টুইটার (Twitter) একটি জনপ্রিয় সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এটি বিশ্বের শীর্ষ 3 টি জনপ্রিয় সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একটি।এটি সেলিব্রিটি, কোম্পানি, ব্র্যান্ড এবং আরও অনেক কিছু অফিশিয়াল ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্টের জন্য একটি জায়গা। এটি কেবল ব্যক্তিগত চিন্তাগুলি ভাগ করে নেওয়ার জন্যই ব্যবহৃত হয় না, লোকেরা প্রডাক্ট বা সার্ভিসের বিরুদ্ধে তাদের কমপ্লেন উত্থাপন করতে এটি ব্যবহার করে।
ফেসবুকের মতোই এটি খুবই জনপ্রিয় নেটওর্য়াকিং প্লাটফর্ম। কিন্তু টুইটারকে সেইভাবে কেউ ইউজ করে না। তবে আমাদের মাঝে অনেক বন্ধু আছেন যারা Twitter ব্যবহার করতে চান,কিন্তু তারা জানে না কিভাবে টুইটার একাউন্ট খুলতে হয়।তাই আমি এই আর্টিকেলে নিজে নিজে কীভাবে টুইটার একাউন্ট খুলতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করবো। তার আগে চলুন জেনে নেই টুইটার (Twitter) কী?
টুইটার(Twitter)কী?
টুইটার হ’ল একটি আমেরিকান মাইক্রোব্লগিং এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সার্ভিস। যার উপর ব্যবহারকারীরা “টুইট” হিসাবে পরিচিত মেসেসগুলো পোস্ট এবং ইন্টারঅ্যাক্ট করে।এখানে ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ১৪০ অক্ষরের মেসেজ আদান-প্রদান ও প্রকাশ করতে পারে।
২০০৬ সালের ২১ মার্চ প্রায় ১৪ বছর পূর্বে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে একই বছরের জুলাই মাসে জ্যাক ডর্সি আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। এর হেডকোয়ার্টার San Francisco, California, United States এ অবস্থিত।
টুইটারের কাজ কি?
Twitter একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম।এটি খুবই জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। সারা পৃথিবীতে এর ইউজার সংখ্যা কোটি কোটি। এর মাধ্যমে শর্ট স্টোরিজ বা ম্যাসেজ পাঠানো যায়। টুইটারের শ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট হচ্ছে এর প্রতিটি টুইট ১৪০ শব্দের মধ্যে লিখতে হয়। অর্থাৎ নিজের কথা কম শব্দে প্রকাশ করতে হয়।
এছাড়া টুইটারের মাধ্যমে ফেসবুকের মতো ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি শেয়ার করা যায়। ফেসবুকের মতোই এটি আপনি সব ডিভাইসেই (মোবাইল, কম্পিউটার.. ইত্যাদি) এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
টুইটারের সুবিধা
- টুইটার একটি খুবই সাধারণ সোশ্যাল নেটওয়ার্ক।
- এর মাধ্যমে চ্যাট করা যায়।
- অডিও, ভিডিও, ছবি ইত্যাদি পাঠানো যায়।
- SMS এর মাধ্যমে টুইট করার সুবিধা।
- এর মাধ্যমে কথা বলে টুইট করা যায় ইত্যাদি।
টুইটার(Twitter) একাউন্ট কীভাবে খুলবেন?
Android/ios অ্যাপ বা ডিরেক্ট ওয়েবসাইট থেকে Twitter একাউন্ট করা যায়। এখানে আমি মোবাইল দিয়ে একাউন্ট খুলে দেখিয়েছি,তবে আপনি চাইলে কম্পিউটারেও একই পদ্ধতি ব্যবহার করে একাউন্ট খুলতে পারবেন। কিভাবে টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলবেন তা জানতে নিচের পদ্ধতিগুলো step-by-step ফলো করুন। ১০ মিনিটেই আপনার একাউন্ট তৈরী করা হয়ে যাবে।
টুইটার ওয়েবসাইট ওপেন করুন
আপনার পিসি (PC) বা মোবাইলের মাধ্যমে যেকোন গুগল বা যেকোন ওয়েব ব্রাউজার ওপেন করুন। পরে “twitter.com” লিখে সার্চ করুন। অথবা নিচের লিংকে ক্লিক করুন – twitter.com
Sign up এ ক্লিক/ট্যাপ করুন
টুইটার ওয়েবসাইট খুলতেই একাউন্ট তৈরী করতে, নতুন পেইজে নীল রঙের “Sign up”লেখা আসে। অ্যাকাউন্ট খুলতে সাইনআপ ক্লিক/ট্যাপ করুন।
নাম ও ফোন নম্বর এবং জন্মতারিখ এট্রি করুন
