবর্ণ: যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে ব্যাঞ্জনবর্ণ বলে।যেমন – ক,খ,গ,ঘ ইত্যাদি। বাংলা ভাষায় ব্যাঞ্জনবর্ণ 39 টি।

ব্যঞ্জনবর্ণের প্রকারভেদ

ব্যঞ্জনবর্ণ ৪ প্রকার। যথা –

  • স্পর্শ ধ্বনি বা স্পর্শ বর্ণ
  • আনুনাসিক বা নাসিক্য বর্ণ
  • উষ্ম ধ্বনি বা উষ্ম বর্ণ
  • অন্তঃস্থ ধ্বনি বা অন্তঃস্থ বর্ণ

এগুলোকে আবার ৫ টি বর্গে বা গুচ্ছে ভাগ করা হয়। যেমন –

বর্গউচ্চারণের স্থানধ্বনিঅন্য নাম
কন্ঠ্যক,খ,গ,ঘ,ঙকন্ঠ্যধ্বনি
তালব্যচ,ছ,জ,ঝ,ঞতালব্যধ্বনি
মূর্ধন্যট,ঠ,ড,ঢ,ণমূর্ধন্যধ্বনি
দন্তত,থ,দ,ধ,ণদন্তধ্বনি
ওষ্ঠপ,ফ,ব,ভ,মওষ্ঠধ্বনি

বাংলা বর্ণমালায় মাত্রা কত প্রকার ও কি কি?

বাংলা বর্ণমালার স্বরবর্ণ কিংবা ব্যঞ্জন বর্ণের মাথায় সোজা দাগ থাকলেই তাকে মাত্রা বলে। এক কথায়, বাংলা বর্ণমালার মাথায় যে দাগ বা কসি টানা হয় তাকে মাত্রা বলে।

মাত্রার উপর ভিত্তি করে বর্ণ তিন প্রকার। এগুলো হলো –

  • পূর্ণমাত্রা
  • অর্ধমাত্রা
  • মাত্রাহীন বর্ণ
বর্ণের মাত্রাসংখ্যাস্বরবর্ণব্যঞ্জনবর্ণ
মাত্রাহীন বর্ণ১০টি৪টি (এ, ঐ, ও, ঔ)৬টি (ঙ, ঞ, ৎ, ং, ঃ, ঁ)
অর্ধমাত্রার বর্ণ৮টি১টি (ঋ)৭টি (খ, গ, ণ, থ, ধ, প, শ)
পূর্ণমাত্রার বর্ণ৩২টি৬টি (অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ)২৬টি

বর্ণমালা দ্বারা শব্দ গঠন

বর্ণশব্দ
অজগর, অজ,অনেক, অংশ
আতা, আম, আমি
ইলিশ, ইট, ইতিহাস, ইত্যাদি
ঈশান, ঈগল,ঈদ
উট, উঠান,উত্তর
ঊষা, ঊর্মি, ঊনবিংশ
ঋষি, ঋতু,ঋগ্বেদ, ঋণ
একতারা, একতা, একটি
ঐরাবত,ঐক্য, ঐতিহাসিক
ওল, ওড়না,ওপর
ঔষধ,ঔপনিবেশিক
কলম, কলা, কনুই, কপাল, কচু, কচ্ছপ, কদমফুল, কবুতর, কলস, কাতলা
খবর, খই, খড়, খরগোশ,খুব
গম, গরু, গিয়ে, গেল
ঘর, ঘড়ি,ঘটনা
ব্যাঙ, লাঙল
চক,  চশমা, চড়ুই,চোখ
ছবি, ছড়ি, ছাত্র
জবা, জল, জলজ
ঝর্ণা, ঝড়,ঝামেলা
মিঞা,
টগর, টব, টানাটানি
ঠোঙা, ঠ্যালা, ঠিক
 ডাব, ডুমুর,ডুব
ঢাক, ঢুকা,ঢাকা
চরণ, হরিণ, চাণিক্য, মাণিক্য, বাণিজ্য
তবলা, তরকারি, তরমুজ, তাল
থলে, থালা, থাকা
দই, দড়ি, দিন
ধনিয়া, ধনুক,ধরণ
নদী, নখ,নেই
পটল, পড়াশোনা, পদ্ম, পদ্মা
ফড়িং, ফল, ফসল,ফিরে, ফলে
বই, বটগাছ, বড়শি, বরই, বক, বকুল,
ভক্তি, ভবন, ভাল্লুক
ময়ূর, মহিষ, মগ, ময়না
যব, যত্ন, যন্ত্র, যতন
রজনীগন্ধা, রং, রশি, রসুন
লঞ্চ, লতা, লবণ, লাভলী
শসা, শালবন, শেষ
ষাড়, ষড়ঋতু, মহিষ
সম্রাট, সাগর, সূর্য
হরিণ, হলুদ, হরি
ড়পাহাড়, বড়শি,বড়
ঢ়আষাঢ়, গাঢ়,পঢ়ন
য়ময়না, যায়
উৎসব, চিকিৎসা,উৎস
 ংফড়িং, রং,অংশ
 ঃদুঃখ, আন্তঃমহাদেশীয়
 ঁচাঁদ, ঠাকুরগাঁও,

তাহলে আজ এখানেই থাকলো। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

আরও পড়ুন – অবিভাজ্য ধ্বনি কি বা কাকে বলে? অবিভাজ্য ধ্বনির প্রকারভেদ

দোয়ায়ে মাসুরা আরবি, অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফযিলত

1

নামাজ শেষ করার আগে দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করতে হয়। তারপর সালাম ফিরানো হয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানদের এই দোয়াটি শেখা উচিত। তবে কোন কারণে যদি কেউ ভুলে যায় তার জায়গায় অন্য দোয়াও পাঠ করা যায়। নামাজের যেসব স্থানে মহান আল্লাহ দোয়া কবুল করেন তার মাঝে একটি হলো সালাম ফিরানোর পূর্বে। দোয়া মাসুরা হলো ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া। চলুন তাহলে এ গুরুত্বপূর্ণ দোয়ায়ে মাসুরা আরবি, অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফযিলত সম্পর্কে জেনে নেই –

দোয়ায়ে মাসুরা আরবি, অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফযিলত

দোয়ায়ে মাসুরা আরবি, অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফযিলত
দোয়ায়ে মাসুরা আরবি, অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও ফযিলত

দোয়ায়ে মাসুরা আরবি

 اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ

দোআ মাসূরা বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী যুল্মান কাসীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা; ফাগফির লী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আন্তাল গফুরুর রাহীম।

দুয়া মাসুরা বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ ! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র আপনিই । অতএব আপনি আপনা হতেই আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু ।

দোয়া মাসূরা ইংরেজি অর্থ

0′ Allah! I have tormented myself much. There is none but you to forgive the sins. Therefore you forgive all of my sins. And have pity on me! Certainly you are the Great Forgiver and Benevolent.  

দোয়া মাসূরা পড়ার নিয়ম

দোয়া মাসূরা সাধারণত নামাযের শেষের দিকে শেষ বৈঠকে বসে আত্তাহিয়াতু, দুরুদে ইব্রাহিম পড়ার পর পড়ে থাকি । নামাযের নিয়ত বাঁধার পর সানা (সুবাহাকাল্লাহুম্মা) পড়তে হয় । এর পর সূরা ফাতিহা পড়তে হয় । এরপর সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যেকোন একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হয়। তারপর রুকুতে গিয়ে সুবহা-না রব্বিয়াল আযিম পড়তে হয় । এরপর রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাড়াতে হয় । রুকু থেকে উঠে যদি ইমাম হয় তাহলে তাকে পড়তে হয়, ছামিআল্লাহ হুলিমান হামিদাহ, আর মুত্তাকি হলে পড়তে হয় রাব্বানা লাকাল হামদ”। তারপর সিজদায় যেতে হয়, সেজদায় সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা পড়তে হয় । এমনভাবে দুই সেজদার পড় উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধতে হয়।

তারপর আবার পূর্বের নিয়মে সূরা ফাতিহা পড়ে, আগের মত করে পরের রাকাত শেষ করতে হয় । এভাবে যদি দুই রাকাত নামাজ হয়, তাহলে দুই রাকাত পড়ার পরে বসে আত্তাহিয়াতু পড়তে হয় । তারপর দুরুদে ইব্রাহিম পড়তে হয় । তারপর সালাম ফেরানোর আগে এই দোয়া মাসুরা পড়তে হয়।

নামাজে দোয়া মাসুরা না পড়লে কি নামাজ হবে না?

নামাজের মাঝে ও দোয়ায়ে মাসূরা পড়া সুন্নত। নামাজের মাঝে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এমন এক কার্যাবলি বিষয়, যা ছেড়ে দিলে নামাজ বাতিল হয়ে যায় না তবে বিনা অজুহাতে ছেড়ে দিলে নামাজ মাকরুহ হয়। কারন বষত ছেড়ে দেওয়া যায়।

ফরয নামাজ হোক, আর সুন্নত বা নফল নামাজই হোক না কেন, দোয়ায়ে মাসূরা ছেড়ে দিলে নামাজ হবে। কিন্তু কোন কারণ ছাড়া ইচ্ছেকৃতভাবে ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে।

আর ছেড়ে দেওয়ার অভ্যাস করা মারাত্মক গুনাহের কাজ। যা হারাম কাজের কাছাকাছি। এর ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুপারিশ না পাওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই যেকোন নামাজেই দরূদ ও দুয়ায়ে মাসুরা ছেড়ে দেবার অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত।

নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ১২ টি। এগুলো হলো –

  • দুই হাত বাঁধা।
  • সানাপাড়া।
  • আউযুবিল্লাহ পড়া।
  • বিসমিল্লাহ পড়া।
  • আলহামদু শেষে আমিন বলা।
  • প্রত্যেক ওঠা বাসায় আল্লাহু আকবার বলা।
  • রুকুর তাসবিহ পড়া।
  • রুকু হইতে উঠিবার সময়ে সামিআল্লাহু লিমান হামিদা রাব্বানা লাকাল হামদ বলা।
  • সিজদার তাসবিহ পড়া
  • দুরুদ শরীফ পড়া।
  • দোয়ায়ে মাসুরা পড়া।

দোয়া মাসুরার ফযিলত

ইসলামের ৫ টি রুকনের মাঝে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো নামাজ। এটি মানুষের জন্য ফরজ ইবাদাত। ফরজ নামাজ ছাড়াও ওয়াজিব, সুন্নাত, নফলসহ অনেক নামাজ রয়েছে। এসব নামাজে তাশাহহুদ, দরূদসহ অনেক দোয়া পড়তে হয়। নামাজের শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর পূর্বেও রয়েছে দোয়া। যা পড়া সুন্নাত। এ ব্যাপারে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে অনেকগুলো দোয়ার দিক-নির্দেশনা এসেছে। যার মধ্যে একটি দোয়া হলো মাসুরা।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা:) থেকে বর্ণিত, যে একবার হজরত আবু বকর (রাঃ) নবী (সাঃ)এর সেবায় হাজির হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আমাকে একটি দোয়া শিক্ষা দিন, যা আমি আমার নামাজের মধ্যে পড়বো। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তুমি বল,

اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী যুল্মান কাসীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা; ফাগফির লী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আন্তাল গফুরুর রাহীম।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ্‌! আমি আমার নিজ আত্মার উপর অনেক অত্যাচার করেছি, তুমিই একমাত্র গুনাহ মাফকারী; অতএব তুমি আপনা হইতে আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করে দাও। আমার প্রতি দয়া কর। তুমি নিশ্চয়ই ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)


ত আজ এখানেই শেষ করছি। আমার এ পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।

আরও পড়ুন – দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ আরবি সহ অর্থ এবং ফযিলত

পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা | কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ কাকে বলে?

