Homeএকাডেমিকআইসিটি (ICT)হ্যাকিং কি বা কাকে বলে? হ্যাকার কে? কত প্রকার ও কি কি?

হ্যাকিং কি বা কাকে বলে? হ্যাকার কে? কত প্রকার ও কি কি?

আজ আমরা হ্যাকিং কি? হ্যাকার কারা ইত্যাদি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।

হ্যাকিং কি বা কাকে বলে?

হ্যাকিং এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে তথ্য বা ফাইল চুরি বা পরিবর্তন করার জন্য কেউ কোন বৈধ অনুমতি ছাড়া কোন কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। যা এ হ্যাকিং করে তারা হচ্ছে হ্যাকার।

অনেকেই হ্যাকিং বলতে শুধু কোন ওয়েবসাইট হ্যাকিং বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হ্যাক করাকে মনে করেন। আসলেই হ্যাকিং কি তাই? না হ্যাকিং শুধু তা না। হ্যাকিং বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, গাড়ি ট্র্যাকিং, বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ও ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ইত্যাদি বৈধ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে তা হ্যাকিং এর আওতায় পড়ে।

পড়ুন – হ্যাকিং থেকে আপনার এন্ড্রয়েড ফোনকে রক্ষা করুন ৫ টি কার্যকরী উপায়ে!

হ্যাকাররা এসব যন্ত্রের দোষ বের করে তা দিয়েই হ্যাক করে। তারা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত বা আর্থিক ডিটেইলসগুলো ধরতে ব্রাউজার হািজ্যাক, স্পুফিং, ফিশিং ইত্যাদি কৌশলগুলোকে কাজে লাগায়।

অনেকের মনে এবার প্রশ্ন হতে পারে, কীভাবে জানবেন আপনার কম্পিউটার হ্যাক করা হয়েছে কি না?

আপনার কম্পিউটার হ্যাক করা হয়েছে কিনা যেভাবে জানবেন চলুন সে সম্পর্কে এবার জেনে নেই। আপনার কম্পিউটার হ্যাক হলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখতে পাবেন।

  • ভুয়া অ্যান্টিভাইরাস সতর্কবার্তা
  • অবাঞ্ছিত ব্রাউজার টুলবার
  • অদ্ভূত ওয়েবসাইটগুলোর রিডিরেকশন
  • অনাকাঙ্খিত পপ আপ
  • রান্সমওয়্যার বার্তা ইত্যাদি।

আপনি যদি আপনার কম্পিউটারে এ লক্ষণগুলো দেখতে পান তবে বুঝবেন আপনার কম্পিউটারটি হ্যাক করা হয়েছে।

হ্যাকিং প্রতিরোধ করার উপায়

  • যেকোন অপরিচিত সফটওয়্যার ডাউনলোড করা বা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন এমনকি সেটা যদি আপনার বন্ধুও বলে তবুও বিরত থাকবেন। আপনার যদি সেটা খুবই প্রয়োজন হয় তাহলে সফটওয়্যার সম্পর্কে নেটে সার্চ দিয়ে ভালো করে জেনে নিন।
  • ই-মেইল থেকে পাওয়া লিঙ্ক দিয়ে কোথাও লগইন করবেন না।
  • পাসওয়ার্ড সবসময় ৮ ডিজিটের বেশি এবং শক্তিশালী পাসওয়ার্ড (অক্ষর, সংখ্যা, ক্যাপিটাল লেটার, স্মল লেটার ইত্যাদি) দিবেন।
  • অপরিচিত কোন ওয়েবসাইট লগইন করবেন না।
  • অনুমোদিত ওয়েবসাইট থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করবেন।
  • আপনার লগইন তথ্য কখনো শেয়ার করবেন না। ইত্যাদি।

হ্যাকিং এর প্রকারভেদ

কয়েক প্রকারের হ্যাকিং হলো-

পিশিং

পিশিং সম্পর্কে মোটামুটি প্রায় সবাই জানে। নিচের অংশটুকু পড়লে নিজেকে পিশিং এর হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন।

Denial of Service Attack

Denial of Service Attack এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে DoS Attack. এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে হ্যাকাররা কোন এক্সপ্রেস না পেয়েও কোন নেটওয়ার্কে ঢুকে তার ক্ষমতা নষ্ট করে।

পড়ুন – মডেম / Modem কি? মডেম কীভাবে কাজ করে? ও প্রকারভেদ

Trojan Horses

এটি হচ্ছে একটি প্রোগ্রাম যা কোন প্রোগ্রামকে নষ্ট করে।এটাকে সবাই ভাইরাস নামেই চিনে । Trojan Horses ব্যবহার করে অন্যান্য প্রোগ্রাম নষ্ট করার পাশাপাশি পাসওয়ার্ড বা অন্যান্য তথ্য হ্যাকারদের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছিয়ে দেয়।

Back Doors

এটি খুঁজে বের করে হ্যাকাররা কোন সিস্টেমকে কাজে লাগায়। Back Doors গুলো হলো প্রশাসনিক সহজ রাস্তা, কনফিগারেশন ভুল, সহজে বুঝা যায় এমন পাসওয়ার্ড এবং অসংরক্ষিত ডায়েল আপস কানেকশন ইত্যাদি। এগুলো ছাড়াও অন্যান্য দুর্বল জায়গা ব্যবহার করে কোন নেটওয়ার্ককে কাজে লাগায়।

Rogue Access Points

যে কোন ধরণের ওয়ারলেস নেটওয়ার্কে প্রবেশের জন্য হ্যাকাররা Rogue Access Points ব্যবহার করে।

