সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি বা ব্যবসায়ী বা বাৎসরিক আয় যদি ২,৫০,০০০ টাকার বেশি হয় তবে আপনাকে অবশ্যই ই-টিআইএন (e-TIN) নাম্বার গ্রহণ করে নিবন্ধিত হতে হবে। অর্থাৎ,আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ তে বলা হয়েছে, ন্যূনতম করমুক্ত এই সীমা (২,৫০,০০০) অতিক্রম করলে রিটার্ন দাখিলের জন্য একজন করদাতাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে কোন আইকর কমিশনারের অধীনস্থ সার্কেল থেকে 12 ডিজিটের ই-টিআইএন অর্থাৎ ইলেকট্রনিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর নিতে হয়। এটা হচ্ছে আয়কর নিবন্ধনের আধুনিক সংস্করণ।
আয়কর নিবন্ধনের মাধ্যমে করদাতা হিসেবে সনাক্ত করা হয়। আর এ নিবন্ধিত করদাতা বছর শেষে রিটার্ন জমা দেওয়ার মাধ্যমে বাৎসরিক আয় ব্যয় ও সঞ্চয় বর্ণনা করে। একজন করদাতা ঘরে বসে খুব সহজে অনলাইনে ই-টিআইএন নিবন্ধন সেবা নিতে পারে। অনলাইনে ই-টিআইএন নিবন্ধনের ধাপ নিচে আলোচনা করা হলো –
অনলাইনে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন বা রি-রেজিস্ট্রেশনের জন্য যেসব জিনিস প্রয়োজন
প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিকের ক্ষেত্রে
প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিকের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর অথবা পাসপোর্ট নম্বর (রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে) প্রয়োজন।
অপ্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিকের ক্ষেত্রে
অপ্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিকের ক্ষেত্রে অভিভাবকের 12 ডিজিটের ই-টিআইএন (নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনকৃত), সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পূর্বের ই-টিআইএন ( রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে)
পড়ুন – একটি ফোনে দুটি IMEI নম্বর থাকে কেন? এটি কিভাবে ব্লক করা যায়?
প্রাপ্তবয়স্ক বিদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে
পাসপোর্ট নম্বর, ভিসা নম্বর, ডিজিটাল ফরম্যাটে সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পূর্বের ই-টিআইএন ( রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে)
অপ্রাপ্তবয়স্ক বিদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে
নিজের এবং অভিভাবকের পাসপোর্ট নম্বর, ভিসা নম্বর, ডিজিটাল ফরম্যাটে সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পর্বের ই-টিআইএন (রি-রেজিস্ট্রেশন এর ক্ষেত্রে)
লিমিটেড কোম্পানি
কম্পানি ইনকর্পোরেশন নাম্বার, তারিখ, পূর্বের ই-টিআইএন (রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে)
রেজিস্টার্ড ফার্ম
রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এন্ড ফার্মস (RJSC) রেজিস্ট্রেশন নম্বর, রেজিস্ট্রেশন তারিখ, অংশীদারের 12 ডিজিটের ই-টিআইএন ( নতুন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনকৃত), পূর্বের ই-টিআইএন (রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে)
আন-রেজিস্টার্ড ফার্ম
অংশীদারের 12 ডিজিটের ই-টিআইএন ( নতুন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনকৃত), পূর্বের ই-টিআইএন (রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে)
ব্যক্তিসংঘ, অবিভক্ত হিন্দু পরিবার
ক্ষমতাবান ব্যক্তির 12 ডিজিটের ই-টিআইএন ( নতুন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনকৃত), পূর্বের ই-টিআইএন (রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে)
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, আইন দ্বারা কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা, co-operative সোসাইটি এবং ধারা 2 (২০) অনুযায়ী গঠিত অন্যান্য কোম্পানি
করদাতার প্রতিষ্ঠান নাম, ঠিকানা ফ্যাক্স নম্বর email-id (রেজিস্ট্রেশন ক্ষেত্রে)পূর্বের ই-টিআইএন (রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে)
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, আইন দ্বারা কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা, Co-operative সোসাইটি এবং ধারা 2 (২০) অনুযায়ী গঠিত অন্যান্য কোম্পানি
করদাতার প্রতিষ্ঠান নাম, ঠিকানা ফ্যাক্স নম্বর Email-id (রেজিস্ট্রেশন ক্ষেত্রে),পূর্বের ই-টিআইএন (রি-রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে), নতুন পদ্ধতিতে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশন এর শুরুতে প্রত্যেককে অবশ্যই অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন – আপওয়ার্ক একাউন্ট থেকে কিভাবে পেমেন্ট নিবেন?
একাউন্ট তৈরির উপায়
- প্রথমে www.incometax.gov.bd ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন।
- এরপর হোমপেইজের Register বাটনে ক্লিক করলে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম ওপেন হবে।
- ফর্মে তথ্য প্রদান করার পর আপনার মুঠোফোনে তাৎক্ষণিক একটি কোড আসবে। এরপর ডায়ালগ বক্সে প্রদত্ত কোডটি প্রবেশ করান।
- এরপর Active বাটনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর আপনি Welcome to Taxpayers Identification Number (TIN) Registration or Re- Registration দেখতে পাবেন।
- এবার Registration or Re- Registration ফর্মে প্রদর্শিত খালি ঘরগুলো পূরণ করে Go to Next এ ক্লিক করুন।
নোট: নতুন করদাতাগণ Registration বাটনে এবং পুরাতন করদাতাগণ যাদের ই-টিআইএন নাম্বার আছে তারা Re- Registration বাটনে ক্লিক করবেন।
- এরপর Basic Information ফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে Go to Next বাটনে ক্লিক করুন।
- এরপর প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিকদের (যাদের NID কার্ড নেই) নতুন ই-টিআইএন রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে এই পর্যায়ে ডিজিটাল ফরম্যাটে সদ্য তোলা 1 কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি আপলোড করতে হবে।
- তারপর Final preview তে আপনার দেওয়া সব তথ্য গুলো ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নিন। সবকিছু ঠিক থাকলে Final preview এয়ার একেবারে নিচে চেক বক্সে টিক চিহ্ন দিন।
- এরপর Submit Application বাটনে ক্লিক করুন। এখানে ক্লিক করার পর রেজিস্ট্রেশন / রি-রেজিস্ট্রেশন কারী নতুন 12 ডিজিটের ই-টিআইএন নাম্বার পাবেন। তাদের প্রাপ্তবয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক আবেদনকারী যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই এবং যিনি পাসপোর্ট এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন / রি-রেজিস্ট্রেশন করতে চান তিনি একটি টিকিট পাবেন। টিকেট প্রিন্ট করে তাতে উল্লেখিত নিয়ম অনুসরণ করে ক্রিকেটে উল্লেখিত আয়কর কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে। ব্যস তাহলেই কাজ শেষ।
তাহলে বন্ধুরা আজ এখানেই থাকলো। ঘরে বসেই কীভাবে ই- টিআইএন বানিয়ে নেবেন আশা করি সে সম্পর্কে অল্প কিছু হলেও ধারনা দিতে পেরেছি। আপনি যদি উপরের পদ্ধতিগুলোর অনুসরণ করুন তাহলে খুব সহজেই করতে পারবেন। ধন্যবাদ।