সমার্থক শব্দ কি বা কাকে বলে? গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমার্থক শব্দ

সমার্থক শব্দের অর্থ হলো সমার্থসূচক, একার্থবোধক, এক বা অনুরূপদ অর্থবিশিষ্ট। একই অর্থ প্রকাশক ভিন্ন শব্দকে সমার্থক শব্দ বলে। বাংলা অভিধান যাচাই করলে দেখা যায়, সমার্থক ও প্রতিশব্দ দুটির অর্থ একই। সম + অর্থ + ক = সমার্থক আবার প্রতি + শব্দ = প্রতিশব্দ এর অর্থ করা হয়েছে সমার্থক। এ দুটির অর্থ এক ও অভিন্ন।

পড়ুন – উদাহরণসহ “এ” ধ্বনি উচ্চারণের ৫ টি নিয়ম

সমার্থক বা প্রতিশব্দের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

  • মনের ভাব যথাযথ প্রকাশ করার জন্য এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
  • বাংলা শব্দভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে।
  • সাহিত্যের ভাবকে সুন্দর ও মার্জিত করতে এর গুরুত্ব অনেক।
  • ভাষাকে সাবলীল ও গতিশীল করার জন্য এর অনেক প্রয়োজন।
  • কবিতার ছন্দের মিলের জন্য এর দরকার অনেক।

পড়ুন- ধ্বনি কি বা কাকে বলে? ধ্বনি,স্বরধ্বনি,ও ব্যঞ্জনধ্বনির প্রকারভেদ

গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমার্থক শব্দ

অগ্নিঃ কৃশানু, অনল, বিভাবসু, বহ্নি, হুতাশন, সর্বভুক, পাবক, বৈশ্বানর।

অতিথিঃ  অভ্যাগত, আগন্তুক, আমন্ত্রিত।

অঙ্গঃ দেহ, বপু, কলেবর, কায়া, গাত্র, তনু, শরীর।

অশ্বঃ ঘোড়া, ঘোটক, হয়,তুরঙ্গ, বাজী, তুরগ।

অশ্রুঃ আঁখি, লোর,নেত্রজল,চোখের জল।

অন্ধকারঃ আঁধার, তিমির,তমিস্র,তমঃ, তম,আন্ধার।

অতিথিঃ কুটুম্ব,কুটুম,নিমন্ত্রিত,মেহমান,আগন্তুক।

অন্নঃ ভাত,ওদন,স্বদা,।

পড়ুন- ব্যাকরণে পুরুষ কি বা কাকে বলে? পুরুষের প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ

আনন্দঃ  উল্লাস, হর্ষ, পুলক, আমােদ, প্রমােদ, আহ্লাদ।

আকাশঃ অন্তরীক্ষ, অম্বর, গগন, নভঃ, ব্যোম।

আদেশঃ আজ্ঞা, হুকুম, অনুমতি, উপদেশ, নির্দেশ, অনুশাসন।

আলোঃ অংশু, কর,দীপ্তি,প্রভা,জ্যােতি,আভা,বিভা,দ্যুতি।

আমন্ত্রণঃ আহ্বান, নিমন্ত্রণ, ডাক,নেমন্তন্ন, সম্ভাষণ, আহূতি।

আপ্যায়ণঃ যত্ন-আত্তি, সমাদর, আদর-যত্ন, খাতির, সেবা।

ই,ঈ

ইচ্ছাঃ অভিলাষ, অভিপ্রায়, অভিরুচি, অভীপ্সা, আকাঙ্ক্ষা, ঈসা, কামনা।

ইতিঃ সমাপ্তি, শেষ,রক্ষা,অবসান, যবনিকা।

ইন্দ্রঃ অধিপতি, সুরপতি, বাসব,প্রধান, শ্রেষ্ঠ।

ঈশ্বরঃ বিধাতা, বিধি, জগদীশ, আল্লাহ, রব,খোদা,ভগবান, স্রষ্টা, বিশ্বপতি, পরমেশ্বর।

ঈপ্সাঃ ইচ্ছে, লোভ,লালসা।

ঈর্ষাঃ হিংসা, দ্বেষ, বিরাগ, বিদ্বেষ।

উ,ঊ

উনুনঃ আখা, আহা, চুল্লী, চুলা, উনান।

উত্তমঃ উৎকৃষ্ট, উপাদেয়, চমৎকার, ভাল, শ্রেষ্ঠ।

উদ্যানঃবাগান, উপবন, বাগিচা।

উঠানঃ আঙ্গিনা, অঙ্গন, চাতাল, চত্বর।

উদরঃ পেট, জঠর।

ঊর্মিঃ ঢেউ,তরঙ্গ, বীচি,কল্লোল, তুফান।

ঊর্ধ্বঃ উপর, উচ্চ, উন্নত।

পড়ুন – অবিভাজ্য ধ্বনি কি বা কাকে বলে? অবিভাজ্য ধ্বনির প্রকারভেদ

ঋ, এ

ঋণঃ কর্জ,ধার,দেনা।

ঋতুঃ কাল, সময়।

একতাঃ ঐক্য, মিলন,লীগ,দল,সংগঠন।

ঐ, ও, ঔ

ঐতিহ্যঃ কিংবদন্তি, বিশ্রুতি,ঐন্দ্রজালিক।

ঐশ্বর্যঃ বিত্ত, সিদ্ধি,মহিমা, ধন-সম্পত্তি।

ওষ্ঠঃ অধর, ঠোঁট, ওট।

ঔষধঃ ওষুধ, প্রতিষেধক।

ক, খ

কন্যাঃ আত্মজা, তনয়া, দুহিতা, নন্দিনী, মেয়ে, সুতা।

কপালঃ  ললাট, ভাল, বিশেষ অর্থে ভাগ্য, অদৃষ্ট।

কানঃ কর্ণ, শ্রুতি, শ্রবণেন্দ্রিয়।

কিরণঃ রশ্মি, প্রভা, আভা, দযুতি, জ্যোতি, অংশু, ময়ূখ, কর, বিভা।

কুকুরঃসারমেয়, স্বা, কুকুর।

কোকিলঃ ও পিক, বসন্ত সখা, পরভৃৎ।

কাপড়ঃ বস্ত্র, বসন, বাস, পরিধেয়, অম্বর।

কথাঃ বচন,বাক্য, ভাষণ,উক্তি।

কূলঃ তীর,তট,বেলা,সৈকত, কিনারা।

খ্যাতিঃ যশ,প্রসিদ্ধি,সুখ্যাতি,সুনাম।

খবরঃ সংবাদ,বার্তা,তথ্য, সমাচার,খোঁজখবর।

খারাপঃ কু,বদ,মন্দ,নিকৃষ্ট, দুষ্ট, নষ্ট, বিকল।

খেচরঃ পাখি, পক্ষী,বিহগ,বিহঙ্গ, খগ।

খুবঃ ভীষণ, প্রচুর, অনেক, বড়,বেশি,ব্যাপক।

পড়ুন – ধাতু কি বা কাকে বলে? ধাতুর প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ

গৃহঃ আলোয়, আবাস, নিবাস, ভবন, ঘর, নিকেতন, বাটী, সদন, কুটীর।

গলাঃ কণ্ঠ, গ্রীবা।

গালঃ কপােল, গণ্ডদেশ।

গাছঃ বৃক্ষ, তরু, পাদপ, মহীরূহ, বিটপী।

গ্রামঃ গা, পল্লী, লােকালয়, জনপদ।

গরুঃ গো,গাভী,ধেনু,কপিলা,ষাঁড়।

গতিঃ গমন, চলন,যাত্রা।

ঘোড়াঃ তরঙ্গ, ঘােটক, হয়, বাজী, অশ্ব।

ঘরণীঃ স্ত্রী, পত্নী, জায়া,গৃহিণী, বিবি,বেগম।

চন্দ্রঃ শশাঙ্ক, শশধর, শশী, সােম, সুধাংশু, সিতাংশু, হিমাংশু, বিধু, নিশাকর, চন্দ্রমা

চুলঃ অলক, কুন্তল, চিকুর, কেশ।

চোখঃ আঁখি, নেত্র, নয়ন, লােচন, চক্ষু, অক্ষি, দর্শনেন্দ্রিয়।

চিহ্নঃ ছাপ,রেখা,দাগ।

চূড়াঃ শীর্ষ, মুকুট,ঝুঁটি,শ্রেষ্ঠ, প্রধান।

ছাত্রঃ শিষ্য, শিক্ষার্থী, পড়য়া, বিদ্যার্থী।

ছবিঃ শোভা,শান্তি,দীপ্তি।

ছলনাঃ ছল, কপটতা, ন্যাকামি,প্রতারণা।

পড়ুন – বচন কি বা কাকে বলে? বচনের প্রকারভেদ / শ্রেণীবিভাগ

জ, জ

জলঃ অম্বু, অপ, উদক, জীবন, পয়ঃ, বারি, নীর, সলিল।

জন্তুঃ জন্তুল জানোয়ার, জীব, পশু, প্রাণী।

জন্মঃ উৎপত্তি, জীবনকাল, আগমন।

জলধিঃ সমুদ্র, অর্ণব, সিন্ধু, বরুণ,দরিয়া,পাথার।

জগৎঃ পৃথিবী, দুনিয়া,ধরা,ভুবন,বিশ্ব,ভূ।

জ্যােৎস্নাঃ চন্দ্রিমা,চন্দ্রিকা, জোছনা।

জনঃ লোক,মানুষ, মজুর,পথিক।

ঝগড়াঃ তর্ক,কলহ,কোন্দল,বিবাদ।

ঝড়ঃ তুফান, ঝটিকা, বাত্যা।

ট, ঠ

ট্যাক্সঃ খাজনা, কর, রাজসু,টোল।

টানঃ আসক্তি, আকর্ষণ, সম্পর্ক,আগ্রহ।

ঠিকঃ সত্য, নির্ভুল,ভালো, সঠিক, আসল।

ঠোঁটঃ অধর, চঞ্চু, ওষ্ঠ।

ড, ঢ

ডাকঃ বুলি, ধ্বনি,বচন,চিৎকার, আহ্বান।

ঢেউঃ তরঙ্গ, ঊর্মি,বীচি,হিল্লোল,কল্লোল,তুফান

পড়ুন – বর্ণ (Letter) কাকে বলে? বর্ণ কত প্রকার ও কি কি?

ত, থ

তীরঃ কূল, তট, পুলিন, সৈকত।

তনুঃ দেহ,শরীর,কাঠামো, গাত্র, অঙ্গ, গা।

থলেঃ থলিয়া, ঝুড়ি,বস্তা,বোরা।

থোকাঃ গোছা, মালা, রাশি, থোক।

দ, ধ

দেবতাঃ দেব, অমর, সুর, বৈকুণ্ঠবাসী। দন্ত, দশন, আশী।

দরজাঃ দ্বার, দুয়ার, ফটক।

দিনঃ দিবস, দিবা, অহঃ।

দুর্গা : শারদা, দশভুজা, পার্বতী, উমা, চণ্ডী।

দেহঃ তনু,গাত্র, গা,শরীর,অবয়ব।

ধর্মঃ সকর্ম, কর্তব্য,হিতকর।

ধবলঃ শ্বেত, সাদা, শুক্ল।

ধ্বংসঃ নাশ, বধ, অপচয়।

নারীঃ রমণী, ললনা, মহিলা, বনিতা, স্ত্রী, বামা, অঙ্গনা, প্রমদা।

নক্ষত্রঃ তারা, তারকা, জ্যোতিষ্ক।

নাকঃ নাসিকা, নাসা, ঘ্রাণেন্দ্রিয়।

নদীঃ কল্লোলিনী, তরঙ্গিনী, তটিনী, নির্ঝরিণী, স্রোতস্বিনী, প্রবাহিনী।

পড়ুন – বিপরীত/ বিপরীতার্থক শব্দ কি বা কাকে বলে? গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিপরীত শব্দ