এগুলো ছাড়াও আরো অনেকভাবক হ্যাকিং করতে পারে।

পড়ুন – সুইচ (Switch) কি? সুইচের সুবিধা ও অসুবিধা

একটি এন্টি হ্যাকিং সফটওয়্যারের গুরুত্ব

এন্টি হ্যাকিং সফটওয়্যার কম্পিউটার এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার নামেও পরিচিত। যা প্রত্যেকটা পিসির জন্য অবশ্যই থাকতে হবে। এটি স্পাইওয়্যার এবং অন্যান্য ম্যালওয়্যার অনুপ্রবেশ সনাক্ত করে এবং সেগুলো সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে সাইবার আক্রমণ থেকে পিসিকে রক্ষা করে। এ সফটওয়্যারটির সর্বশেষ আপডেট রাখা উচিত যাতে কোন ধরণের হুমকি সনাক্ত করা যায়।

তাছাড়া রিভ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি হ্যাকারদের কাছ থেকে আপনার কম্পিউটারের সুরক্ষা দেয়, তাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য এটি আদর্শ। চলুন তাহলে এবার হ্যাকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

হ্যাকার কে বা কি?

যে ব্যক্তি বিনা অনুমতিতে কারো কম্পিউটার বা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ডিভাইস বা তথ্যের ক্ষতি করে তাকে হ্যাকার বল। অসৎ ব্যক্তিরাই হ্যাকিং এর সাথে যুক্ত থাকে । এক কথায় যে ব্যক্তি হ্যাকিং প্র্যাকটিস করে তাকেই হ্যাকার বলে। তারা যে সিস্টেমে হ্যাকিং করবে সে সিস্টেমের গঠন, কার্যপ্রণালী, কীভাবে কাজ করে সকল তথ্য জানে।

পড়ুন – ইউনিকোড (Uni Code) কি? ইউনিকোডের বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা

আগের দিনে কম্পিউটারের এত চলন ছিল না তখন হ্যাকাররা শুধু ফোন হ্যাকিং করত। ফোন হ্যাকারদের Phreaker এবং এ প্রক্রিয়াকে Phreaking বলে। এরা বিভিন্ন কমিউনিকেশন সিস্টেমকে হ্যাক করে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করত।

নোটঃ মনে রাখবেন হ্যাকারদের চিহ্নিত করা হয় Hat বা টুপি দিয়ে।

হ্যাকারের প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ

হ্যাকার সাধারণত ৩ প্রকার। যথাঃ

  • হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার (White hat hacker)
  • গ্রে হ্যাট হ্যাকার (Gray hat hacker)
  • ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার (Black hat hacker)

হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার (White hat hacker)

যারা অন্যের কম্পিউটার বা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বিভিন্ন বিষয় দেখে কিন্তু কোন প্রকার ক্ষতি বা পরিবর্তন না করে বের হয়ে আসে তাদেরকে হোয়াইট হ্যাড হ্যাকার বলে। হোয়াইট হ্যাকাররাই প্রমাণ করে সকল হ্যাকাররা খারাপ না।

তারা কোন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি বের করে ঐ সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিককে দ্রুত জানায়। সিকিউরিটি সিস্টেম হতে পারে কোন কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা কোন ওয়েবসাইট ইত্যাদি।

গ্রে হ্যাট হ্যাকার (Gray hat hacker)

গ্রে হ্যাট হ্যাকাররা (Gray hat hacker) হলো দু মুখো সাপ। এরা যখন কোন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি বের করে তখন সে তার ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ করে।

পড়ুন – ব্লুটুথ কি? ব্লুটুথ এর ব্যবহার, বৈশিষ্ট্য / সুবিধা ও অসুবিধা

সে ইচ্ছে করলে সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিককে ত্রুটি জানাতেও পারে বা তথ্যগুলো দেখতে পারে বা নষ্ট করতে পারে বা নিজের স্বার্থে ব্যবহারও করতে পারে। বেশিরভাগ হ্যাকাররায় এরকমের হয়।

ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার (Black hat hacker)

সবচেয়ে ভয়ংকর হ্যাকার হচ্ছে ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার (Black hat hacker)। এরা কোন ত্রুটি বের করলে সেটিকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগায়। সেটা নষ্ট করে। বিভিন্ন ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়। ভবিষ্যতে আবার যাতে সেখান থেকে সুবিধা নিতে পারে সে ব্যবস্থা করে রাখে। এরা সাধারণত ক্রেডিট কার্ডের গোপন নম্বর ও ব্যাংক ডেটাবেজের তথ্যসমূহ নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে।

আরও কয়েকপ্রকার হ্যাকার হলো

Anarchists

এরা হচ্ছে সেসব হ্যাকার যারা বিভিন্ন কম্পিউটার সিকিউরিটি সিস্টেম বা অন্য কোন সিকিউরিটি সিস্টেম ভাঙতে পছন্দ করে। এ ধরনের হ্যাকাররা যেকোনো টার্গেটের সুযোগ খুঁজে কাজ করে।

Crackers

বিভিন্ন সময়ে ক্ষতিকারক হ্যাকারদের Crackers বলা হয়। মূলত খারাপ হ্যাকাররায় Crackers। এদের কাজেই হচ্ছে বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ভাঙ্গা এবং Trojan Horses তৈরি করা এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক সফটওয়্যার তৈরি করা।

আরও পড়ুন – কম্পিউটার কি? কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার

Script kiddies

এরা মূলত প্রকৃত হ্যাকার নয়। হ্যাকিং সম্পর্কে এদের কোন বাস্তব জ্ঞান নেই। এরা বিভিন্ন ধরনের Warez ডাউনলোড করে বা কিনে নিয়ে তারপর ব্যবহার করে হ্যাকিং করে।


ত আজ এপর্যন্তই থাকলো। হ্যাকিং কি বা কাকে বলে? হ্যাকার কে? কত প্রকার ও কি কি? নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent posts

Recent comments