Homeপ্রযুক্তিপ্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য৭ টি জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার (কম্পিউটারের জন্য)

৭ টি জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার (কম্পিউটারের জন্য)

আপনি কি আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ভিডিও এডিটিং করার জন্য সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার খুঁজছেন? তবে আপনি একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন।

ভিডিও এডিটিং এর জন্য বর্তমানে বাজারে অনেক ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার পাওয়া যায়। যারা নতুন ভিডিও এডিটিং শিখছেন বা শিখতে আগ্রহী, তাদের জন্য কোনটি সবচেয়ে ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার সেটি নির্বাচন করা একটু কষ্টকর।

তবে এটা কোন সমস্যা নয়। কারণ এই সমস্যার সমাধান দিতে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য লিখা হয়েছে।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সেরা 7 টি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর তালিকা তালিকা দিচ্ছি। এখানে যতগুলো সফটওয়্যার এর তালিকা দিব, তার সবগুলোই মোটামুটি মানসম্মত এবং আপনার জন্য উপযোগী হবে বলে আশা করি।

এই সফটওয়্যার গুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার এডিট করা ভিডিও চাইলে ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি যখন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং শিখে যাবেন তখন আপনি চাইলে বিভিন্ন প্লাটফর্মে আপনার ভিডিও আপলোড করে টাকা আয় করতে পারবেন।

আপনি যদি অনলাইনে টাকা আয় করতে চান, তবে ইউটিউবে ভাইরাল ভিডিও বানিয়ে আয় করুন এ আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার উপকারে আসবে।

তো চলুন কম্পিউটারের জন্য সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার কোনগুলো তা দেখে নেই।

সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার [সেরা ৫]

1. Adobe Premiere Pro

Adobe Premiere Pro একটি স্বনামধন্য ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। এটি এডোবি ক্রিয়েটিভ ক্লাউড অধীনে থাকা একটি সফটওয়্যার। আমরা সবাই এডোবি প্রোডাক্ট গুলো সম্পর্কে কমবেশি জানি। এডোবি সফটওয়্যার গুলো অনেক শক্তিশালী এবং মানসম্মত হয়ে থাকে।

এডোবি ক্রিয়েটিভ ক্লাউড 2003 সালে এই সফটওয়্যারটি উন্মোচন করে। বিবিসি নিউজ এবং সিএনএনের মতো বড়-বড় নিউজ প্রতিষ্ঠান এডোবি প্রিমিয়ার প্রো এর মাধ্যমে ভিডিও এডিটিং করে থাকে।

এছাড়া অনেক জনপ্রিয় ইংলিশ মুভি এডোবি প্রিমিয়ার প্রো দ্বারা এডিট করা হয়ে থাকে। Deadpool এবং Superman এর মতো মুভিতেও এডোবি প্রিমিয়ার প্রো ব্যবহার করা হয়েছে.!!!

বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট, লেয়ার এডজাস্টমেন্ট, ভিডিও ট্রানজিশন, টাইম রেন্ডারিং, ক্লিক স্পিড, ট্রাকিং ইফেক্ট ছাড়াও আরো অনেক অনেক ফিচার আপনি প্রিমিয়াম প্রো তে পাবেন।

মূলত প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং এর জন্য আপনার যা যা প্রয়োজন তাই সবকিছুই আপনি এই সফটওয়্যার পাবেন। তবে নতুনদের জন্য Adobe Premiere Pro সফটওয়্যার টি কিছুটা কঠিন লাগতে পারে।

তবে, সেক্ষেত্রে আপনি ফিলমোরা ইউজ করতে পারেন। নতুনদের জন্য ফিলমোরা সফটওয়্যার টি অনেক সহজ বলে মনে হতে পারে।

খরচ (Pricing)