প, ফ

পর্বতঃ গিরি, ভূধর, নগ, অদ্রি, অচল, মহীধর।

পৃথিবীঃ অবনী, ধরা, বসুধা, মেদিনী, ধরিত্রী।

পাঃ পদ, চরণ, পাদ।

পদ্মঃ কমল, উৎপল, শতদল, পঙ্কজ, সরােজ, সরসিজ, কোকনদ।

পাখীঃ পক্ষী, খেচর, বিহগ, বিহঙ্গ, পক্ষধর, খগ, বিহঙ্গম।

পুত্রঃ ছেলে, তনয়, আত্মজ, সূত, নন্দন, কুমার, দুলাল।

পেটঃ  উদর, জঠর।

পুকুরঃ পুষ্করিণী, তড়াগ, জলাশয়, সরসী।

পাহাড়ঃ গিরি, পর্বত, ভূধর, অচল, শৈল, শৃঙ্গধর।

পিতাঃ বাবা,  জনক, বাপ, জন্মদাতা, তাত।

পূজাঃ ভজন, অর্চনা, আরাধনা, বন্দনা।

ফুলঃ পুষ্প, রঙ্গন, কুসুম।

ফণীঃ সর্প, সাপ, অহি, ভুজঙ্গ।

বৃক্ষঃ তরু, শাখী, মহীরূহ, বিটপী, পাদপ, গাছ, দ্রুম।

ব্যাঘ্রঃ শার্দূল, বাঘ, মৃগারি।

বিদ্যুৎঃ ইরম্মদ, ক্ষণপ্রভা, চঞ্চলা, চপলা, দামিনী, বিজলী, সৌদামিনী।

বায়ুঃ বাতাস, অনিল, সমীর, সমীরণ, বায়, গন্ধবহ, পবন, মরুৎ।

বনঃ অরণ্য, কানন, জঙ্গল, বিপিন, কান্তার, অটবি।

বানরঃ কপি, শাখামৃগ, বাঁদর, প্লবগ।

ব্যাঙঃ ভেক, দাদুরী, মন্ডুক।

বুকঃ বক্ষ, উর, বক্ষঃস্থল।

বন্ধুঃ মিত্র, সখা, সুহৃদ, বান্ধব।

পড়ুন – উদাহরণসহ “অ” ধ্বনি উচ্চারণের ৫ টি নিয়ম

ভভিনীঃ বোন, ভগিনী, সহােদরা, অনুজা/অগ্রজা।

ভ্রাতাঃ  ভাই, সােদর, সহোদর, অনুজ/অগ্রজ।

ভয়ঃ আতঙ্ক, ত্রাস, ভীতি, ডর, শিহরণ।

মাতাঃ অম্বা, মা, জননী, গর্ভধারিণী, প্রসবিনী, প্রসূতি।

মেঘঃঅভ্র , অম্বুদ, কাদম্বিনী, ঘন, জলদ, জলধর, নীরদ, পয়ােদ, বারিদ, বারিধর।

মন্দিরঃ দেবালয়, দেউল, দেবগৃহ, সুরালয়।

মৎসঃ মাছ, মীন।

ময়ূরঃ শিখি, কলাপী।

মানুষঃ মানব, মনুষ্য, নর, লােক।

মাটিঃ মৃত্তিকা, জমি,কবর, আশ্রয়।

মৃত্যুঃ মরণ,বিনাশ, ইন্তেকাল, ত্যাগ,নিপাত,চিরবিদায়।

য, র

যশঃ সুখ্যাতি, প্রশংসা, প্রসিদ্ধ, সুনাম,খ্যাতি।

যুদ্ধঃ লড়াই,সংঘর্ষ, সংঘাত,দ্বন্দ্ব, সংগ্রাম।

রজনিঃ রাত্রি, নিশা, শর্বরী, বিভাবরী, ক্ষপা, ক্ষণদা, ত্রিযামা।

রাগ: ক্রোধ, কোপ, রােষ। শোণিত, রুধির।

পড়ুন – অক্ষর (Syllable) কি বা কাকে বলে?

লতাঃ লতিকা, ব্রততী, বল্লরী।

লগ্নঃ অক্ত, ক্ষণ,তিথি, বেলা, সময়, কাল।

লোভঃ লিপ্সা, আকাঙ্ক্ষা, লালসা।

শিক্ষক : গুরু, আচার্য, শিক্ষাদাতা।

শত্রুঃ অরি, রিপু, অরাতি, বৈরী।

শিবঃ মহাদেব, ভব, মহেশ, কৃত্তিবাস, শম্ভু, শর্ব, ভবেশ।

ষাঁড়ঃ ষাঁড়, বৃষ, বৃষভ।

ষড়রসঃ কটু,তিক্ত, লবণ।

সুখঃ বদন, আর্স্য, আনন।

সমুদ্রঃ পারাবার,  জলধি, বারিধ,  সাগর, অর্ণব, পাথার, রত্নাকর।

সূর্যঃ রবি, ভানু, ভাস্কর, আদিত্য, দিনমণি, তপন, সবিতা, মার্তণ্ড।

সাপঃ সর্প, ফণী, আশীবিষ, অহি, উরগ, নাগ, ভুজঙ্গ, ভুজঙ্গম।

স্ত্রীঃ কান্তা, জায়া, ঘরণী, গৃহিনী, গিন্নী,বধু, বউ।

সিংঘঃ পশুরাজ, কেশরী, মৃগরাজ।

সরস্বতীঃ বাগদেবী, বীণাপাণি, সারদা, শুভ্রা, শ্বেতা, শ্বেতাম্বরা।

স্নানঃ চান, নাওয়া, নাহা, অবগাহন, নিমজ্জন, ডুবন, অবগাহ, গোসল।

পড়ুন – শব্দ কাকে বলে? উৎপত্তি বা উৎস, গঠন ও অর্থানুসারে শব্দের শ্রেণীবিভাগ

হাতীঃ করী, দন্তী, হস্তী, স্বিরজ, কুঞ্জর।

হরিণঃ : কুরঙ্গ, কুরঙ্গম, মৃগ, এণ।

হীনঃ নীচ, অধম, ক্ষীণ, নিন্দনীয়।


তাহলে আজ এখানেই শেষ করছি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *