বর্তমান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর যুগ। প্রতিনিয়ত তথ্যকে কাজে লাগিয়ে মানুষ সৃষ্টি করছে সহজ, সুন্দর ও প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্ব। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বর্তমান বিশ্ব একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে।ঘরে বসেই আমরা অল্প সময়ের মধ্যে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাচ্ছি। এ কারণে বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান অতুলনীয় ।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান
বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি ধারণা, যেখানে বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই তাদের চিন্তা ভাবনা, সংস্কৃতি কৃষ্টি ইত্যাদির পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া মাধ্যমে একে অপরকে সহযোগিতা করে থাকে। তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমশ উন্নতি ও দ্রুত বিস্তারের ফলে পৃথিবী আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসছে। এর ফলে আমরা সহজেই দূরবর্তী স্থানে থেকেও যে কোনো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারছি।
যেমন- রেডিও এর আবিষ্কার যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রেখেছে। আগে নিজে তো শুধু কথা শোনা যেত এরপর আবিষ্কার হল টিভি। এর ফলে কথা ও ছবি একত্রে দেখা সম্ভব হয়।তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন করেছে আধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তি। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে আন্তঃমহাদেশীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা।এর ফলে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের লোকজন ঘরে বসেই সরাসরি যোগাযোগ করতে পারছে একে অন্যের সাথে। অর্থাৎ পৃথিবী কে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তিনির্ভর তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। সারা পৃথিবীর পরিণত হয়েছে একটি বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজে।
আরও পড়ুন – বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ কি? বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজের সুবিধা ও অসুবিধা
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক অবদান এনেছে ইন্টারনেট আবিষ্কার। ইন্টারনেটের সুবাদে এখন ঘরে বসেই বিশ্বকে পাওয়া যাচ্ছে হাতের মুঠোয়। প্রচলিত চিঠির মাধ্যমে এসেছে ই-মেইল এর ব্যবস্থা।এর কল্যাণে এখন ঘরে বসেই টেক্সট, ভয়েজ, ভিডিও চ্যাটিং ,ভিডিও কনফারেন্সিং ,ব্রডকাস্টিং ,ভিওআইপি ,অনলাইন ভিডিও, অডিও স্ট্রিমিং ,সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি করা সম্ভব হচ্ছে। অনলাইন রেডিও ,অনলাইন টিভির মতো সেবাগুলো পাওয়া যাচ্ছে ।বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি ওয়েবসাইট তথ্যের প্রবণতাকে আরো সহজ করেছে।
টেলিফোনের মাধ্যমে শব্দকে ইলেক্ট্রনিক ডাটায় পরিণত করে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে প্রেরণ করা যায়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি শক্তিশালী উদ্ভাবন হলো মোবাইল ফোন। এর মাধ্যমে সবকিছুই করা সম্ভব হচ্ছে। আধুনিক স্মার্টফোন গুলো আরো বেশি সুবিধা দিচ্ছে। এক মোবাইল ফোনেই যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে।
এ সব কিছুর পিছনে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান।এতসব প্রযুক্তির সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি এসেছে সমকেন্দ্রিকতায় । দিন দিন এ প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে। আর এ উন্নতির ধারা যতদিন অব্যাহত থাকবে ততদিন ততো দ্রুত তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে। ফলে দিন দিন বিশ্ব আরো ছোট হতে থাকবে। তাই বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান অপরিসীম।