0

পদার্থ বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পদার্থ। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা | কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ কাকে বলে? মৌলিক পদার্থ, যৌগিক পদার্থ, মিশ্র পদার্থ, পদার্থের পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাহলে আর দেরি না চলুন এবার শুরু করা যাক।

পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা | কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ কাকে বলে?
পদার্থ ও পদার্থের অবস্থা | কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থ কাকে বলে?

পদার্থ কাকে বলে?

আমাদের চারপাশে নানারকম জিনিস রয়েছে (যেমন- চেয়ার, টেবিল, মাটি, পানি, বায়ু, লোহা ইত্যাদি)। এ সবকিছুই পদার্থের তৈরি। যা জায়গা দখল করে, যার ওজন আছে, আকার ও আকৃতি আছে এবং বলপ্রয়োগে বাধার সৃষ্টি করে তাকে পদার্থ বলে।

অর্থাৎ, যার ভর আছে, আয়তন  আছে, একটি  নির্দিষ্ট স্থান দখল করে এবং বল বা চাপ প্রয়োগে বাধার সৃষ্টি করে তাকে পদার্থ বলে। যেমন: বাতাস, পানি, চেয়ার, টেবিল, লোহা, কাঠ, মাটি ইত্যাদি। 

পদার্থের বৈশিষ্ট্য

পদার্থের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি সাধারণত ভর, ওজন, আয়তন, ঘনত্ব, স্থিতিস্থাপকতা, আকার ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। এগুলো হলো –

ভর: কোনো বস্তু যেসব উপাদান দিয়ে গঠিত তার পরিমাণই হলো ভর। ভরের একক হলো (g / kg)গ্রাম বা কেজি। 

ওজন: কোন বস্তুকে পৃথিবী কত বল দ্বারা নিজের দিকে আকর্ষণ করছে তার পরিমাণকে ওজন বলে। ওজনের একক হলো নিউটন।  

আয়তন: কোন বস্তু যে যায়গা জুড়ে অবস্থান করে সেটিই হলো সেই বস্তুর আয়তন। 

ঘনত্ব: কোন বস্তুর একক আয়তনের ভরকে এর ঘনত্ব বলে। 

পদার্থের অবস্থা কয়টি ও কি কি?

সাধারণত পদার্থ ৩টি অবস্থায় থাকতে পারে। পদার্থের অবস্থা ৩টি হলো:

  • কঠিন পদার্থ (Solid Matter)
  • তরল পদার্থ (Liquid Matter)
  • বায়বীয় বা গ্যাসীয় পদার্থ (Gaseous Matter)

কঠিন পদার্থ (Solid Matter) কাকে বলে?

কঠিন পদার্থ: যে পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন আছে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় এর আকার ও আয়তনের পরিবর্তন হয় না তাকে কঠিন পদার্থ বলে। যেমন – লোহা, ইট, পাথর, কাঠ ইত্যাদি।

অর্থাৎ, কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন ও নির্দিষ্ট আকার এবং দৃঢ়তা আছে। এর অণুগুলো পরস্পরের অতি সন্নিকটে অবস্থান করে। অর্থাৎ, এদের আন্তঃআণবিক দূরত্ব খুবই কম। এ কারণে এদের মধ্যে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ শক্তি সবচেয়ে বেশি থাকে। উদাহরণ: বালু, পাথর, লবণ ইত্যাদি।

কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য

  • নির্দিষ্ট তাপ ও চাপে কঠিন পদার্থের আকার ও আয়তন সবসময় নির্দিষ্ট থাকে।
  • তাপ প্রয়োগে সাধারণত কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হয়। যেমন : বরফকে উত্তপ্ত করলে তা গলে পানিতে পরিণত হয়।
  • ব্যতিক্রম হলো : ন্যাপথালিন, আয়োডিন, কর্পূর, নিশাদল ইত্যাদি। এসব কঠিন পদার্থ তাপের প্রভাবে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় এবং ঠান্ডা করলে বাষ্প থেকে পুনরায় কঠিন অবস্থায় ফিরে আসে। একে ঊর্ধ্বপাতন বলা হয়।
  • প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগেও কঠিন পদার্থের আয়তনের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না।
  • কঠিন পদার্থের দৃঢ়তা থাকে। বাহির থেকে বল প্রয়োগ না করলে কঠিন পদার্থের আকার ও আয়তনের বিকৃতি ঘটানো যায় না।
  • চাপ দিয়ে কঠিন বস্তুকে তরলে পরিণত করে, চাপ প্রত্যাহার করে পুনরায় কঠিনে পরিণত করা যায়। একে পুনঃশিলীভবন বলে।

তরল পদার্থ (Liquid Matter) কাকে বলে?

তরল পদার্থ: যেসকল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন আছে কিন্তু আকার নেই এবং যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রেই আকার ধারণ করে, তাকে তরল পদার্থ বলে। যেমন – পানি, তেল, দুধ ইত্যাদি।

অর্থাৎ, তরল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার নেই। এ কারণে এদের যে পাত্রে রাখা হয় তার আকার ধারণ করে । তরল পদার্থের অণুগুলো পরস্পরের কাছাকাছি থাকে। তবে এদের মধ্যকার আন্তঃআণবিক আকর্ষণ শক্তি কঠিন পদার্থের মত এত প্রবল নয়। যেমন: পানি, পেট্রোল, কেরোসিন, ভোজ্য তেল ইত্যাদি।

তরল পদার্থের বৈশিষ্ট্য

  • নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে তরল পদার্থের আয়তন নির্দিষ্ট থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার থাকে না।
  • একে যখন যে পাত্রে রাখা হয়, তখন সেই পাত্রের আকার ধারণ করে।
  • বায়ুর চাপ কম থাকলে তরলের স্ফুটনাঙ্ক কমে যায়। যেমন – পাহাড়ের উপর পানির স্ফুটনাঙ্ক ৭০°C.
  • তাপমাত্রা বাড়ালে তরলের আয়তন বাড়ে। তরলের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়াতে থাকলে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পৌঁছে তরল বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে।
  • তরলের তাপমাত্রা ক্রমশ কমালে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এসে তরল পুনরায় কঠিনে পরিণত হয়।
  • তরলের অণুসমূহ স্থান পরিবর্তন করতে পারে।

বায়বীয় বা গ্যাসীয় পদার্থ (Gaseous Matter) কাকে বলে?

গ্যাসীয় পদার্থ বা বায়বীয় পদার্থ: যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন নেই তাকে বায়বীয় / গ্যাসীয় পদার্থ বলে।

গ্যাসীয় পদার্থের অণুসমূহের আন্তঃআণবিক দূরত্ব পদার্থের তিনটি অবস্থার মাঝে সবচেয়ে বেশি, এ কারণে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ শক্তি সবচেয়ে কম। এর ফলে তারা প্রায় সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে চলাচল করে। যেমন: নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, মিথেন ইত্যাদি।

গ্যাসীয় বা বায়বীয় পদার্থের বৈশিষ্ট্য

  • গ্যাসীয় পদার্থের নির্দিষ্ট কোন আকার বা আয়তন নেই। গ্যাস বর্ণহীন বলে তা দেখা যায় না।
  • গ্যাসীয় পদার্থের পরিমাণ যত কমই হোক না কেন, তা যে পাত্রে রাখা হবে সে পাত্রের পুরো স্থান দখল করে থাকে।
  • গ্যাসীয় পদার্থের অণুসমূহের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি, তাই আকর্ষণ শক্তি অনেক কম। এর ফলে তারা প্রায় মুক্তভাবে চলাচল করে।
  • একই তাপমাত্রা ও চাপে সমআয়তন সব গ্যাসে সমান সংখ্যক অণু থাকে।
  • তাপ প্রয়োগে গ্যাসীয় পদার্থ সবচেয়ে বেশি সংকুচিত ও প্রসারিত হয়।

পানিই একমাত্র পদার্থ, যা প্রকৃতিতে কঠিন (বরফ), তরল (পানি) এবং বায়বীয় (জলীয়বাষ্প) এই তিন অবস্থাতেই পাওয়া যায়। যেমন- মেরু অঞ্চলের  বরফ, নদী, সমুদ্রের পানি তরল, বায়ুর জলীয় বাষ্প বায়বীয়। 

প্লাজমা অবস্থা বলতে কি বুঝ?

কঠিন, তরল ও বায়বীয় ছাড়াও পদার্থের আরেকটি অবস্থা রয়েছে। যাকে প্লাজমা অবস্থা বলা হয়।

এ পদার্থের অণুসমূহ পরস্পরের কাছাকাছি থাকে, তবে তাদের মধ্যকার আন্তঃআণবিক আকর্ষণ শক্তি কঠিন পদার্থের মত এত প্রবল নয়।

বজ্রপাতের সময় আমরা যে বৈদ্যুতিক ঝলক দেখতে পাই তা প্লাজমা। প্লাজমা অবস্থায় পদার্থের বিদ্যুৎ পরিবহন ক্ষমতা থাকে। যেমন- বৈদ্যুতিক স্পার্ক, ফ্লুরােসেন্ট বাতি, নিয়ন আলো ইত্যাদি।

পদার্থের গঠনের উপর ভিত্তি করে পদার্থকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো –

  • মৌলিক পদার্থ
  • যৌগিক পদার্থ ও
  • মিশ্র পদার্থ

মৌলিক পদার্থ কাকে বলে?

