Homeবিজ্ঞানজীববিজ্ঞানযকৃৎ ও অগ্ন্যাশয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

যকৃৎ ও অগ্ন্যাশয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

মানবদেহের বড় ও একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি হচ্ছে যকৃৎ। এটি একটি অভ্যন্তরীণ অঙ্গ। অপরদিকে অগ্ন্যাশয় একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশ্রগ্রন্থি। আমাদের দেহের জন্য এ দুটি গ্রন্থিই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তাহলে এ দুটি গ্রন্থি সম্পর্কে জেনে নেই।

যকৃৎ (Liver) কি?

যকৃৎ এর ইংরেজি হচ্ছে Liver. একে আবার কলিজাও বলা হয়। শরীরের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি হচ্ছে যকৃৎ। এটি পরিপাকতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর রং লালচে খয়েরি। এর ওজন প্রায় ১.৫ কেজি। এটি দুটি খণ্ডে বিভক্ত যথাঃ

  • ডান লোবে (Right Lobe)
  • বাম লোবে (Left Lobe)

বাম লোবের আবার দুটি অংশ আছে। যথাঃ

  • কডেট লোব
  • কোয়াড্রেট লোব

যকৃৎ এর অবস্থান

যকৃত বক্ষপঞ্জির মধ্যচ্ছদার নিচে উদরগহ্বরের উপরে, পাকস্থলীর ডানপাশ অবস্থিত। অর্থাৎ, এবডোমেনের ডান হাইপোকন্ড্রিয়াক, এপিগ্যাস্টিক ও কিছু অংশ বাম হাইপোকন্ড্রিয়াক অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।

যকৃৎকে রসায়ন গবেষণাগার বলা হয় কেন?

যকৃৎ মানবদেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি বলে পরিচিত।যকৃৎ এ বিভিন্নরকম জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে, এ কারণে একে রসায়ন গবেষণাগার বলা হয়।

যকৃৎ এর গঠন

যকৃৎ এর রং লালচে খয়েরি। এর ডান খণ্ডটি বাম খন্ড থেকে কিছুটা বড়। এটি চারটি অসম্পূর্ণ খন্ড নিয়ে গঠিত। প্রত্যেকটা খণ্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লোবিউল দিয়ে তৈরি। আর এ প্রত্যেকটা লোবিউলে অসংখ্য কোষ থাকে। এ কোষ পিত্তরস তৈরি করে। পিত্তরস ক্ষারীয় গুণসম্পন্ন। যকৃতের বিভিন্ন রকম জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে।

যকৃৎ এর নিচের অংশ পিত্তথলি বা পিত্তাশয় সংলগ্ন থাকে। এখানে পিত্তরস জমা হয়। পিত্তরসের রং গাঢ় সবুজ। এর স্বাদ তিক্ত। পিত্তথলি পিত্তনালীর সাহায্যে অগ্নাশয় নালির সাথে মিলিত হয়। এটি যকৃৎ অগ্ন্যাশয় এর মাধ্যমে ডিওডেনামে প্রবেশ করে।

যকৃৎ এর কাজ

  • যকৃৎ পিত্তরস তৈরি করে নিঃসরণ করে।
  • অ্যালবুমিন, ফিব্রিনোজেন,প্রোথম্বিন নামক প্লাজমা প্রোটিন সৃষ্টি করে।
  • গ্লাইকোজেন হিসেবে খাবার সঞ্চয় করে।
  • বিভিন্ন ধরনের খাবারের বিপাকে সহায়তা করে।
  • বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ( এ,বি, আয়রন) সমূহকে সঞ্চয় করে।
  • লৌহ ও পটাশিয়াম সঞ্চয় করে
  • শরীরকে নানারকম রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে করে প্রটেক্ট করে।
  • এটি গর্ভাবস্থায় লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করে।
  • রক্তে গ্লুকোজের ভারসাম্য রক্ষা করে।
  • বিভিন্ন ক্ষতিকারক বস্তু ও ঔষধকে কম ক্ষতিকারক পদার্থের রূপান্তরিত করে ইত্যাদি।

অগ্ন্যাশয়

পাকিস্তানের পিছনে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশ্র গ্রন্থি হচ্ছে অগ্ন্যাশয়। অর্থাৎ, এনজাইম ও হরমোন নিঃসরণকারী মিশ্র গ্রন্থিকে বলা হয় অগ্নাশয়

অগ্ন্যাশয় এর অবস্থান

অগ্ন্যাশয় পাকস্থলীর পিছনে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত।

অগ্ন্যাশয়কে মিশ্র গ্রন্থি বলা হয় কেন?

অগ্ন্যাশয় মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশ্র গ্রন্থি । এটি একাধারে পরিপাকে অংশগ্রহণকারী এনজাইম ও রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনকো নিঃসৃত করে। অর্থাৎ এটি বহিক্ষরা ও অন্তক্ষরা দু ধরণের গ্রন্থির মতোই কাজ করে।তাই অগ্ন্যাশয়কে মিশ্র গ্রন্থি বলা হয়।

আরও পড়ুন – রক্ত | রক্তের প্রকারভেদ ও কাজ

অগ্ন্যাশয়ের গঠন

অগ্ন্যাশয় পাকস্থলীর পেছনে অবস্থিত একটি মিশ্র গ্রন্থি। এটি থেকে অগ্ন্যাশয়রস নিঃসৃত হয়। এটি অগ্নাশয় নালির মাধ্যমে যকৃৎ অগ্ন্যাশয় নালি দিয়ে ডিওডেনামে প্রবেশ করে। এটি পরিপাকে অংশগ্রহণকারী এনজাইম নিঃসরণকারী হরমোন নিঃসরণ করে। অর্থাৎ এটি বহিক্ষরা ও অন্তক্ষরার মত কাজ করে।

অগ্ন্যাশয়ের কাজ

  • এটি অগ্ন্যাশয় রস নিঃসৃত করে।
  • অগ্ন্যাশয় রসে ট্রিপসিন, লাইপেজ, অ্যামাইলেজ নামক উৎসেচক থাকে। এসব এনজাইম শর্করা, আমিষ এবং স্নেহজাতীয় খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে।
  • এটি অম্ল ও ক্ষারের সাম্যতা, পানির সমতা, দেহতাপ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।
  • অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে অগ্ন্যাশয় এর একটি অংশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু হরমোন (যেমন -গ্লুকাগন, ইনসুলিন) নিঃসরণ করে।
  • এটি অন্তঃক্ষরা ও বহিঃক্ষরা উভয় ধরনের গ্রন্থির মত কাজ করে।

তাহলে আজ এখানেই থাকলো। খুব শীঘ্রই আপনাদের সামনে আরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হব। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন। আর আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

1 COMMENT

  1. যকৃতের কোন খন্ডে পিত্তথলি অবস্থিত?

    ক. ডান
    খ. কোয়াড্রেট

    কোনটা হবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent posts

Recent comments