বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে, যেসব গাছের এক বা একাধিক অংশ দরকারি ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাকে ঔষধি গাছ বলে। গাছ দ্বারা যদি বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরি করা যায় তখন তাকে ছোটখাটো হাসপাতাল বলা যায়। তবে এর সঠিক ব্যবহার জানতে হবে নাহলে এটি রোগের উপশমের বদলে বিষে রূপান্তরিত হবে।
ঔষধি গাছ যেকোনো দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক সেবাদানে ঔষধি গাছ যুগ যুগ ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ক্যান্সার, কিডনী, হৃদরোগ, লিভার এর মতো জটিল রোগের জন্য ঔষধ তৈরি হচ্ছে উদ্ভিদ থেকে। তাছাড়া এসব ওষুধের কাজ অন্যান্য দেশের রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। চলুন তাহলে পাঁচটি ঔষধি গাছ সম্পর্কে জেনে নেই –
৫ টি ঔষধি গাছের কথা
5 টি ঔষধি গাছ হলো –
- তুলসী গাছ
- আদা
- অশ্বগন্ধা
- নিম গাছ
- অর্জুন গাছ
তুলসী গাছ
তুলসী গাছের প্রচলিত নাম হল তোকমা, গঞ্জা তুলসী, বিলাতি তুলসী ইত্যাদি। একটি মাঝারি আকারের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। খুব বেশি লম্বা হয় না। এটি 3 থেকে 5 সেন্টিমিটার লম্বা ও 2 থেকে 4 সেন্টিমিটার প্রশস্ত হয়। এক পাতায় রয়েছে ঝাঁঝালো গন্ধ। ফুলগুলো খুবই ছোট। ফুলের সাথে ছোট ছোট কালো রঙের বীজ উৎপন্ন হয়।
এ উদ্ভিদটির পাতা ফুল শেকড় সবকিছুই ব্যবহার করা হয়। সুগন্ধি তৈরিতে, পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত চামড়ায় নানা রকম রোগ, নানা রকমের স্কিন সমস্যা, সর্দি – কাশি, ইত্যাদিতে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। এর পাতার রস অ্যান্টিসপাসমোডিক এবং অ্যান্টিরহোম্যাটিক এ ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া ক্যান্সার টিউমার রোগেও তুলসী গাছের রস ব্যবহার করা হয়।
আদা
আদার অনেক ঔষধি গুন রয়েছে। ঠান্ডা – সর্দিতে আদা চা চমৎকার আরাম দেয়। এর ঔষধি গুণ এর পেছনে রয়েছে “জিনজেরল”। আদাতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য পুষ্টি উপকরণ যা আর্থ্রাইটিস, প্রদাহ ও সংক্রমণে সহায়ক।
কাঁচা বা গরম করা আদা পেশী শূল উপশম করে। তাছাড়া আদাতে যে এনজাইম রয়েছে সেগুলো পেট বায়ুনাশে উপকারী ও পেট ফাঁপা কমায়। এছাড়াও অন্ত্রের চলন বাড়ায় এতে করে কোষ্ঠবদ্ধতা কমে।
অশ্বগন্ধা
বহুবর্ষজীবী বেগুনি ফুলে ভরা অশ্বগন্ধা একটি ছোট গাছ। বীজ থেকে চারা হয়। এর জন্য দোআঁশ মাটি উপযুক্ত। এ গাছ 2 থেকে 3 মাসে বড় হয়। বর্ষাকালে চারা লাগানো ভালো।
অশ্বগন্ধা গাছের মূলের গুঁড়ো দুধ বা পানির সঙ্গে 2/3 গ্রাম হারে মিশিয়ে দিনে দুইবার খেলে যৌবন রক্ষা হয়। তাছাড়া মানসিক চাপ, দুর্বলতা ও টেনশন কমায়। ডিপ্রেশন দূর করে।তবে যাদের বেশি রক্তচাপ তাদের এটি খাওয়া উচিত নয়।
নিম গাছ
প্রায় সকল রোগের ঔষধ হচ্ছে নিম গাছ। নিমের পাতা শুকিয়ে ছোট ছোট ট্যাবলেট বানিয়ে ডায়াবেটিস রোগীরা সকাল-বিকেল খেয়ে থাকে। এছাড়া চিকেন পক্স চামড়ার এলার্জির মতো সমস্যায় নিমের পাতা গরম পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও পোকামাকড়ের কামড়ে ক্ষত হলে, সে জায়গায় নিম আর হলুদের রস একসাথে মিশিয়ে লাগালে ভালো হয়ে যায়।আর দাঁতের ব্যথার জন্য নিমের ডালের রস খুবই উপকারী।
অর্জুন গাছ
অর্জুন গাছের প্রায় সব কিছু (মূল, কাণ্ড, পাতা, ছাল,ফুল, ফল) ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। হৃদরোগ, বুকের ব্যথার জন্য অর্জুন গাছের ছাল গুঁড়ো করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
তাছাড়া অর্জুনের গুঁড়ো বাসক পাতার সঙ্গে মিশিয়ে খেলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। হাড় মচকে গেলে বা চিড় ধরলে রসুন এর সঙ্গে মিশিয়ে অর্জুনের ছাল বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
তাহলে বন্ধুরা আজ এখানেই থাকলো। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
ধন্যবাদ।