যেসকল পদার্থকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করলে ওই পদার্থ ব্যতীত অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না তাদেরকে মৌলিক পদার্থ বলা হয়।

যেমন: হাইড্রোজেন (H₂) অণুকে ভাঙলে শুধু হাইড্রোজেনের দুটি পরামাণু পাওয়া যায়, তাই হাইড্রোজেন (H) একটি মৌলিক পদার্থ। অক্সিজেন (O2) অণুকে অক্সিজেনের দুইটি পরমাণু ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। তাই O একটি মৌলিক পদার্থ।

এ পর্যন্ত ১১৮/১১৪ টি মৌল আবিষ্কৃত হয়েছে। এর মাঝে ৯৮/৯২ টি প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। এই ৯৮/৯২ টির মাঝে ১৪ টি তেজস্ক্রিয়তার মাধ্যমে। সবচেয়ে হালকা মৌলিক পদার্থ হলো হাইড্রোজেন (H)।

মৌলিক পদার্থ সাধারণত চার ধরনের হয়। যথা-

  • ধাতু
  • অধাতু
  • উপধাতু
  • নিষ্ক্রিয় মৌল

ধাতু: তাপ ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী মৌলকে সাধারণত ধাতু বলা হয়। সাধারণত ধাতুসমূহ চকচকে ও কঠিন অবস্থায় থাকে। এদেরকে বল প্রয়োগে করে বিভিন্ন আকার দেওয়া যায়। সবচেয়ে হালকা ধাতু হলো লিথিয়াম। সবচেয়ে ভারী ধাতু ইউরেনিয়াম।

ধাতুসমূহ এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হতে পারে। যেমন: কপার (Cu),  অ্যালুমিনিয়াম (Al), লোহা (Fe) ইত্যাদি।  

অধাতু: এরা সাধারণত তাপ ও বিদ্যুৎ অপরিবাহী। অধাতুসমূহ এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক (-) আয়নে পরিণত হতে পারে। যেমন: ফ্লোরিন, সালফার, অক্সিজেন ইত্যাদি। 

উপধাতু: উপধাতু হলো – এরা কখনো ধাতু আবার কখনো কখনো অধাতুর মত আচরণ করে। উদাহরণ: বোরন, সিলিকন, আর্সেনিক, জার্মেনিয়াম, বিসমাথ, অ্যান্টিমনি, পোলোনিয়াম, টেলুরিয়াম ইত্যাদি। 

নিষ্ক্রিয় মৌল: নিষ্ক্রিয় মৌল বলতে পর্যায় সারণির 18 তম শ্রেণীর মৌলগুলোকে বোঝায়। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এরা নিষ্ক্রিয় থাকে বলে এদের নিষ্ক্রিয় মৌল বলা হয়। এরা কোন মৌলের সাথে সংযুক্ত হতে চায় না। এমনকি নিজেরা নিজেরা নিজেদের সাথেও না।

নিষ্ক্রিয় মৌলের সংখ্যা ৭টি। এগুলো হলো: হিলিয়াম (H), নিয়ন(Ne), আর্গন (Ar), ক্রিপটন (Kr), জেনন (Xa), রেডন (Rn) এবং ওগানেসন (Og)। সবচেয়ে হালকা নিষ্ক্রিয় গ্যাস হলো হিলিয়াম। আর সবচেয়ে ভারী গ্যাস অগানেসন।

যৌগিক পদার্থ কাকে বলে?

যে সকল পদার্থকে বিশ্লেষণ করলে দুই বা ততােধিক ভিন্ন ধর্ম বিশিষ্ট মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায় তাদেরকে যৌগিক পদার্থ বলে। যেমন: পানি।

কারণ পানির (H₂O) একটি অণুকে ভাঙলে হাইড্রোজেনের দুটি পরমাণু ও অক্সিজেনের একটি পরমাণু পাওয়া যায়। তাই পানি একটি যৌগিক পদার্থ।

মিশ্রণ বা মিশ্র পদার্থ কাকে বলে?

দুই বা ততোধিক পদার্থকে যে কোনো অনুপাতে মিশালে যদি তারা নিজ নিজ ধর্ম বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে, তবে উক্ত সমাবেশকে মিশ্রণ বলে। 

যেমন – বায়ু একটি মিশ্র পদার্থ। কারণ বায়ুতে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, আর্গন, হাইড্রোজেন ইত্যাদি উপাদান নিজ নিজ ধর্ম বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে।

সমসত্ব ও অসমসসত্ব মিশ্রণ বলতে কি বুঝ?

সমসত্ব মিশ্রণঃ যে মিশ্রণের সকল অংশে উপাদানসমূহ একই অনুপাতে বিদ্যমান এবং যার সর্বত্র একই ধর্ম প্রকাশ পায় তাকে সমসত্ত্ব মিশ্রণ বলে। যেমন – চিনির শরবত একটি সমসত্ব মিশ্রণ।

অসমসত্ব মিশ্রণঃ যে মিশ্রণের বিভিন্ন অংশে তার উপাদানসমূহ বিভিন্ন অনুপাতে থাকে এবং যার বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন ধর্ম প্রদান করে তাকে অসমসত্ব মিশ্রণ বলে। যেমন – বায়ু। কারণ এতে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি নিজ নিজ ধর্ম বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে।

উদ্বায়ী পদার্থ বলতে কি বোঝ?

যে সকল পদার্থকে তাপ দিলে তা সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়, তাদেরকে উদ্বায়ী পদার্থ বলে। উদাহরণ: কপূর, ন্যাপথলিন, আইয়োডিন, নিশাদল, অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড, কঠিন কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি।

গলনাংক ও স্ফুটনাংক কাকে বলে?

গলনাঙ্ক (Melting point): কোনো পদার্থকে কঠিন অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় রূপান্তর করতে যে তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়, তাকে সে পদার্থের গলনাঙ্ক বলে। উদাহরণ: পানির গলনাঙ্ক ০°C।

স্ফুটনাঙ্ক (Boiling Point): যে তাপমাত্রায় কোনো তরল পদার্থ ফুটতে থাকে এবং বাষ্পে পরিণত হয়, তাকে সেই পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক বলে। পানির স্ফুটনাঙ্ক ১০০°।

আন্তঃআণবিক শক্তি কাকে বলে?

অণুসমূহ পরস্পরকে যে শক্তিতে আকর্ষণ করে তাকে আন্তঃআনবিক আকর্ষণ শক্তি বলে। এ শক্তির কারণে অণুসমূহ পরস্পরের সন্নিকটে থাকতে কিন্তু অণুসমূহ সর্বদা কম্পমান। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে কম্পন বৃদ্ধি পায় এবং অণুসমূহ পরস্পর বিচ্ছিন্ন হতে চায়।

আন্তঃআনবিক শক্তি নির্ভর করে পদার্থের প্রকৃতির উপর। এ শক্তির তুলনায় গতিশক্তি কম হলে অণুসমূহ নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকে। অর্থাৎ কঠিন অবস্থার সৃষ্টি হয়। যেসকল বস্তুর আন্তঃআণবিক শক্তি বেশি, তাদের গলনাংক ও স্ফুটনাংকও বেশি। এ শক্তি কম হওয়ায় গ্যাসীয় পদার্থ সমূহের গলনাঙ্ক 0° C এরচেয়ে অনেক কম।

পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন

পদার্থের অবস্থা এর পরিবর্তন মূলত দুই ধরনের হতে পারে। যথা: 

  1. ভৌত পরিবর্তন
  2. রাসায়নিক পরিবর্তন 

ভৌত পরিবর্তন কাকে বলে?

যে পরিবর্তনের ফলে শুধু পদার্থের বাহ্যিক অর্থাৎ বাইরের আকার বা অবস্থার পরিবর্তন হয় কিন্তু তা নতুন কোন পদার্থে পরিণত হয় না, তাকে ভৌত পরিবর্তন বলে। যেমন – পানিকে বরফে ও বাষ্পে পরিণত করা, লোহাকে চুম্বকে পরিণত করা, চিনিকে পানিতে দ্রবীভূত করা ইত্যাদি।

রাসায়নিক পরিবর্তন কাকে বলে?

যে পরিবর্তনের ফলে এক বা একাধিক বস্তু প্রত্যেকে তার নিজস্ব সত্তা হারিয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্ম বিশিষ্ট এক বা একাধিক নতুন বস্তুতে পরিণত হয়, তাকে রাসায়নিক পরিবর্তন বলে। সাধারণত তাপ,চাপ অথবা পদার্থের সংস্পর্শে এলে পদার্থের এ পরিবর্তন ঘটে থাকে।

রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে যে নতুন পদার্থের সৃষ্টি হয় তার অণুতে অবস্থিত মৌলগুলো সাধারণত পূর্বের পদার্থ থেকেই আসে। যেমন- পানি এবং অক্সিজেনের সংযোগে লোহায় মরিচা ধরা, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে পানি তৈরি হওয়া, দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানো ইত্যাদি।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

  • হিমায়িত CO2 কে শুষ্ক বরফ বলা হয়।
  • অক্সিজেন (O) এমন একটি মৌলিক পদার্থ যা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি আছে।
  • সবচেয়ে হালকা বস্তু / মৌলিক পদার্থ / গ্যাস / অধাতু হলো হাইড্রোজেন (H)। 
  • সবচেয়ে হালকা নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়াম
  • সবচেয়ে হালকা ধাতু হলো লিথিয়াম
  • সবচেয়ে ভারী মৌলিক গ্যাস অগানেসনরেডন (Rn)
  • সবচেয়ে ভারী ধাতু ইউরেনিয়াম (U)
  • সবচেয়ে ভারী তরল ধাতু হলো পারদ

ডেঙ্গু জ্বর কি? ডেঙ্গু রোগের / জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু হলে করণীয় কি কি?

0

বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক রোগের একটি। এই জ্বরে আক্রান্ত রোগী একদিকে যেমন দূর্বল হয়ে যায়, অন্যদিকে এর রেশ দীর্ঘদিন শরীরে থেকে যায়। তবে ভয়ের কিছু নেই। ডেঙ্গু প্রাণঘাতি কোনো রোগ নয়। বিশ্রাম ও নিয়মমাফিক চললে এ রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে ডেঙ্গু রোগ কীভাবে ছড়ায়, এর চিকিৎসা, ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে অনেকেই জানে না।

ডেঙ্গু জ্বর কি? ডেঙ্গু রোগের / জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু হলে করণীয় কি কি?
ডেঙ্গু জ্বর কি? ডেঙ্গু রোগের / জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু হলে করণীয় কি কি?

তাই বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলে আমি ডেঙ্গু জ্বর কি? ডেঙ্গু ভাইরাস কী?ডেঙ্গু রোগের / জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু হলে করণীয় কি কি? ইত্যাদি সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। চলুন তাহলে এসব বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই।

ডেঙ্গু জ্বর কি? ডেঙ্গু ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?

ডেঙ্গু জ্বর একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগ। যা এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে হয়। সাধারণত কোন এডিস মশা কোন ডেঙ্গু রোগীকে কামড়ানোর ৮-১১ দিনের মাঝে সংক্রমণে পরিণত হয়। তাছাড়া কোন সুস্থ রোগীকে কামড়ালেও তার এ রোগ হয়।

এডিস মশা একবার সংক্রামক হলে সারাজীবন রোগ সংক্রমণ করে যেতে পারে এবং ঐ সংক্রামক মশার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই রোগের সংক্রামক হয়েই জন্মাবে।

সংক্রমিত মশার কামড়ের পর এই ভাইরাস প্রথম আশেপাশের লসিকা গন্থিতে চলে যায়। সেখান থেকে আবার লসিকা তন্ত্রে গিয়ে বিস্তার লাভ করে এবং রক্তে ছড়িয়ে পড়ে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষয়ী রূপ নিতে পারে, যাকে ডেঙ্গু রক্তক্ষয়ী রোগ বলা হয়। এর ফলে রক্তপাত হয়, রক্তে অণুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে।

ডেঙ্গু ভইরাস কী?