অ্যাডোবির কোন সফটওয়ারই বাজারে বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। অ্যাডোবি সফ্টওয়্যার ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এডোবি প্রিমিয়ার প্রো সফটওয়্যার টি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে মাসিক 20.99 ডলার ব্যয় করতে হবে। তবে তারা সাতদিনের ফ্রী ট্রায়াল’ অফার করে। চাইলে ফ্রি ট্রায়াল ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

ভিজিট ওয়েবসাইট

2. CyberLink PowerDirector

পাওয়ার ডিরেক্টর সফটওয়্যার টি অনেক শক্তিশালী একটা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।

এটিতে বিভিন্ন টুলস ছাড়াও কালার এডজাস্টমেন্ট, মাল্টি ক্যাম এডিটিং, মোশন ট্রাকিং, ভিডিও কোলাজ (Collage) সহ অসংখ্য ফিচার রয়েছে। এসব ফিচার ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার এডিটিং হবে অনেক প্রাণবন্ত।

তাছাড়া পাওয়ার ডিরেক্টর সফটওয়্যারটি 360° ভিডিও, 4কে ভিডিও সাপোর্ট করে। তাই খুব সহজেই এই সব ডাইমেনশনের ভিডিও আপনি চাইলেই এডিট করতে পারবেন।

মূল্য (Pricing)

পাওয়ার ডিরেক্টর সফটওয়্যারটি বাজারে বিনামূল্যে পাওয়া যাবেনা। এটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে 79.99 ডলার খরচ করে কিনে নিতে হবে।

ভিজিট ওয়েবসাইট

3. Filmora

জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে ফিলমোরা অন্যতম। ভিডিও এডিটিং এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সকল ফিচারই আপনি ফিলমোরা তে পাবেন।

নতুনদের জন্য ফিলমোরা হচ্ছে বেস্ট সলিউশন। চমকপ্রদ এবং সহজবোধ্য ইউজার ইন্টারফেস নিয়ে তৈরি ফিলমোরা অত্যন্ত মানসম্মত একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।

তাই এটি ব্যবহার করার জন্য আপনাকে কোন প্রফেশনাল কোর্স করতে হবে না। এর ইউজার ইন্টারফেস অনেক সহজ হওয়ায় এটি ব্যবহার করা খুবই সহজ।

মূল্য ( Pricing)

ফিলমোরা একটি পেইড সফটওয়্যার। তাই এটি ব্যবহার করার জন্য আপনাকে টাকা দিতে হবে। প্রায় 60 ডলার খরচ করে আপনাকে এটি কিনে নিতে হবে।

ভিজিট ওয়েবসাইট

4.LightWorks

ভিডিও এডিটিং এর জগতে লাইটওয়র্কস অনেক পুরনো নাম। 1989 সালে লাইটওয়র্কস বাজারে ছাড়া হয়। বাজারে আসার পর থেকেই এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। নব্বইয়ের দশকে হলিউডের বেশ কিছু ছবির এডিটিং এর জন্য Light Works ব্যবহার করা হয়েছে।

আগে এর জনপ্রিয়তা ছিল অনেক। আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমে গেছে। তারপরও এখনো লাইট ওয়ার্কস নতুনদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। তাই আপনিও চাইলে কোন দ্বিধা ছাড়াই এটি ব্যবহার করতে পারেন।

মূল্য (Pricing)

লাইটওয়র্কস একটি ওপেনসোর্স সফটওয়্যার। এটি অনলাইনে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এছাড়া এর একটি প্রো ভার্সন রয়েছে। তবে যারা ভিডিও এডিটিং এর নতুন, তাদের জন্য ফ্রী ভার্শন ই যথেষ্ট।

5. Camtasia Studio

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার গলোর মধ্যে ক্যামটাসিয়া স্টুডিওর কথা না বললেই নয়। আপনি যদি ইউটিউবে টিউটোরিয়াল ভিডিও বানাতে চান তবে ক্যামটাসিয়া ষ্টুডিও আপনার জন্য বেস্ট সলিউশন। টিউটোরিয়াল ভিডিও বানানোর জন্য এটি সেরা সফটওয়্যার।

