তারাবির নামাজের নিয়ত, দোয়া, ও মোনাজাত | অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মাঝে অন্যতম একটি স্তম্ভ হচ্ছে রোজা। পবিত্র রমজান মাসে রোযা রাখা হয়। এ মাসে রোযা রাখতে মুসলমানরা প্রতিদিন রাতে এশার নামাজের পর তারাবির নামাজ আদায় করে থাকে। চলুন তাহলে তারাবির নামাজের নিয়ত, দোয়া, ও মোনাজাত সম্পর্কে জেনে নেই। এ সম্পর্কে জানার আগে তারাবি কি সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।

তারাবিহ কি?

তারাবি শব্দ হলো বহুবচন। এর একবচন হলো তারবিহ্। আরবিতে তারাবিহর অর্থ হলো বিশ্রাম করা, স্বস্তি, শান্তি, প্রশান্তি ইত্যাদি। এশার নামাজের পর রমজান মাসে যে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২০ রাকাআত সালাত আদায় করা হয় তাকে, তারাবির নামাজ বলে।

আবার বলা যায়, লম্বা কেরাতে প্রত্যেক ৪ রাকাআত নামাজ পড়ার পর পর সামান্য বিশ্রাম নেওয়ার মাধ্যমে রাত জেগে যে সালাত আদায় করা হয়, তাকেই তারাবিহর নামাজ বলে। এ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।

তারাবির নামাজ ৮ নাকি ২০ রাকাআত

তারাবিহর নামাজ হলো এক ধরণের নফল ইবাদাত। এর জন্য নির্দিষ্ট কোন রাকাআতের সংখ্যা বলা হয় নি। দুই রাকাআত করে ৮ রাকাআত, ১০ রাকাআত, ১২ রাকাআত, ১৬ রাকাআত, ২০ রাকাআত পড়া যায়। মূলত এর জন্য কত রাকাআত পড়া লাগবে নবী (সাঃ) তা নির্ধারণ করে যান নি।

তারাবির নামাজ পুরুষদের জন্য মসজিদে জামাআতের সহিত আদায় করা সুন্নাত। এ নামাজে কোরআন শরিফ খতম করাও সুন্নাত। এ নামাজের সময় হলো এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।

তারাবির নামাজের ফজিলত

তারাবির নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ইমান ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রোজা রাখেন, তারাবি নামাজ পড়েন এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করেন, তাঁর জীবনের পূর্বের সব গুনাহ মাফ করা হবে।” (বুখারি ও মুসলিম)

তারাবির নামাজের নিয়ত

نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة التراويح سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر

উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা, রাকাআতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।

তারাবিহর নামাজের দোয়া

سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

বাংলা উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

তারাবিহ শেষে মুনাজাত

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’

আরও পড়ুন: তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়মঃ বাংলা উচ্চারণ সহ নিয়ত এবং পড়ার নিয়ম

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *