তীব্র গরমে যখন ক্লান্ত তখনই ১ গ্লাস লেবুর শরবত খেলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। শুধু শরবত হিসেবে নয়, ওজন কমাতেও অনেকে লেবুর শরবত খায়। কিন্তু আপনি কি জানেন লেবুর শরবত শুধু ওজন কমাতে নয়, এছাড়া লেবু আরো অনেক উপকার করে।
লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর থেকে শুরু করে, পেট পরিষ্কার রাখার মতো প্রচুর উপকার করে। এছাড়াও লেবুর রসের দারুন উপকারিতা রয়েছে। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন বি ১, বি ২, বি ৩ বি ৫, রিভোফ্লাবিন, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন মিনারেল, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি। এছাড়াও খুব কম মাত্রার ক্যালরি আছে। তবে লেবুর প্রধান আকর্ষণ হলো ভিটামিন সি।
লেবুর উপকারিতা
নানারকম প্রসাধনী তৈরিতে
একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে ভিটামিন সি, যা শরীরকে সক্ষম রাখতে সাহায্য করে। শুধুমাত্র লেবু খেলেই প্রায় ৮১% ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তাছাড়া পৃথিবীব্যাপী লেবুর কদর রয়েছে নানারকম খাদ্য, শ্যাম্পু সাবানসহ প্রসাধনী সামগ্রীতেও রয়েছে লেবুর কদর। লেবুর অনেক জাত রয়েছে। যেমন –
- কাগজী লেবু
- এলাচি লেবু
- শরবতি লেবু
- জামির লেবু
- বারি লেবু ১
- বারি লেবু ২
- বারি লেবু ৩
চর্বি কমাতে
আপনি যদি স্লিম হতে চান তাহলে নিয়মিত লেবু খান। সকালে খালি পেটে লেবুর পানির সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে খেলে আপনার চর্বি কমবে। তাছাড়া লেবুর রসে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি মানুষের রোগ প্রতিরোধী সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে।
আরও পড়ুন – আমলকি | আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
১০০ গ্রাম লেবুতে পুষ্টি উপাদান
পুষ্টি | পুষ্টিমূল্য |
শক্তি | ৪৮ কিলো ক্যালরি |
প্রোটিন | ১.১০ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৯.৩২ গ্রাম |
মোট আঁশ | ২.৮০ গ্রাম |
ফোলিয়েট | ১১ মাইক্রো গ্রাম |
নিয়ামিন | ১৫ মাইক্রো গ্রাম |
প্যানথোটিক এসিড | ০.১৯০ মাইক্রো গ্রাম |
লৌহ | ০.৭ মি:গ্রা: |
ক্যালসিয়াম | ০.৫ মি:গ্রা: |
পাইরোডক্সিন | ০.০৪০ মাইক্রো গ্রাম |
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
লেবুর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শরীরকে বিভিন্ন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খাবার তালিকায় লেবু রেখে আমরা ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি।
পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে
যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য লেবু অনেক উপকারী। পেটের সমস্যার মধ্যে ডায়রিয়া, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য আমাদের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। এই সমস্যা হলে এক গ্লাস লেবু আর লবণ পানি খেলে আপনাকে এ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিবে। তাছাড়া লেবুর সাথে এক চা-চামচ মধু হলে আরো ভালো।
ফুসফুসের জন্য উপকারী
লেবু শরীর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য বের করে দেয়, ফুসফুসের যত্ন নেয়, এছাড়াও শরীরের চর্বি এবং লিপিডের মাত্রা কম রাখে।
ক্ষত সারায়
লেবু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যে কোন ভাইরাস জনিত ইনফেকশন যেমনঃ ঠান্ডা-সর্দি- জ্বর ইত্যাদি দমনে খুবই কার্যকরী। তাছাড়া মূত্রনালীর ক্ষত সারাতেও লেবুর ভূমিকা অনেক।
পড়ুন – বেদানার ১১ উপকারিতা
হাইপার টেনশন কমায়
খাবারের সাথে যেনা যথেষ্ট পরিমাণ পটাশিয়াম গ্রহণ করে না তারা সহজে নানারকম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। লেবুর রসে অনেক পটাশিয়াম রয়েছে যা হাইপার টেনশন কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে লেবু
লেবু প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে পরিচিত। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। লেবুর রসের সাথে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
লেবু দাঁতের মাড়ির ব্যথা, দাঁতের সমস্যা মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। পানি খাবার পর দাঁত ব্রাশ করার প্রয়োজন নেই।
নখ সুন্দর করে
এক টুকরো লেবু দিয়ে নখ ঘষলে নখ তার উজ্জল ফিরে পায়। তাছাড়া লেবুর পানিতে হাত, পা ডুবিয়ে রাখলেও উপকার হয়।
পিএইচ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
লেবু অম্লীয় হওয়া সত্বেও শরীরে প্রয়োজনে ক্ষারধর্মী আচরণ করে। এটি এসিডিটি তৈরি করে না। এটি শরীরের পিএইচ মাত্রাকে সঠিক অবস্থায় রাখে। লেবুর রস আর লবণ পানি পান করলে পিএইচ মাত্রা ঠিক থাকে।
আরও পড়ুন – মেথি | যে ৭ টি কারণে মেথি খাওয়া উচিত
তাহলে আজ এখানেই থাকলো। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু।
ধন্যবাদ।