ডেঙ্গু ভাইরাস ফ্লাভিভাইরাস গ্রুপের সদস্য এক ধরণের RNA ভাইরাস। এ ভাইরাস ৪ ধরণের হয়ে থাকে। এগুলো হলো –

  • Den – 1
  • Den – 2
  • Den – 3
  • Den – 4

ডেঙ্গুর লক্ষণ | ডেঙ্গু রোগের / জ্বরের লক্ষণ

বর্তমানে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ রোগটির প্রথমিক অবস্থা নির্ণয় করলে না পারলে, মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। তাই টেনশন না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে ডেঙ্গু জ্বরের / ডেঙ্গু রোগের কিছু কিছু লক্ষণ আছে, সেগুলো জানা থাকলে নিজেই বুঝা যায় যে, ডেঙ্গু হয়েছে কি-না। চলুন তাহলে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেই।

ডেঙ্গুর ক্লাসিক্যাল জ্বরের লক্ষণসমূহ-

  • হঠাৎ উচ্চ তাপমাত্রার (40°C) দ্বিস্তরের জ্বর হয়ে থাকে।
  • সারা শরীরে অর্থাৎ মাংসপেশিতে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে। এজন্য এ জ্বরকে ব্রেকবোন ফিভারও বলা হয়।
  • প্রচন্ড পেট ব্যথাও হতে পারে।
  • মাথা ব্যথা ও চোখের পিছনে ব্যথা হয়।
  • জ্বর হওয়ার ৪ থেকে ৫ দিনের মাঝে সারা শরীরে লালচে দানা দেখা যায়, যাকে স্কিন র‍্যাশ বলা হয়। এটি অনেকটা এলার্জি বা ঘামাচির মতো।
  • বমি বমি ভাব হতে পারে, এমনকি বমিও হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ হয় এবং রুচি কমে যায়।
  • সাধারণত ৪ থেকে ৫ দিন জ্বর থাকার পর তা এম্নিতেই চলে যায়। অনেকের ২ বা ৩ দিন পর আবারও জ্বর আসে। একে বাই ফেজিক ফিভার বলা হয়।

ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরের লক্ষণসমূহ –

রোগীর এই অবস্থাটি সবচেয়ে জটিল অবস্থা। এই জ্বরে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গের সাথে সাথে আরও কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এগুলো হলো –

  • শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়। যেমন- চামড়ার নিচে, নাক ও মুখ দিয়ে, মাড়ি ও দাঁত হতে, কফের সঙ্গে, রক্তবমি, পায়খানার সাথে তাজা রক্ত বা কালো পায়খানা, চোখের মধ্যে এবং চোখের বাহিরে, নারীদের বেলায় অসময়ে ঋতুস্রাব অথবা রক্তক্ষরণ শুরু হলে অনেকদিন পর্যন্ত রক্ত পড়তে থাকা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
  • অনেক সময় আবার বুকে পানি, পেটে পানি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেক সময় লিভার আক্রান্ত হয়ে রোগীর জন্ডিস হয়।
  • কিডনি আক্রান্ত হয়ে রেনাল ফেইলিউর এর জটিলতা দেখা দিতে পারে। ইত্যাদি।

ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের লক্ষণগুলো হলো –

ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহ রূপ হলো ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরের সাথে সার্কুলেটরি ফেইলিউর হয়ে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হয়ে থাকে। এর লক্ষণগুলো নিম্নে দেওয়া হলো –

  • হঠাৎ করে রক্তচাপ কমে যাওয়া।
  • নাড়ীর স্পন্দন অত্যন্ত ক্ষীণ ও খুব দ্রুত হয়।
  • হাত পা ও শরীরের অন্যান্য অংশ ঠান্ডা হয়ে যায়।
  • প্রস্রাব কমে যায়।
  • হঠাৎ করে রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
  • অনেক সময় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। ইত্যাদি।

ডেঙ্গু হলে করণীয় কি কি? ডেঙ্গু জ্বরের প্রাথমিক চিকিৎসা

ডেঙ্গু হলে করণীয়গুলো হলো –

  • প্রাথমিক অবস্থায় বাড়িতে থেকেই ডেঙ্গুর চিকিৎসা করানো সম্ভব। এক্ষেত্রে জ্বর এবং শরীর ব্যাথা কমানোর জন্য আপনাকে প্যারাসিটামল (নাপা, এইস বড়ি) চালিয়ে যেতে হবে।
  • পূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন। জ্বর চলাকালীন আপনাকে বিশ্রামে থাকতে হবেই এমনকি  জ্বরের পর এক সপ্তাহ পর্যন্ত বিশ্রাম নিলে আপনি জ্বরের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • ফলের রস, ডাবের পানি ও স্যালাইন পান করতে হবে।
  • বেদনানাশক ঔষধ সেবন করা যাবে না।
  • কুসুম গরম পানি বা নরমাল তাপমাত্রার পানি দ্বারা সারা শরীর মোছতে হবে।
  • ডেঙ্গু জ্বর সেরে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর যদি শরীর আরও বেশি খারাপ হতে থাকে, তবে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। রক্ত পরীক্ষা করে অণুচক্রিকার এবং হেমাটোক্রিটের পরিমাণ জেনে নিতে হবে।
  • রক্তের অণুচক্রিকা কমতে থাকলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
  • অণুচক্রিকা ১০ হাজারের নিচে নেমে গেলে কিংবা রক্তক্ষরণ শুরু হলে রক্ত দিতে হবে।

তবে অবস্থা যদি আরও গুরুতর পর্যায়ে চলে যায়, তাহলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করে যথাযথ চিকিৎসা দিতে হবে। 

ডেঙ্গু হলে ডাক্তার কখন দেখাতে হবে ?

ডেঙ্গু জ্বরের জন্য নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। এ জ্বর নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায়। তাই লক্ষণ অনুযায়ী সাধারণ চিকিৎসা করাই যথেষ্ট। তবে এমন কিছু কিছু লক্ষণ আছে যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এসব লক্ষণগুলো হলো –

  • শরীরের যেকোন অংশ থেকে রক্তপাত হলে।
  • রক্তের প্লাটিলেটের মাত্রা কমে গেলে।
  • প্রস্রাবের মাত্রা কমে গেছে।
  • জন্ডিস দেখা দিলে।
  • অতিরিক্ত দুর্বলতা বা ক্লান্তি দেখা দিলে।
  • প্রচুর পেট ব্যথা বা বমি হলে।

যে সব প্যাথলজি পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত করা যায়

  • কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট ( সি.বি.সি )
  • এন এস ওয়ান এন্টিজেন NS1 AG পরিক্ষার
  • ডেঙ্গু এন্টিবডি টেস্ট

যেকোন সরকারি হাসপাতাল / ভালো মানের ক্লিনিক / ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে খুব অল্প খরচে টেস্টগুলো করা যায়।

ডেঙ্গু হলে কী খাবেন আর কি খাবেন না?

ডেঙ্গু জ্বর হলে আপনাকে খাবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা এসব রোগীদের কয়েকটি খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। একই সাথে কিছু কিছু খাবার এড়িয়ে যেতেও বলেছেন। চলুন এসব সম্পর্কে জেনে নেই –

ডেঙ্গু হলে যে খাবারগুলো বেশি করে খাবেন

কমলা: কমলা ও কমলার রস ডেঙ্গু জ্বরের জন্য ভালো কাজে আসতে পারে। কারণ কমলাতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিওক্সিডেন্ট রয়েছে। এ দুটি উপাদান ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে।

ডালিম: ডালিমে প্রচুর ভিটামিন আছে। সেই সাথে এতে পরিমাণ মতো মিনারেলও আছে। নিয়ম করে ডালিম খেলে প্লেটলেটের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তাছাড়া ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূতিও দূর হবে।

ডাবের পানি: ডেঙ্গুর জ্বর হলে শরীরে পানি শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন। এ সময় বেশি বেশি করে ডাবের পানি পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। কারণ ডাবে ইলেক্ট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

পেঁপে পাতার জুস: ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীর শরীরে প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যেতে পারে। পেঁপে পাতায় রয়েছে পাপাইন এবং কিমোপেইনের মতো এনজাইম যা হজমে সহায়তা করে। একই সাথে প্লেটলেটের পরিমাণও বাড়াতে সাহায্য করে। তাই আপনাকে প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ এমএল পেঁপে পাতার তৈরি জুস খেতে হবে।

মেথি: ডেঙ্গু জ্বরের জন্য মেথি উপকারী। এটি অতি সহজে ঘুমিয়ে যেতে সাহায্য করে । একই সাথে অতিরিক্তমাত্রার জ্বর কমিয়ে আনতেও সহায়তা করে থাকে। তবে মেথি গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করে নিতে হবে।

ব্রুকলি: ব্রুকলি হলো ভিটামিন কে এর একটি ভালো উৎস। অন্যদিকে ভিটামিন কে রক্তের প্লেটলেট বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ সমৃদ্ধ উপাদান। যদি কোনো ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়; তাহলে অবশ্যই বেশি করে ব্রুকলি খাওয়াবেন।

পালংশাক: পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে আইরন এবং ওমেগো-থ্রি ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। এই শাকটি বেশি করে গ্রহণ করলে অতি দ্রুত প্লেটলেট বৃদ্ধি পায়।

ডেঙ্গু জ্বরের সময় যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত

তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার: ডেঙ্গু জ্বর হলে অবশ্যই তৈলাক্ত ও ভাজা খাবরগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। এই খাবারগুলো খেলে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।

মসলাযুক্ত খাবার: ডেঙ্গু রোগীকে অবশ্যই মসলাযুক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এই ধরনের খাবার বেশি করে খেলে পাকস্থলীর দেয়াল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ক্যাফিনযুক্ত পানীয়: ডেঙ্গু হলে তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে। সেই সঙ্গে ক্যাফিনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। এই খাবারগুলো হার্ট রেট বাড়িয়ে দিতে পারে। সেই সঙ্গে ক্লান্তি নিয়ে আসতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করতে হলে আমাদের ডেঙ্গু ফিভার ভাইরাস (DENV) কে প্রতিরোধ করতে হবে আর সেটার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এই ভাইরাসের বাহক তথা এডিস মশাকে নির্মূল করা। নিম্নোক্ত উপায়ে আমরা ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করতে পারি-

  • বাড়ির সামনে কোন পানি জমতে দেবেন না। বাড়ির সামনে কোথাও পানি জমে থাকলে তা পরিস্কার করে ফেলুন। কারণ জমা পানি ডেঙ্গু ভাইরাস বাহিত এডিস মশার বংশ বিস্তারের অনুকুল পরিবেশ তৈরি করে।
  • এডিস মশার কামড় এড়ানোর জন্য দিনে এবং রাতে ঘুমাবার সময় আবশ্যই মশারি ব্যবহার করুন । 
  • বাচ্চাদের ঢিলা ঢালা ফুল হাতা জামা-প্যান্ট পরিয়ে রাখুন।
  • ঘরে মশা মারার ঔষধ বা কয়েল ব্যবহার করুন।
  • ঘর-বাড়ির ভিতরে ফুলের টবে এবং অন্য কোথাও পানি জমতে দিবেন না।
  • আশে পাশে কোনরকম আবর্জনা জমতে দিবেন না।
  • বসবাসের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যাতে করে মশার বংশবিস্তার রোধ হয়। ইত্যাদি।

আরও পড়ুন – মশা তাড়ানোর ১১ টি কার্যকরী উপায়


আজ এখানেই শেষ করছি। আশা করি ডেঙ্গু জ্বর কি? ডেঙ্গু রোগের / জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু হলে করণীয় কি কি? ইত্যাদি সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। আর এ নিয়ে কোনরকম মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা সমাধান করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ।

ভাইরাস কি? ভাইরাস কত প্রকার ও কি? ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য

1

আজকের আর্টিকেলে আমরা ভাইরাস কি? ভাইরাস কত প্রকার ও কি? ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য, ভাইরাসজনিত রোগ, ভাইরাসের উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে এসব বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই –

ভাইরাস কি? ভাইরাস কত প্রকার ও কি? ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য
ভাইরাস কি? ভাইরাস কত প্রকার ও কি? ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য

ভাইরাস কি?