Sign up করার সাথে সাথে প্রথমেই আপনার নাম ও কন্টাক্ট ইনফরমেশন এবং জন্মতারিখ দিতে হবে।
প্রথম কলামের “Name” লিখা আপনার পুরো নাম লিখুন এবং দ্বিতীয় কলামের “Phone” লিখা অপশনে নিজের মোবাইল নম্বর দিন।
আপনি যদি ফোন নাম্বার দিতে না চান তবে ই-মেইল সিলেক্ট করে ই-মেইল অ্যাড্রেস লিখুন। এরপর তৃতীয় কালামে আপনার জন্মতারিখ সিলেক্ট করে “Next” এ ক্লিক/ট্যাপ করুন।
আপনার এক্সপেরিয়েন্স কাস্টমাইজ করুন
Next এ ট্যাপ করার পর একটি মিনি উইন্ডো ওপেন হবে,এখানে টুইটার আপনার ডাটা কালেক্ট করবে এবং তার জন্য পারমিশন চাইবে।যেকারণে টুইটার আপনাকে সেই সব কনটেন্ট সাজেস্ট করবে যেগুলল আপনি পছন্দ করেন।
আর আপনি যদি না চান তাহলে টিক মার্ক দেওয়ার জায়গায় ক্লিক করে টিক মুক্ত করুন। এরপর Next এ ক্লিক করুন।
আপনার অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করুন
পুনরায় Sign up এ ক্লিক/ট্যাপ করুন।
ভেরিফাই করতে ইমেইল অথবা মোবাইলে otp সেন্ড করুন
Phone- আপনি যদি ফোন নাম্বার দিয়ে সাইন আপ করে থাকেন, তবে ফোন নাম্বার ভেরিফাই করার জন্য টুইটার আপনার ফোনে OTP সেন্ড করার জন্য পারমিশন চাইবে, আপনি Ok করে দিন। দেখবেন মোবাইলে ৬ ডিজিট কোড বা otp চলে এসেছে। এবার সেই otp নাম্বার কপি করে এখানে টাইপ করে শিওর করুন।
Email– আর যদি ইমেইল দিয়ে থাকেন তাহলে ডাইরেক্ট আপনার ই-মেইল id তে ভেরিফিকেশন কোড চলে যাবে । সেখান থেকে code মেইল থেকে কপি করে এখানে টাইপ করে শিওর করুন।
পাসওয়ার্ড তৈরী করুন
ফোন নম্বর বা ইমেইল ভেরিফাই হয়ে যাওয়ার পর আপনাকে একটি Strong পাসওয়ার্ড দিতে হবে।মিনিমাম ৮ অক্ষরের পাসওয়ার্ড দিতে হবে। পাসওয়ার্ড দিয়ে Next এ ক্লিক করুন।
অভিনন্দন। আপনার টুইটার একাউন্ট তৈরী করা হয়ে গেছে ।
প্রোফাইল পিকচার দিন
এবার আপনার একাউন্টে প্রোফাইল পিকচার এড করুন,ছবি এড করে Next করুন,অথবা আপনি যদি এখনি প্রফাইল পিকচার দিতে না চান তাহলে Skip করে দিন।
নিজের সম্পর্কে বর্ণনা করুন
এরপরে ১৬০ বর্ণের মধ্যে নিজের সম্পর্কে ছোট করে মিনি বায়োডাটা লিখে Next করুন। আর যদি এখন দিতে না চাইলে “Skip for now” এ ক্লিক করুন।
ল্যাঙ্গুয়েজ সিলেক্ট করুন
Next স্টেপে আপনি কোন ভাষায় কথা বলেন সেটাতে টিক দিন।যে ভাষাতে কনটেন্ট দেখতে চান সেটাতেও টিক দিয়ে Next এ ক্লিক করুন।
পছন্দের টপিক সিলেক্ট করুন
আপনার কোন টপিকগুলো ভালো লাগে এ নিয়ে টুইটার জানতে চাইবে। আপনি অনেকগুলো ক্যাটাগরি দেখতে পাবেন। যে টপিকগুলো আপনি পছন্দ করেন সেগুলো সিলেক্ট করুন।
এছাড়া আপনি সার্চ করে যেকোনো ক্যাটাগরি, Ideal, Celebrity ,নিউস যাকে ফলো করতে চান তাকে সার্চ করে অ্যাড করতে পারেন। তারপর Next এ ক্লিক করুন।
ফলো করুন
আপনার সিলেক্ট করা ক্যাটাগরিগুলো মতো আপনাকে সাজেস্ট করবে,আপনি যাকে যাকে ফলো করতে চান তাকে ফলো করুন। আর যদি এখন ফলো করতে না চান তাহলে Next করুন।
নোটিফিকেশন
নিয়মিত নোটিফিকেশন চাইলে “Allow notifacation” এ ক্লিক করুন আর যদি না চান তাহলে “Skip for now ” এ ক্লিক করুন।
টুইটার হোমপেইজ
শেষে আপনার টুইটার হোমপেইজ ওপেন হবে , আপনি let’s Go তে ক্লিক করে যা যা Follow করতে চান (যেমন- নিউস, স্পোর্টস, বলিউড,কমেডি,এন্টার্টেমেন্ট) সেই পেইজগুলোকে ফলো করুন।
ব্যাস সব কাজ শেষ।এবার আপনি যদি স্মার্টফোনে টুইটার অ্যাপ ইনস্টল করে লগ ইন করে নেন তাহলে ফেসবুকের মতো টুইটারও নিয়মিত ইউজ করতে পারবেন।
কিছুদিন টুইটার চালালেই আপনি এর সব ফাংশন, বৈশিষ্ট্য সহজেই বুঝতে পারবেন।
তাহলে বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি। আশা করি Twitter একাউন্ট খুলতে আর কোনো অসুবিধে হবে না। যদি কোন অসুবিধা হয় তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। ধন্যবাদ।