আপনার প্রয়োজনীয় প্রায় সকল ফিচারই আপনি এই সফটওয়্যার পাবেন।

যারা টিউটোরিয়াল ভিডিও বানান তাদের প্রধান হাতিয়ার এই ক্যামটাসিয়া। এর ইউজার ইন্টারফেস অনেক সহজ। তাই যে কেউ এটি ব্যবহার করতে পারবে।

এই পেইড সফটওয়্যারটি বিশ্বের প্রায় 24 মিলিয়নের বেশি মানুষ ব্যবহার করে থাকে।

ভিজিট ওয়েবসাইট

6. Vegas Pro

Vegas Pro একটি পাওয়ার ফুল ভিডিও এডিটর। মোশন ট্রাকিং, ভিডিও স্টেবিলাইজার, 360° ভিডিও এডিটিং, অটোমেটিক ভিডিও সাবটাইটেল, মালটি ক্যাম এডিটিং, Fx মাস্কিং সহ প্রায় সব ফিচারই এখানে পাবেন।

তাই এটি যে প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করতে সক্ষম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া ভিজুয়াল ইফেক্টস ফিচার এটাতে ইন্টিগ্রেট করা থাকে। তাই এর জন্য আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করার দরকার পড়ে না।

Vegas Pro এর আরেকটি অন্যতম ফিচার হলো কাস্টমাইজেবল ইউজার ইন্টারফেস। এরপর আপনি নিজের মতো করে এজার ইন্টারফেস তৈরি করতে পারবেন। যেভাবে আপনার জন্য ভালো হয় এবং সহজ লাগে আপনি সে ভাবেই কাস্টমাইজ করতে পারবেন।

ভিজিট ওয়েবসাইট

7. Magix Movie Edit Pro

Magix Movie Edit Pro 2001 সালে সর্বপ্রথম বাজারে ছাড়া হয়। বর্তমানে ইউরোপের বাজারে ভিডিও এডিটিং এর এই অ্যাপটি শীর্ষস্থান দখল করে আছে।

ইউজার ইন্টারফেস যথেষ্ট চমকপ্রদ। প্রয়োজনীয় সকল ফিচার থাকায় এটি প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং এর জন্য একটি উপযুক্ত সফটওয়্যার।

এটিতে ভিডিও রেন্ডারিং অনেক দ্রুত হয়। এছাড়া এর আরেকটি অন্যতম ফিচার হল, এটি ভিডিও স্টেবিলাইজ করতে সক্ষম। তাই আপনি যদি এত একসাথে অনেকগুলো ভিডিও এড করেন, তারপরও এটি আনস্টেবল হবে না।

সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে 79.99 ডলার দিয়ে কিনে নিতে হবে।

ভিজিট ওয়েবসাইট

সারকথা

উপরে যে ভিডিও এডিটর গুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সবগুলোই যথেষ্ট উন্নত মানের সফটওয়্যার। সফটওয়্যার গুলোর সবগুলোই পেইড সফটওয়্যার। তাই এগুলো ব্যবহার করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিনে ব্যবহার করতে হবে।

তবে অনেকেই আছে যারা এই সফটওয়্যার গুলো ক্র্যাক করে ব্যবহার করে। ক্রাকিং এর মাধ্যমে কোন খরচ ছাড়াই আপনি পেইড সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করা কোনোভাবেই উচিত নয়। এটি পুরোপুরি অবৈধ।

তাই কোনভাবেই আপনাকে আমি ট্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করার পরামর্শ দিব না। অনেক ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আছে যেগুলো ফ্রী। আপনি চাইলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আর একান্তই যদি আপনার পেইড সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে তবে আমি বলব একটু কষ্ট হলেও কিনে ব্যবহার করুন।


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করি ব্লগ টি আপনার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent posts

Recent comments