ভাইরাস একটি ল্যাটিন শব্দ। যার অর্থ হলো Poison বা বিষ। এটি এক প্রকার জীবকণা যা শুধু সজীব কোষেই নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করতে পারে। এ কারণে এদের জীব ও জড়ের মধ্যবর্তী পর্যায়ের বস্তু বলা হয়।

ভাইরাসের একক হলো ভিরিয়ন (Virion)। Virus এত ক্ষুদ্র যে শুধুমাত্র 2A রেজুলেশন ক্ষমতাসম্পন্ন ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে দেখা যায়।

রুশ জীবাণুবিদ আইভানোভসকি ১৮৯২ সালে তামাক গাছের মোজাইক রোগের কারণ হিসেবে প্রথম ভাইরাসের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেন।

ভাইরাস (Virus) কাকে বলে?

ভাইরাস হলো অকোষীয় সূক্ষ্ম অতি আণুবীক্ষণিক জীবাণু যার নিউক্লিক এসিড DNA অথবা RNA দ্বারা গঠিত এবং যা মানুষসহ সকল জীবদেহে নানা ধরণের রোগ সৃষ্টি করে থাকে। এটি সাধারণত রোগ উৎপাদনকারী জীব হিসাবেই অতি পরিচিত।

Virus জীব ও জড়ের মধ্যকার একটি সেতুবন্ধন। এটি প্রাণীদেহে প্রবেশ করলে অনুকূল পরিবেশে প্রাণীর ন্যায় আচরণ করে থাকে। এর দেহ নিউক্লিক এসিড এবং প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত। এছাড়াও কোন কোন ভাইরাসের দেহে লিপিড, কার্বোহাইড্রেট, এনজাইম, ভিটামিনের ন্যায় পদার্থ ইত্যাদি পাওয়া যায়। Virus এর দেহে নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম নেই

ভাইরাসের বৈশিষ্ট‍্য

  • ভাইরাস জীব ও জরের মধ‍্যবর্তী পর্যায়ের এক রকম বস্তু অর্থাৎ Virus জীব ও জড়ের মধ্যকার একটি সেতুবন্ধন।
  • ভাইরাস অকোষীয়, অতি আণুবীক্ষণিক সাইটোপ্লাজমবিহীন ক্ষুদ্রতম সত্তা।
  • এদের পরিশ্রুত করে স্ফটিক দানায় পরিণত করা যায়।
  • ভাইরাস শুধুমাত্র ইলেকট্রন অনুবিক্ষন যন্ত্রে দৃশ‍্যমান।
  • কোন প্রকার কোষীয় অঙ্গাণু যেমন – রাইবোসোম, মাইটোকন্ড্রিয়া ইত্যাদি নেই।
  • এটি বাধ‍্যতামূলক পরজীবী এবং রোগসৃষ্টিকারী বস্তু।
  • এদের কোন বিপাকীয় কার্যক্রম সাধিত হয় না।
  • এরা শুধু জীবন্ত পোষক কোষে বংশবিস্তার করতে পারে।
  • এদের দেহ প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিডের সমন্বয়ে গঠিত।
  • ভাইরাসকে কেলাসিত করা, সেন্ট্রিফিউজ করা, ব্যাপন করা, সাসপেনশন করা যায়।
  • ভাইরাস একমাত্র প্রতিলিপি গঠনের দ্বারা বংশবিস্তার করে। 
  • এদের জেনেটিক রিকম্বিনেশন ঘটে।
  • এদের অভিযোজন ক্ষমতা আছে। ইত্যাদি।

ভাইরাস কত প্রকার ও কি কি?

রোগবিস্তার বা বংশবিস্তার অনুযায়ী ভাইরাস প্রধানত তিন প্রকার। এগুলো হলো –

  • উদ্ভিদ ভাইরাস
  • প্রাণী ভাইরাস
  • ব‍্যাকটিরিয়া ভাইরাস / ব্যাকটেরিওফাজ

উদ্ভিদ ভাইরাস: যে সব ভাইরাস উদ্ভিদ-দেহে রোগ সৃষ্টি করে বা বংশবিস্তার করে, তাদের উদ্ভিদ ভাইরাস বলা হয়। যেমন – টোবাকো মোজেক ভাইরাস, টম‍্যাটো বুসী, আলুর এক্স-ভাইরাস, ধানের টুংরো ভাইরাস, ঢেড়স ও শিমের হলুদ শিরা মোজাইক ভাইরাস ইত‍্যাদি উদ্ভিদ ভাইরাস।

প্রাণী ভাইরাস: যে সব ভাইরাস প্রাণীদেহে রোগ সৃষ্টি করে বা বংশবিস্তার করে, তাদের প্রাণী ভাইরাস বলা হয়ে থাকে। যেমন – বসন্ত রোগের ভাইরাস ‘ভ‍্যারিওলা’ এবং ‘ভ‍্যাকসিনিয়া’, পোলিও রোগের ‘পোলিওমাইয়েলিটিস’ ইত্যাদি প্রাণী ভাইরাস।

ব‍্যাকটিরিয়া-ভাইরাস: এই ধরণের ভাইরাস ব‍্যাকটিরিয়ার দেহে বংশবিস্তার করে। এইরকম ভাইরাসের নিউক্লিক অ্যাসিডটি DNA প্রকৃতির হয়ে থাকে। ফাজ ভাইরাস বা ব‍্যাকটিরিওফাজ এই ধরনের ভাইরাস। 

এগুলো ছাড়াও সায়ানোফাজ নামে এক ধরণের ভাইরাস রয়েছে। এরা আবার ২ ধরণের হয়ে থাকে। এগুলো হলো –

  • DNA ভাইরাস
  • RNA ভাইরাস

DNA ভাইরাসঃ কলিফাজ, T2 ফাজ, ভ্যাকসিনিয়া, ভ্যারিওলা, স্মালপক্স / গুটিবসন্ত, TIV ইত্যাদি এ ধরণের ভাইরাস।

RNA ভাইরাসঃ TMV, HIV, Rubella, ডেঙ্গু, পোলিও, করোনা ভাইরাস (mRNA) ইত্যাদি এ ধরণের ভাইরাস।

ইমার্জিং ভাইরাস কী বা কাকে বলে?

ভাইরাসের পরজীবিতা সুনির্দিষ্ট হলেও কিছু কিছু ভাইরাস নির্দিষ্ট পোষক প্রজাতি থেকে সম্পর্কহীন অন্য পোষক প্রজাতিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আদি পোষক থেকে পরে নতুন পোষক প্রজাতিতে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে ইমার্জিং ভাইরাস বলে।

যেমন – ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকৃত পোষক ছিল পাখি যা পরবর্তীতে মানুষে রোগ সৃষ্টি করে। এছাড়াও HIV, Nile Virus, Ebola, SARS ইত্যাদি এ ধরণের ভাইরাস।

ভাইরাসজনিত রোগ

Virus এর কারণে নানারকম রোগ হয়ে থাকে। যেমন – হাম, পোলিও, বসন্ত, জলাতঙ্ক, হার্পিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, মাম্পস, এইডস, হেপাটাইটিস ইত্যাদি। সবচেয়ে ছোট ভাইরাসটি হলো পোলিও। পোলিও এবং বসন্তের টিকা ভাইরাস থেকে তৈরি করা হয়। জলবসন্তের জীবাণু হলো Varicella.

তৈরিকৃত টিকা পোষকদেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। হাম, পোলিও, জলাতঙ্ক ইত্যাদি ভাইরাসজনিত রোগের টিকা ভাইরাস থেকে তৈরি করা হয়। গো-বসন্তের ভাইরাস থেকে মানুষের বসন্ত রোগের টিকা প্রস্তুত করা হয়।

মানুষের কয়েকটি ভাইরাসজনিত রোগ ও সংশ্লিষ্ট ভাইরাসের নাম

রোগের নাম ভাইরাসের নাম
HIV
ফ্ল্যাভি ভাইরাস
পোলিওপোলিওমাইলাইটিস
হামরুবিওলা ভাইরাস
জলাতঙ্কর‍্যাবিস ভাইরাস
গুটি বসন্ত ভেরিওলা ভাইরাস
জলবসন্তVaricella-Zoster Virus
ইনফ্লুয়েঞ্জাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
সাধারণ সর্দি Rahino Virus
Covid-19করোনা ভাইরাস (mRNA)
নিউমোনিয়াঅ্যাডেনো ভাইরাস

এগুলো ছাড়াও ভাইরাসজনিত আরও বিভিন্ন রোগ রয়েছে।

ভাইরাসের উপকারিতা

ভাইরাস যে শুধু আমাদের ক্ষতিই করে থাকে তা নয়, এটি আমাদের নানারকম উপকারও করে থাকে। মাটিতে বিদ্যমান অসংখ্য প্রোটোজোয়া, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদির মৃত্যু ঘটিয়ে তাদের দেহকে সার হিসেবে রূপান্তর করে ভাইরাস মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।


আজকের মতো এখানেই থাকলো। আশা করি, ভাইরাস কি? ভাইরাস কত প্রকার ও কি? ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি সম্পর্কে অল্প কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। আর আর্টিকেলটি নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন – তরঙ্গ কাকে বলে? তরঙ্গ কত প্রকার ও কি কি? তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য

আইসোটোপ কাকে বলে? আইসোটোপের ধর্ম, বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার

0

বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলে আমরা আইসোটোপ কাকে বলে? আইসোটোপের ধর্ম, বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার, আইসোবার, আইসোটোন, আইসোমার, রেডিও আইসোটোপ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। তাহলে আর দেরি না করে চলুন এসব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

আইসোটোপ কাকে বলে? আইসোটোপের ধর্ম, বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার
আইসোটোপ কাকে বলে? আইসোটোপের ধর্ম, বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার

আইসোটোপ কাকে বলে? Isotope কি?

যেসকল মৌলের বিভিন্ন ধরনের পরমাণু  থাকে এবং এদের প্রোটন বা পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন হয় তাদেরকে আইসোটোপ বলা হয়।

আবার বলা যায়, যেসকল পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউটন সংখ্যা বা ভর সংখ্যা ভিন্ন তাদের আইসোটোপ বলে। আইসোটোপ সাধারণত একই মৌলের পরমাণুর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।

যেমন – হাইড্রোজেনের ৩ টি আইসোটোপ। এগুলো হলো –

  • প্রোটিয়াম 1H1
  • ডিউটেরিয়াম 1H2
  • ট্রিটিয়াম 1H3

উদাহরণ স্বরূপ আরও বলা যায় যে, বেশিরভাগ কার্বনের পরমাণুতে ৬টি প্রোটন এবং ৬টি নিউট্রন থাকে। কিন্তু কার্বনের কিছু পরমাণুতে ৭টি বা ৮টি নিউট্রন থাকে। আর একারণে বলা হয় কার্বন এ তিনটি আইসোটোপ থাকে।

আবার বলা যায়, ইউরেনিয়ামের ৩ টি আইসোটোপ রয়েছে। এগুলো হলো –

  • 92U234
  • 92U235
  • 92U238

আইসোটোপের ধর্ম

আইসোটোপের ধর্মগুলো হলো-

  • আইসোটোপ বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় রশ্মি ও কণা বিকিরণ করে থাকে।
  • আইসোটোপ স্থায়ী হয়।

আইসোটোপের বৈশিষ্ট্য

আইসোটোপের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে কেন্দ্র করেই আইসোটোপের পরিচয় পাওয়া যায়। নিচে কিছু বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো-

  • আইসোটোপের পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন হয়।
  • আইসোটোপের রাসায়নিক ধর্ম হলো যোজ্যতা ইলেকট্রন সব সময় অভিন্ন থাকে।
  • আইসোটোপের ভর,গলনাঙ্ক,ঘনত্ব,স্ফুটনাঙ্ক ইত্যাদি উপাদানগুলোর ভৌত ধর্ম সব সময় পৃথক হয়।
  • আইসোটোপের ক্ষেত্রে একই মৌলের পর্যায় সারণী একই অবস্থানে থাকে।
  • যেমন – হাইড্রোজেনের ৩ টি আইসোটোপ। এগুলো হলো – প্রোটিয়াম 1H1, ডিউটেরিয়াম 1H2, ট্রিটিয়াম 1H3

আইসোটোপ এর ব্যবহার

নিচে আইসোটোপের কিছু ব্যবহার দেওয়া হলো-

  • আইসোটোপের সাহায্যে তেজস্ক্রিয় কার্বনের মাধ্যমে পুরাতন শিলা,গাছ এবং পৃথিবীর বয়স নির্ণয় করা যায়।
  • কোবাল্টের Isotope ক্যান্সার কোষ এবং ম্যালিগন্যান্ট টিউমার কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রে ক্যান্সার এবং টিউমার চিকিৎসার জন্য তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (১৩১) ব্যবহার করা হয়।
  • কৃষিক্ষেত্রে Isotope ব্যবহার করে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে নানারকম তথ্য জানা যায়।
  • বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি প্রকৃতি নির্ণয়ের জন্য তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ (C13 , N15 , O18 , S35 ইত্যাদি) ব্যবহার করা হয় ।
  • খাদ্য ও ফলমূল সংরক্ষণে Isotope ব্যাকটেরিয়া সহ নানা ধরণের জীবাণু ধ্বংস করে থাকে।
  • মাটির মধ্যে থাকা বিভিন্ন ফসলের বয়স নির্ণয় করে থাকে Isotope.
  • আইসোটোপ পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • ফসলে কোন ধরনের সার কতটুকু পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে তা নির্ণয় করতে আইসোটোপ সহায়তা করে থাকে।
  • ডাক্তারি সব ধরণের যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করতে আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়।
  • মানবদেহে যদি কোন ক্ষুদ্র রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা সনাক্ত করতে আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়।
  • মানবদেহের বিভিন্ন রোগ নির্ণয় এবং নিরাময় করতে আইসোটোপ ব্যবহার করে থাকে। 

আইসোবার কী?

যেসকল পরমাণুর ভর সংখ্যা সমান কিন্তু প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন, তাদের আইসোবার বলে। আইসোবার ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমাণুর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। যেমন – 26Fe5827N58.

আইসোটোন কি বা কাকে বলে?

যেসকল পরমাণুর নিউট্রন সংখ্যা সমান কিন্তু প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন তাদের আইসোটোন বলে। আইসোটোন ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমাণুর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। যেমন – 7N15, 6N14

ভর সংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা

আইসোমার কি? উদাহরণ দাও

যেসকল পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা এবং ভর সংখ্যা একই কিন্তু তাদের অভ্যন্তরীণ গঠন ভিন্ন, তাদেরকে পরস্পরের আইসোমার বলে। যেমন – ইথানল, ডাই মিথাইল ইথাইল ইত্যাদি।

রেডিও আইসোটোপ কি?

যেসকল আইসোটোপ সামান্য সময়ের জন্য কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে তাদের রেডিও আইসোটোপ বলা হয়। যেমন – প্লুটোনিয়াম, রেডিয়াম, ইউরেনিয়াম ইত্যাদি।

রেডিও আইসোটোপের ব্যবহার –

  • কৃষিক্ষেত্রে কীটপতঙ্গ ধ্বংস করা
  • অধিক ফসল উৎপাদন
  • বীজ সংরক্ষণ
  • ক্যান্সার নিয়াময়ের জন্য
  • টিউমারের জন্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেডিও আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়।
  • এগুলো ছাড়াও গবেষণাকার্যে ও শিল্পবিজ্ঞানে রেডিও আইসোটোপের ব্যবহার রয়েছে। ইত্যাদি।

আইসোটোপ => প্রোটন সংখ্যা সমান আইসোবার => ভর সংখ্যা সমান আইসোটোন => নিউট্রন সংখ্যা সমান


তো আজ এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আইসোটোপ কাকে বলে? আইসোটোপের ধর্ম, বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার, আইসোবার, আইসোটোন, আইসোমার, রেডিও আইসোটোপ ইত্যাদি সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন – এসিড কাকে বলে? এসিডের বৈশিষ্ট্যসমূহ ও চেনার উপায় কি?

চুম্বক কি? চুম্বকত্ব কাকে বলে? চুম্বকের প্রকারভেদ ও ধর্ম

0

আজকের আর্টিকেলে আমরা চুম্বক কি? চুম্বকত্ব কাকে বলে? চুম্বকের প্রকারভেদ ও ধর্ম, চুম্বক পদার্থ, চুম্বক বলরেখা, চুম্বকের প্রয়োগ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। তাহলে আর দেরি না করে চলুন এসব বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই।

চুম্বক কি? চুম্বকত্ব কাকে বলে? চুম্বকের প্রকারভেদ ও ধর্ম
চুম্বক কি? চুম্বকত্ব কাকে বলে? চুম্বকের প্রকারভেদ ও ধর্ম

চুম্বক কাকে বলে? চুম্বক কি?

চুম্বক এক প্রকার শক্তি, যার প্রভাবে কোন জড় বস্তুর আকর্ষণ – বিকর্ষণ ও দিক নির্দেশক ধর্ম লাভ করে, ঐ শক্তিকে চুম্বক বলে। অর্থাৎ, যে সকল বস্তুর আকর্ষণ ও দিক নির্দেশক ধর্ম আছে, তাদেরকে চুম্বক বলে। চুম্বকের রাসায়নিক সংকেত হলো Fe3O4.

চুম্বকের মেরু অঞ্চলে অর্থাৎ, দুই মেরুতে আকর্ষণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। ড. গিলবার্ট ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে চুম্বক ও চুম্বক মেরুর ধর্ম থেকে প্রমাণ করেন যে, পৃথিবী একটি বিরাট চুম্বক। এজন্য চুম্বক সবসময় উত্তর-দক্ষিনে অবস্থান করে। এর উত্তর মেরু এন্টার্কটিকা মহাদেশের দক্ষিণে ভিক্টোরিয়া অঞ্চলে আর দক্ষিণ মেরু কানাডার উত্তরদিকে বুথিয়া উপদ্বীপে অবস্থিত। ভূচুম্বকের উত্তর মেরুকে লাল মেরু এবং দক্ষিণ মেরুকে নীল মেরু বলা হয়।

চুম্বকত্ব কী? চুম্বকত্ব কাকে বলে?

চুম্বকের আকর্ষর্ণীয় ও দিক নির্দেশক ধর্মকে চুম্বকত্ব বলে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, চুম্বকত্ব হলো একটি গতিশীল আদানের প্রভাব। যা উত্তর মেরু থেকে লম্বভাবে বের হয়ে দক্ষিণ মেরুতে যায়। চুম্বকত্ব চুম্বকের একটি ভৌত ধর্ম।

চুম্বকের ধর্ম

চুম্বকের সমমেরু পরস্পরকে বিকর্ষণ করে এবং বিপরীতমেরু পরস্পরকে আকর্ষণ করে।
চুম্বুক সর্বদা উত্তর ও দক্ষিণমুখী হয়ে থাকে।
একটি দন্ড চুম্বককে যত টুকরাই করা হোক না কেন তা সর্বদা উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু সৃষ্টি করে। অর্থাৎ চুম্বকের ৪ টি মূল ধর্ম আছে। এগুলো হলো –

  • আকর্ষণ ধর্ম
  • দিকদর্শী ধর্ম
  • বিপরীতধর্মী দুই প্রান্ত
  • চুম্বকন ধর্ম

চারটি ধর্মের কথা বলা হলেও প্রধান ধর্ম হচ্ছে দুটি। এগুলো হলো – আকর্ষণ ও দিকদর্শী ধর্ম।

চুম্বক কত প্রকার ও কি কি?

চুম্বক ২ প্রকার। যথাঃ

  • প্রাকৃতিক চুম্বক
  • কৃত্রিম চুম্বক

প্রাকৃতিক চুম্বক কি?

প্রকৃতিতে বা খনিতে যে চুম্বক পাওয়া যায়, তাকে প্রাকৃতিক চুম্বক বলে। পূর্বে প্রাকৃতিক চুম্বককে লোডস্টোন বলা হতো। বর্তমানে প্রাকৃতিক চুম্বকের ব্যবহার নেই বললেই চলে।

প্রাকৃতিক চুম্বকের বৈশিষ্ট্য:

  • এ চুম্বকের চুম্বকত্ব স্থায়ী ও শক্তিশালী হয় না।
  • এ চুম্বকে দুইয়ের অধিক মেরু থাকতে পারে।
  • এ ধরণের চুম্বক নিয়মিত আকারে থাকে না ইত্যাদি।

কৃত্রিম চুম্বক কি?

