আজকে আপনাদের বলব কিভাবে কোন কোডিং দক্ষতা ছাড়াই একটি এন্ড্রয়েড এপস তৈরী করা যায়।
এই আর্টিকেলে আমরা ৩ টি ওয়েবসাইটের কথা বর্ণণা করব যেগুলো ব্যবহার করে আপনি একটি এন্ড্রয়েড এপস বানাতে পারবেন। এর জন্য আপনার কোন কোডিং দক্ষতার প্রয়োজন হবে না।
মানুষ এখন নিজের এনড্রয়েড ফোনে এনড্রয়েড এপস ব্যবহার করে থাকেন। তাই,আজকাল সব ধরনের ওয়েবসাইট, বিজনেস বা প্রোডাক্টের একটি করে অ্যাপ ভার্সন আপনারা পেয়ে যাবেন।
এমনিতে তো এন্ড্রয়েড এপস তৈরির বিষয় আলাদা এবং তার জন্য আপনার কিছু বিশেষ ধরনের কোডিং বা প্রোগ্রাম ল্যাঙ্গুয়েজ এর নলেজ থাকাটা অনেক জরুরী। এর মধ্যে এমন একটি প্রোগ্রামিং হল জাভা।
যদি আপনার সেটা সম্পর্কে জ্ঞান থাকে তাহলে আপনি সহজেই অ্যাপ তৈরী করতে পারবেন। অবশ্য, এই জাভা ল্যাঙ্গুয়েজ এর আলাদা কোর্স থাকে যেটা আপনি যেকোন কলেজ বা ইনস্টিটিউট থেকে শিখতে পারেন ।
তাছাড়া চাইলে অনলাইনে “w3school java tutorial” এই ওয়য়েবসাইটে গিয়ে জাভা ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে নিতে পারবেন । তারপর আপনারা নিজের ইচ্ছা মত মোবাইল এপস বানিয়ে নিতে পারবেন।
কিন্তু, এখন যদি আপনারা বলেন যে,”আমাদের প্রোগ্রামিং ভাষার কোন জ্ঞান নেই” বা “আমরা জাভা বা অন্য কোন প্রোগ্রামিং না শিখেই এন্ড্রয়েড এপস তৈরী করতে চাই ” তাহলে সেটাও সম্ভব।
ইন্টারনেটে এমন কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে যেগুলো ব্যাবহার করে , আপনারা বিনামূল্যে নিজের এন্ড্রয়েড এপস বানিয়ে নিতে পারবেন এবং সেগুলো দিয়ে টাকাও উপার্জন করতে পারবেন ।
আমি নিচে সেই সেরা ওয়েবসাইট গুলোর ব্যাপারে এক এক করে আপনাদের বলব।
একটি এন্ড্রয়েড এপস কেন প্রয়োজন ? (Why do you need an Android App)
আপনারা হয়তো গুগল প্লে স্টোর এ গিয়ে নিজের এন্ড্রোয়েড মোবাইলের জন্য এপস ডাউনলোড সব সময় করেন। সেখানে আপনারা হাজার রকমের এপস পেয়ে যান যেগুলোর মধ্যে প্রায় ৮০% বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়!
তাহলে কথা হলো যে , যারা সেই এপস গুলো বানাচ্ছে এবং প্লে স্টোরে দিয়ে আমাদের বিনামূল্যে ব্যাবহার করতে দিচ্ছে , তাদের কী লাভ হচ্ছে?
তারাও তো কোন না কোন কারনে প্লে স্টোরে এ দিচ্ছেন। তারা তাদের অ্যাপ প্লে স্টোরে দিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় সার্ভিস দেওয়ার পাশাপাশি মোটা অঙ্কের টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন।
একটি এন্ড্রয়েড এপস বানিয়ে টাকা কামানো অনেক সোজা । আপনার কেবল একটি আকর্ষনীয় মোবাইল অ্যাপ বানাতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, মোবাইল গেম, ফটো এডিটর এপস বা অন্য যে কোন এপস যেটা মানুষের প্রয়োজনে আসবে বা বিনোদন দিবে।
অ্যাপ তৈরী করা শেষ হলে, Google admob এ গিয়ে নিজের একটি একাউন্ট তৈরী করতে হবে । Admob একাউন্ট তৈরীর জন্য আপনার জিমেইল আইডির প্রয়োজন হবে।
এরপর, AdMob একাউন্টে কিছু বিজ্ঞাপন তৈরি করতে হবে যা আপনি নিজের এপস এ দেখাতে পারবেন। বিজ্ঞাপন বানানোও খুব সোজা । মাত্র ৪-৫ মিনিট সময়ের ব্যপার।
এরপর আপনার বানানো বিজ্ঞাপনের জন্য admob আপনাকে কিছু কোড দিবে যা আপনার নিজের অ্যাপে সংযুক্ত করতে হবে। এতে, যখন কেও আপনার এপস ব্যাবহার করবে, সে লাগানো admob এর বিজ্ঞাপন দেখতে পারবে।
যত বেশি লোক আপনার এপস ব্যাবহার করবেন আপনি বিজ্ঞাপন দ্বারা ততটাই বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
মানুষজন Google Play Store এ তাদের এপস গুলো আপলোড করেন বা রেজিস্টার করেন এজন্যই কারন, এটাই একটা জায়গা যেখান থেকে আপনার এপস প্রচুর পরিমানে লোকেরা ডাউনলোড করে ব্যাবহার করতে পারবেন।
বর্তমানে অনেকেই একটি ফ্রী এপস বানিয়ে তাতে admob এর বিজ্ঞাপন ব্যাবহার করে প্রচুর পরিমানে টাকা উপার্জন করে নিচ্ছেন এবং সেটা আপনিও পারবেন ।
তাহলে, এখন হয়ত জেনে গেছেন ,”কেন মানুষজন এপস বানিয়ে Google play Store এ দেন এবং তাদের এতে কি লাভ হয়।
এবং, এখন হয়ত এটাও জেনে গেছেন , ফ্রী এন্ড্রয়েড মোবাইল এপস বানিয়ে আপনার কি লাভ হবে!