মানুষের কাজের উপযোগী বিভিন্ন চুম্বক পদার্থ ব্যবহার করে পরীক্ষাগারে বিভিন্ন আকার আকৃতির যে সকল চুম্বক তৈরি করা হয় তাকে কৃত্রিম চুম্বক বলে।

অর্থাৎ, পরীক্ষাগারে লোহা, ইস্পাত, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদি চৌম্বক পদার্থকে বিশেষ উপায়ে চুম্বকে পরিণত করা হলে তাকে প্রাকৃতিক চুম্বক বলে। সাধারণত শিল্প ও বৈজ্ঞানিক কাজে এ চুম্বক ব্যবহার করা হয়।

কৃত্রিম চুম্বক আবার দুই প্রকার। যথা-

  • অস্থায়ী চুম্বক
  • স্থায়ী চুম্বক

অস্থায়ী চুম্বকঃ চুম্বক পদার্থকে কোন চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে আনলে চুম্বুকে পরিণত হয়। চুম্বকক্ষেত্রটি সরিয়ে নেওয়ার সাথে সাথে এর চুম্বকত্ব লোপ পায়।

এটি সাধারণ কাঁচা ও নরম লোহা দিয়ে তৈরি। কলিং বেল, বৈদ্যুতিক ঘন্টা, মটর, স্পিকার, জেনারেটর, ট্রান্সফর্মার ইত্যাদি তৈরিতে অস্থায়ী চুম্বক ব্যবহার করা হয়।

স্থায়ী চুম্বক: চুম্বকক্ষেত্র সরিয়ে নিলেও যে কৃত্রিম চুম্বকের চুম্বকত্ব সহজে লোপ পায় না, তাকে স্থায়ী চুম্বক বলে। লোহা, নিকেল, কোবাল্ট, তামা ইত্যাদির মিশ্রণ দিয়ে বর্তমানে শক্তিশালী স্থায়ী চুম্বক তৈরি করা হচ্ছে।

বর্তমানে উদ্ভাবিত সবচেয়ে শক্তিশালী স্থায়ী চুম্বক হলো নিয়োডিমিয়াম, বোরন, আয়রন। লোহার মাঝে ০.৮% এর বেশি কার্বন থাকলে তা স্থায়ী চুম্বক তৈরি করে।

স্থায়ী চুম্বক আবার ২ প্রকার। যথাঃ

  • সংকর চুম্বক
  • সিরামিক চুম্বক

সংকর চুম্বকঃ এলনিকো সংকর যা অ্যালুমিনিয়াম, কপার, লোহা, নিকেল, কোবাল্ট তামা ইত্যাদির মিশ্রণে তৈরি শক্তিশালী স্থায়ী চুম্বক। সর্বপ্রথম স্থায়ী চুম্বক তৈরি হয়েছিল ইস্পাত দ্বারা। যাতে কার্বনের পরিমাণ ছিল ০.৮%।

সিরামিক চুম্বকঃ এটি ফেরাইড যৌগ নামে পরিচিত। আয়রন অক্সাইড ও বেরিয়াম অক্সাইডের মিশ্রণে এটি তৈরি পূর্বে এটি তৈরিতে ক্রোমিয়াম ডাই অক্সাইড ব্যবহৃত হতো। ক্রোমিয়াম ডাই অক্সাইডের সংকেত হলো CrO2.

টেপ রেকর্ডার, কম্পিউটার মেমোরি বা স্মৃতির ফিতায় এ সিরামিক চুম্বক ব্যবহার করা হয়।

চৌম্বক পদার্থ কি বা কাকে বলে?

যে সকল পদার্থকে চুম্বক আকর্ষণ করে এবং যাদের চুম্বকে পরিণত করা যায় তাদের চৌম্বক পদার্থ বলে। অর্থাৎ, যেসকল পদার্থ চুম্বক কর্তৃক সহজেই আকৃষ্ট হয় বা যাদের কৃত্রিম চুম্বকে পরিণত করা যায়, তাদের চুম্বক পদার্থ বলে। যেমন-লোহা, লোহার যৌগ, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদি।

চৌম্বক পদার্থ কত প্রকার ও কি কি?

চৌম্বক পদার্থ ৩ ধরণের হয়ে থাকে। এগুলো হলো –

  • ফেরোচৌম্বক পদার্থ
  • প্যারাচৌম্বক পদার্থ
  • ডায়াচৌম্বক পদার্থ

ফেরোচৌম্বক পদার্থ: যে সকল পদার্থকে কোন চৌম্বকক্ষেত্রের মধ্য স্থাপন করলে ঐ সকল পদার্থে শক্তিশালী চৌম্বকত্ব দেখা যায় এবং আবিষ্ট চুম্বকায়নের অভিমুখ আবেশী ক্ষেত্রের অভিমুখ বরাবর হয়, তাদের ফেরোচুম্বক পদার্থ বলে। চৌম্বক পদার্থ বলতে সাধারণত ফেরোচৌম্বককে বুঝায়।

উদাহরণ : আয়রন, ইস্পাত, কোবাল্ট, নিকেল, মিউমেটাল ইত্যাদি।

প্যারা চৌম্বক: কোন পদার্থের উপর চৌম্বকক্ষেত্র প্রয়োগ করা হলে সামান্য পরিমান চুম্বকত্ব প্রদর্শন করে এবং আবিষ্ট চুম্বকায়নের অভিমুখ আবেশী ক্ষেত্রের অভিমুখ বরাবর হয়, তাদের প্যারা চৌম্বক পদার্থ বলে।

যেমন – অ্যালুমিনিয়াম, প্লাটিনাম, ক্রোমিয়াম, তরল অক্সিজেন, ম্যাঙ্গানিজ, লোহা ও নিকেলের দ্রবণ ইত্যাদি।

ডায়াচৌম্বক পদার্থ: যে সকল পদার্থ খুব শক্তিশালী কোন চৌম্বকক্ষেত্রের মধ্য স্থাপন করলে ঐ সকল পদার্থে ক্ষীণ চৌম্বকত্ব দেখা যেতে পারে, তাদের ডায়াচৌম্বক পদার্থ বলে।

উদাহরণ : পানি, তামা, বিসমাথ, পারদ, সোনা, অ্যালকোহল, অ্যান্টিমনি ইত্যাদি ডায়াচৌম্বক পদার্থ।

অচৌম্বক পদার্থ কাকে বলে?

অচৌম্বক পদার্থঃ কোন চুম্বক যে সকল পদার্থকে আকর্ষণ করে না, ঐ সকল পদার্থকে অচৌম্বক পদার্থ বলে। অর্থাৎ, পদার্থে কোন চুম্বকত্ব দেখা না দিলে তাকে অচৌম্বক পদার্থ বলা হয়। উদাহরণঃ অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, সোনা ইত্যাদি।

চুম্বকের প্রয়োগ

  • দিক নির্ণায়ক কম্পাস তৈরিতে চুম্বক ব্যবহার করা হয়।
  • রাডারে, ট্রান্সফর্মারে চুম্বক ব্যবহার করা হয়।
  • বৈদ্যুতিক ঘন্টা ও মোটরে চুম্বক ব্যবহার করা হয়।
  • মাইক্রোফোন ও লাউড স্পিকারে চুম্বক ব্যবহার করা হয় ইত্যাদি।

তড়িৎ চুম্বক কি? তড়িৎ-চুম্বকে কাঁচা লোহা ব্যবহার করা হয় কেন?

তড়িৎ চুম্বক : কাঁচা লোহার দণ্ডের উপর অন্তরিত তামার তার কুণ্ডলীর মতো জড়িয়ে ওই তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ পাঠালে লোহার দণ্ডটি চুম্বকে পরিণত হয়। কিন্তু এই চুম্বকের চুম্বকত্ব অস্থায়ী। তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করা মাত্র চুম্বকত্ব নষ্ট হয়ে যায়। এই চুম্বককে তড়িৎ চুম্বক বলে।

আবার বলা যায়, এক টুকরা কাঁচা লোহাকে দন্ডাকার বা U আকারে বাঁকিয়ে একে অন্তরীত তামার তারে জড়িয়ে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে তড়িৎ চুম্বক তৈরি হয়। যতক্ষণ তারের মধ্যে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয় ততক্ষণই এর চুম্বকত্ব থাকে, তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করার সাথে সাথে এর চুম্বকত্ব লোপ পায়।

তড়িৎ-চুম্বকে কাঁচা লোহা ব্যবহার: তড়িৎ চুম্বকে কাঁচ লোহা ব্যবহার করার কারণ হলো, তড়িৎ প্রবাহ পাঠালে কাঁচা লোহা অস্থায়ী চুম্বকে পরিণত হয়। যতক্ষণ তড়িৎ প্রবাহ পাঠানো হয় ততক্ষণই কাঁচা লোহার দণ্ডটি চুম্বক থাকে। তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করা মাত্র ওর চুম্বকত্ব লোপ পায়। তাই তড়িৎ চম্বুকে মজ্জা রূপে কাঁচা লোহা ব্যবহার করা হয়।

চুম্বক বলরেখা কি? চুম্বক বলরেখার ধর্ম লেখ।

চুম্বক বলরেখা: কোনো চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি বিচ্ছিন্ন উত্তর মেরুকে মুক্তাবস্থায় স্থাপন করলে মেরুটি যে পথে পরিভ্রমণ করে, তাকে চৌম্বক বলরেখা বলে।

চুম্বক বলরেখার ধর্ম :

  • এরা উত্তর মেরু থেকে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিন মেরুতে শেষ হয়।
  • এরা পরস্পরের প্রতি পার্শ্ব চাপ প্রয়োগ করে।
  • এরা কখনও পরস্পরকে ছেদ করে না।
  • এরা বদ্ধ রেখা।

চৌম্বক নিয়ে আরও বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর

চৌম্বক মেরু কাকে বলে?

চৌম্বক মেরু: কোন চুম্বকের যে অঞ্চলে চুম্বকের আকর্ষন বা বিকর্ষন বল বেশী সেই অঞ্চলকে ঐ চুম্বকের মেরু বলে ।

উপমেরু কাকে বলে?

উপমেরু: ভুল পদ্বতিতে চুম্বকনের সময় মাঝে মাঝে দুই প্রান্তে বা মাঝখানে অতিরিক্ত মেরু সৃষ্টি হয় । এই অতিরিক্ত মেরুকে উপমেরু বলে ।

পোলারিটি কাকে বলে?

চৌম্বক পোলারিটি: কোন চুম্বক পদার্থকে কোন স্থায়ী চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে তা ক্ষনস্থায়ীভাবে চুম্বকে পরিনত হয় এবং এর দুপাশে চৌম্বক দ্বিমেরু বা ‍দ্বিপোল সৃষ্টি হয় । চুম্বকের এই ধর্মকে পোলারিটি বলে ।

চৌম্বক আবেশ কাকে বলে?

চৌম্বক আবেশ: কোন চৌম্বক পদার্থকে কোন শক্তিশালী চুম্বকের নিকটে আনলে ঐ চুম্বক পদার্থটি সাময়িক ভাবে চুম্বকে পরিনত হয় বা অন্য কোন চৌম্বক পদার্থকে আকর্ষন করে । এ ঘটনাকে চৌম্বক আবেশ বলে ।

চৌম্বক বিভব কাকে বলে?

চৌম্বক বিভব: কোন চুম্বকের একটি একক উত্তর মেরুকে অসীম দুর থেকে চৌম্বক ক্ষেত্রের অভ্যান্তরে কোন বিন্দুতে আনতে চুম্বক বলের বিরুদ্ধে যে পরিমান কাজ করতে হয় তাকে চৌম্বক বিভব বলে ।

চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্য কাকে বলে?

চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্য: চুম্বকের ক্ষেত্রের কোন বিন্দুতে একক্ শক্তির একটি উত্তর মেরু স্থাপন করলে যে বল অনুভব করে তাকে ঐ ক্ষেত্রের প্রাবল্য বলে ।

কুরী বিন্দু বা তাপমাত্রা কাকে বলে?

কুরী বিন্দু: যে তাপমাত্রা একটি চুম্বকের চুম্বকত্ব সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত বা নষ্ট হয়ে যায় , তাকে উক্ত চুম্বকের কুরী বিন্দু বা কুরী তাপমাত্রা বলে। যেমন-লোহার কুরী বিন্দু ৭৭০º C.

সলিনয়েড কাকে বলে?

সলিনয়েড: একটি কাঁচা লোহার দন্ডকে U আকারে বাকিয়ে লম্বা অন্তরিত তার দ্বারা জডিয়ে এর মধ্যদিয়ে তডিৎ প্রবাহিত করলে তা একটি চুম্বকের ন্যায় আচরন করে । একে সলিনয়েড বলে ।

চুম্বকের ওপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া কাকে বলে?

চুম্বকের ওপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া : কোনো পরিবাহী তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে তার চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয় । ওই তারের কাছে একটি চুম্বক শলাকা থাকলে শলাকাটি বিক্ষিপ্ত হয় । একে চুম্বকের ওপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া বলে।

পৃথিবী একটি বিরাট চুম্বক প্রমান কর?

কোন দন্ড চুম্বককে ঝুলিয়ে দিলে এটি সর্বদা উত্তর দক্ষিন বরাবর অবস্থান করে । ধারণা করা হয় পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিশাল এক চুম্বক দন্ড অবস্থিত যার দক্ষিন মেরু উত্তর দিকে আর উত্তর মেরু দক্ষিন দিকে অবস্থিত ।

এ বিশাল চুম্বকের আর্কষনের জন্য দন্ড চুম্বকের দক্ষিন মেরু বিশাল চুম্বকের উত্তর মেরু (দক্ষিন দিকে ) আর্কষন করে যার ফলে দন্ড চুম্বকের দক্ষিন মেরু দক্ষিন দিকে ঘুরে যায় ।

আবার দন্ড চুম্বকের উত্তর মেরুকে বিশাল চুম্বকের দক্ষিন মেরু (উত্তর দিকে) আর্কষন করে ফলে দন্ড চুম্বকের উত্তর মেরু উত্তর দিকে মুখ করে । এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, পৃথিবী একটি বিরাট চুম্বক বা চুম্বকের ন্যায় আচরন করে ।

ডায়া, প্যারা ও ফেরো চুম্বকের মাঝে পার্থক্য কি কি?

  • ফেরোচৌম্বক পদার্থ চুম্বক দ্বারা প্রবলভাবে আকর্ষিত হয়। কিন্তু প্যারাচৌম্বক পদার্থ দ্বারা ক্ষীণভাবে আকর্ষিত হয়। অন্যদিকে ডায়াচৌম্বক পদার্থ দ্বারা ক্ষীণভাবে বিকর্ষিত হয়।
  • ফেরোচৌম্বক পদার্থ কেলাসিত কঠিন পদার্থ। কিন্তু প্যারাচৌম্বক ও ডায়াচৌম্বক পদার্থ কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় হতে পারে।
  • ফেরোচুম্বকে কুরি বিন্দু আছে অন্যদিকে প্যারা ও ডায়া চুম্বকে নেই
  • ফেরেচৌম্বক পদার্থ মুক্তভাবে ঝুলানো চৌম্বক ক্ষেত্র বরাবর অতিদ্রুত স্থাপিত হয়, কিন্তু প্যারাচৌম্বক পদার্থ স্বাভাবিকভাবে চৌম্বক ক্ষেত্র বরাবর স্থাপিত হয়। অন্যদিকে ডায়াচৌম্বক পদার্থ মুক্তভাবে ঝুলানো চৌম্বক ক্ষেত্রের সমকোণে স্থাপিত হয়।
  • ফেরোচৌম্বক ও প্যারাচৌম্বক পদার্থে চৌম্বক প্রবণতা ধনাত্মক, কিন্তু তা ফেরোচৌম্বক পদার্থে উচ্চমানের ও প্যারাচৌম্বক পদার্থে নিম্মমানের হয়। আবার ডায়াচৌম্বক পদার্থে চৌম্বক প্রবণতা ঋণাত্মক ও নি¤œমানের হয়।
  • ফেরোচুম্বকে চৌম্বক ধারকত্ব ধর্ম আছে কিন্তু প্যারা ও ডায়া চুম্বকে নেই।
  • ফেরো চুম্বকের উদাহরণ হলো – লোহা, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদি। ডায়া চুম্বকের উদাহরণ হলো সোনা, পানি, তামা, পারদ ইত্যাদি আর প্যারা চুম্বকের উদাহরণ হলো প্লাটিনাম, ম্যাঙ্গানিজ, তরল অক্সিজেন ইত্যাদি।

কোন বস্তুকে চুম্বকে পরিণত করা হলে এর ভর ও আয়তনের কোন পরিবর্তন হয় না কেন ?

কোনো চৌম্বক পদার্থকে চুম্বকে পরিণত করার সময় পদার্থটির ভৌত অবস্থার পরিবর্তন হয় না। শুধু পদার্থটির আত্তঃআণবিক সজ্জার পরিবর্তন হয় যা তার বাহ্যিক পরিবর্তনে কোন রকম প্রভাব ফেলবে না।

চুম্বকের চুম্বকত্ব একটি ভৌত ধর্ম। এটি কোন রাসায়নিক ধর্ম নয়। কোন বস্তুকে চুম্বকে পরিণত করা হলে এর কোন রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না।

সুতরাং, কোন বস্তুকে চুম্বকে পরিণত করা হলে বস্তুর কণাগুলো চুম্বকশক্তি গ্রহণ করে। ফলে বস্তুটির ভর অথবা আয়তনের কোন পরিবর্তন হয় না।

চুম্বক আকর্ষন ও মহাকর্ষ আকর্ষনের মধ্যে পার্থক্য কী কী?

  • চুম্বক চৌম্বক পদার্থকে আকর্ষন করে আর মহাকর্ষ যে কোন বস্তুকে আকর্ষন করে।
  • চুম্বক আকর্ষন শক্তিশালী অন্যদিকে মহাকর্ষ আকর্ষন দুর্বল।
  • সমমেরুকে বিকর্ষন করে আর মহাকর্ষর কোন মেরু নেই।
  • সকল বস্তুর প্রতি একই আচরন করে , মহাকর্ষ সকল বস্তুর প্রতি একই আচরন করে না।

আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • লোহার কুরি তাপমাত্রা ৭৭০°C.
  • হাতুড়ি দিয়ে কোন চুম্বক পেটালে সেটি চুম্বকত্ব হারাবে।
  • তাপমাত্রা বাড়ালে চুম্বকত্ব কমবে।
  • নতুন উদ্ভাবিত সব থেকে শক্তিশালি চুম্বক হচ্ছে বোরন আয়রন নিয়োডিমিয়াম।
  • মেরু অঞ্চলে চুম্বকের আকর্ষণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশী।
  • চুম্বকের উত্তর মেরু আসলে পৃথিবীর ভৌগলিক দক্ষিণ মেরু।
  • ক্যাসেটের ফিতার শব্দ সঞ্চিত থাকে চুম্বক শক্তি হিসেবে।
  • রাডারে যে তড়িঃ চৌম্বক তরঙ্গ ব্যবহার করা হয় তার নাম মাইক্রোওয়েভ।
  • প্রাকৃতিক চুম্বককে পূর্বে লেডস্টোন বলা হতো।
  • কম্পিউটারের ফিতায় এবং টেপরেকর্ডারে সিরামিক চুম্বক ব্যবাহৃত হয়।

তো আজ এখানেই থাকলো। আশা করি চুম্বক কি, এর ধর্ম, চৌম্বকত্ব, চৌম্বক পদার্থ ইত্যাদি নিয়ে কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন – আপেক্ষিক গুরুত্ব কি? ঘনত্ব ও আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে পার্থক্য

আপেক্ষিক গুরুত্ব কি? ঘনত্ব ও আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে পার্থক্য

1

আজকের আর্টিকেলে আমি, আপেক্ষিক গুরুত্ব কি? ঘনত্ব ও আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে পার্থক্য, বিভিন্ন বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। তাহলে আর দেরি না করে চলুন এসব বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই।

আপেক্ষিক গুরুত্ব কি বা কাকে বলে?

আপেক্ষিক গুরুত্ব হলো কোন বস্তুর ঘনত্ব ও অন্য একটি প্রসঙ্গ বস্তুর ঘনত্বের অনুপাত বা কোন বস্তুর ভর ও একই আয়তনের অন্য একটি বস্তুর ভরের অনুপাত।

আবার বলা যায়, কোন বস্তুর ওজন এবং 4°C তাপমাত্রায় সমপরিমাণ পানির ওজনের অনুপাতকে বস্তুর উপাদানের আপেক্ষিক গুরুত্ব বলে।

আপেক্ষিক গুরুত্ব কি? ঘনত্ব ও আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে পার্থক্য
আপেক্ষিক গুরুত্ব কি? ঘনত্ব ও আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে পার্থক্য

আপেক্ষিক গুরুত্ব নিয়ে কিছু তথ্যঃ

আপেক্ষিক গুরুত্বের প্রতীক
SI এককনাই

আপেক্ষিক গুরুত্বের মাধ্যমে কি কি জানা যায়?

আপেক্ষিক গুরুত্ব জানা থাকলে নিম্নের জিনিসগুলো জানা যায়।

  • কোন বস্তু পানিতে ডুববে নাকি ভাসবে তা জানা যায়।
  • বস্তুটি কোন পদার্থ দিয়ে তৈরি তা জানা যায়।
  • বস্তু পানির চেয়ে হালকা হলে ভাসমান অবস্থায় এর কত অংশ পানিতে নিমজ্জিত হবে তা জানা যায়।
  • বস্তুটি ফাঁপা কিনা তা জানা যায়।
  • বস্তুটি নিরেট বা খাঁটি কিনা এটা জানা যায়।
  • বস্তুটি ভেজাল কিনা এটা জানা যায় ইত্যাদি।

বিভিন্ন বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্ব

পদার্থআপেক্ষিক গুরুত্ব
পানি১.০০
অ্যালুমিনিয়াম২.৭
তামা ৮.৯২
সোনা১০.৫
রূপা১০.৫
ম্যাগনেসিয়াম১.৪৩
কেরোসিন৮.০০
লোহা৭.৮৬
প্লাটিনাম২১.৪
বরফ০.৯১৭
খাবার লবণ২.১৭
সিমেন্ট৩.১৫
টিন৭.২৯
সোডিয়াম০.৯৭
দস্তা৭.১

ঘনত্ব ও আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে পার্থক্য কি কি?

ঘনত্বআপেক্ষিক গুরুত্ব
বস্তুর একক আয়তনের ভরকে ঘনত্ব বলা হয়। বস্তুর একক আয়তনের ভর এবং 4°C তাপমাত্রায় সমপরিমাণ পানির ওজনের অনুপাতকে বস্তুর উপাদানের আপেক্ষিক গুরুত্ব বলে।
পানির ঘনত্বের সাথে বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্বকে গুণ করলে ঘনত্ব পাওয়া যায়। পানির ঘনত্ব দ্বারা বস্তুর ঘনত্বকে ভাগ করলে বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্ব পাওয়া যায়।
ঘনত্ব পদার্থের ভরের পরম মান নির্দেশ করে।অপরদিকে আপেক্ষিক গুরুত্ব পদার্থের ভরের তুলনামূলক মান বুঝতে সাহায্য করে।
যেমন – পানির ঘনত্ব ১০০০যেমন – পানির আপেক্ষিক গুরুত্ব ১.০০
লোহার ঘনত্ব ৭৮৬০লোহার আপেক্ষিক গুরুত্ব ৭.৮৬

তো আজ এখানেই থাকলো। আশা করি, আপেক্ষিক গুরুত্ব কি? ঘনত্ব ও আপেক্ষিক গুরুত্বের মধ্যে পার্থক্য, বিভিন্ন বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। ধন্যবাদ।

আরও পড়ন – স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে? স্থিতিস্থাপকতা সীমা কি?