কিভাবে এন্ড্রয়েড এপস বানাবেন? (How to make an Android App)
আপনি যদি এন্ড্রয়েড এপস তৈরী করার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে এই আর্টিকেলটি আপনাকে যথেষ্ট সাহায্য করবে।
আমি নিচে কয়েকটি ওয়েবসাইট সম্পর্কে বলব যেগুলো আপনাকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়েবসাইট বানানোর সুবিধা দিবে।
সব কয়টি ওয়েবসাইট আপনারা বিন্যামূল্যে ব্যাবহার করতে পারবেন এবং নিজের জন্য অনেক রকমের এন্ড্রয়েড গেমস এবং অন্য যে কোন রকমের এন্ড্রয়েড এপস বানিয়ে নিতে পারবেন।
ওয়েবসাইট গুলো ব্যবহার করার জন্য আপনাদের, একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এর প্রয়োজন হবে। এবং আপনার খেয়াল রাখতে হবে যাতে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট সংযোগ চালু থাকে ।
তাহলে চলুন, আমরা বিনামূল্যে এন্ড্রয়েড এপস তৈরী করার ৩ টি ওয়েবসাইট এর ব্যাপারে জেনে নেই ।
মোবাইল অ্যাপস বানানোর সেরা ৩ টি ফ্রী ওয়েবসাইট
১. Appsgeyser.Com
যদি আপনি একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগকে এপস এ রূপান্তর করতে চান, তাহলে appsgeyser থেকে আপনি অনেক সহজেই যেকোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে বিনামূল্যে এন্ড্রয়েড এপস এ রূপান্তর করতে পারবেন।
তাছাড়া , মেসেঞ্জার এপস তৈরী ,মোবাইল ওয়েব ব্রাউজার, ফটো এডিটর এপস তৈরী , মোবাইল লাইভ টিভি এপস, ভিডিও ডাউনলোড এপস এবং আরো অনেক ধরনের এন্ড্রয়েড এপস আপনারা এই ওয়েবসাইট এ গিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন ।
আর এজন্য আপনার কোন রকম কোডিং দক্ষতার প্রয়োজন হবে না। শুধু ওয়েবসাইটটিতে যান এবং আপনার নিজের ইচ্ছা মত এপস বানিয়ে নিন ।
এখানে যে কোন ধরনের এপস তৈরীর নিয়ম অনেক সহজ।
আর, Appsgeyser ওয়েবসাইট এ বানানো এপস আপনারা Google play store এ আপলোড করে অর্থও উপার্জন করতে পারবেন।
Visit – Appsgeyser
২. Mobincube
Mobincube থেকে অ্যাপ বানানো অনেক সোজা এবং এই অ্যাপ বিল্ডার থেকে আপনারা অনেক এডভান্সড লেভেলের মোবাইল অ্যাপ তৈরি করতে পারবেন।
এজন্য আপনাকে শুধু ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইন আপ করে নিতে হবে তারপর নিজের বানানো ফ্রি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে গুগল প্লে স্টোরে পাবলিশ করতে পারবেন।
মজার বিষয় হচ্ছে আপনি এখানে শুধু অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ বানাতে পারবেন না এখান থেকে আপনি উইন্ডোজ মোবাইল অ্যাপ এবং অন্য অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ফ্রিতে অ্যাপ বানিয়ে নিতে পারবেন
আশার কথা হচ্ছে এখান থেকে বানানো অ্যাপস গুলি আপনি গুগল প্লে স্টোরে পাবলিশ করে অনেক ডাউনলোড পেতে পারেন।
তাছাড়া এই ওয়েবসাইট থেকে বানানো অ্যাপসে মনিটাইজেশন অপশন চালু করে আপনার অ্যাপ থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। কোন কোডিং দক্ষতা ছাড়াই আপনি এখানে সুন্দর সুন্দর মোবাইলে বানিয়ে নিতে পারবেন এবং এখানে সবকিছুই ফ্রী।
Visit – Mobincube
৩. AppYet
Appyet.com ওয়েবসাইটটি র মাধ্যমে আপনি খুব সহজে আপনার ওয়েবসাইটটিকে একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ এ পরিণত করতে পারবেন।
মূলত এই ওয়েবসাইটের কাজ এটাই। এখানেও আপনি সবকিছুই ফ্রিতে করতে পারবেন এবং কোন কোডিং দক্ষতা ছাড়াই আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
এখানে অ্যাপ বানাতে আপনার সময় লাগবে মাত্র 5 থেকে 10 মিনিট। বানানোর পর আপনি চাইলে তা খুব সহজেই গুগোল প্লায় স্টরে অথবা অন্য কোন অ্যাপ স্টরে পাবলিশ করতে পারবেন।
Visit – AppYet
আপনি যদি একদম ঝামেলা মুক্ত ভাবে এবং বিনামূল্যে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরী করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে উপরের সাইটগুলো অবশ্যই আপনার উপকারে আসবে।
আরো কিছু আর্টিকেলঃ
ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে যা জানা উচিৎ
অনলাইনে ইনকাম করার মত সেরা ১০ টি অনলাইন জব
এই আর্টিকেলটি যদি আপনার উপকারে এসে থাকে তবে অবশ্যই ফেসবুকে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর আর্টিকেলটির বিষয়ে কিছু জানার থাকলে বা কোন মতামত থাকলে কমেন্টে জানাবেন। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ।