ইউটিউব আজ হাজারো মানুষের ইনকাম সোর্সে পরিণত হয়েছে। তার প্রধান কারণ হচ্ছে, এখানে কাজ করে অতি অল্প সময়ে সফলতা লাভ করা যায়। আর খুব সহজে সফলতার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ভাইরাল ভিডিও ।
তবে সময়ের সাথে প্রতিযোগীতা বাড়ছে এখানেও। আর তাই নতুন ইউটিউবারদের জন্য প্রথমের দিকে ভিডিও আপলোড করে সাড়া পাওয়াটাও হচ্ছে কষ্টকর।
অবশ্য, সাড়া না পাওয়ারও অনেক কারণ আছে। আপনাকে ইউটিউবে একটি ভিডিও আপলোড করার আগে অবশ্যই কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে।
তা না হলে, যতই কষ্ট করে যান সফলতা আপনার দিকে ফিরেও তাকাবে না। মানুষ সব সময় নতুনত্ব খুঁজে।
তাই, আপনাকে অবশ্যই ভিডিও তৈরির করার সময় নতুন নতুন আইডিয়া এপ্লাই করতে হবে।
আর একবার যদি আপনার কোন ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় তবে আপনি সফলতার পথে একধাপ এগিয়ে যাবেন।
কারণ, এখন চলছে ভাইরালের যুগ। তাই বর্তমান সময়ে ইউটিউবিং করে সফলতা অর্জন করার জন্য ভাইরাল হওয়া একটি প্রধান হাতিয়ার।
তবে চাইলেই তো আর ভাইরাল হওয়া যায় না। তার জন্য কিছু জিনিস মাথায় রেখে ভিডিও বানাতে হয়।
তাই, আজকে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে একটি ভাইরাল ভিডিও তৈরি করা যায়। তো চলুন ধাপে ধাপে জেনে নেই, একটি ভাইরাল ভিডিও তৈরি করার উপায়….!!!
পড়ুনঃ ইউটিউব থেকে আয় করার A টু Z
কোন টপিক নিয়ে ভিডিও বানাবেন
ভাইরাল ভিডিও বানানোর প্রধান কাঁচামাল হলো টপিক নির্বাচন করা।
আপনি এমন এক টপিক নিয়ে ভিডিও তৈরি করলেন যার চাহিদা খুবই কম, সেক্ষেত্রে উক্ত ভিডিও থেকে সফলতা আসবে না। ভিডিও তৈরির আগে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল করতে হবে চাহিদা সম্পন্ন কন্টেন্ট বা টপিক কোন গুলো।
তবে চাহিদা নির্বাচনের আগে আপনাকে এটা সিলেক্ট করতে হবে যে আপনি কোন বয়সের মানুষদের জন্য ভিডিও তৈরি করতে চান।
তারপর, খেয়াল করবেন উক্ত বয়সের মানুষদের চাহিদা সম্পন্ন টপিক কোনগুলো। এটা করার জন্য আপনি বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চ টুলবার আছে, তা থেকে দেখে নিতে পারেন কোন টপিকের চাহিদা কেমন।
ভাইরাল ভিডিও তৈরির করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অধিক চাহিদা সম্পন্ন টপিকের উপরই ভিডিও বানাতে হবে।
তাহলে আপনার ভিডিও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে, আপনার ইনকামও তত বেড়ে যাবে। তাছাড়া, ভাইরাল ভিডিও বানানোর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক ভান্ডার হলো ট্রেন্ডিং বিষয়। অর্থাৎ, আমরা ফেসবুক, ইউটিউবে প্রায়-ই দেখি সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে বানানো ভিডিও গুলো বেশি রিচ করে। তাই ভাইরাল ভিডিও তৈরির ক্ষেত্রে ট্রেন্ডিং বিষয়বস্তু খুবই কার্যকর।
উপস্থাপনায় সবকিছু
উপস্থাপনায় সবকিছু, তার মানে অবশ্যই বুঝতে পারছেন ভাইরাল ভিডিও তৈরি করতে উপস্থাপনার বিকল্প নাই।
আপনার টপিক যদি দূর্বলও হয়, কিন্তু আপনার সঠিক এবং সুন্দর উপস্থাপনা আপনাকে সফলতার পথ পরিষ্কার করে দিবে।
উপস্থাপনার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, টপিক যাই হোক না কেন, আপনার উপস্থাপনা যেন হয় হাস-রসাত্মক।
আপনি যদি ফেসক্যাম ভিডিও তৈরি করেন, তাহলে আপনার মুখে এবং শরীরের অঙ্গভঙ্গি এক্ষেত্রে অনেকটাই প্রভাব ফেলে।
তাই যতটা সম্ভব মজাদার ভাবে ভিডিওটি উপস্থাপন করুন। তবে আপনি যদি ফেসক্যাম ভিডিও না করে এমনিতে এনিমেটেড বা কোন পিক দিয়ে ভিডিও বানাতে চান সেক্ষেত্রে এনিমেশন গুলো হাস-রসাত্মক করুন আর পিক হলে, পূর্বে ভাইরাল হয়েছে এমন পিক ব্যবহার করুন।
পূর্বে ভাইরাল হয়েছে এমন পিক ব্যবহার করলে, যখন কেউ পিক দেখবে তখনই আপনার ভিডিও চালু করতে যাবে।
কারণ, তারা এটা মনে করে নিবে যে এটাও হয়তো পূর্বের ভাইরাল ভিডিওর মতোই মজাদার।
অর্থাৎ, আপনার ভিডিও ভিউ বেড়ে যাবে। পিক বা এনিমেটেড ভিডিও বানানোর সময় অবশ্যই ভয়েসের দিকে নজর দিন। ভয়েসটা যত সম্ভব মজাদার এবং আকর্ষণীয় করুন।
পোষ্টের সময় ঠিক করুন
গত কয়েকদিন আগের এক রিপোর্টে দেখা গেছে, প্রায় ৭০% ইউটিউব ব্যবহারকারী মোবাইল থেকে ভিডিও দেখেন এবং বাকি ৩০% ব্যবহারকারী ডেক্সটপ থেকে ভিডিও দেখেন।
সাধারণত মানুষ ছুটির দিনে বা কাজের ফাঁকে একটু বিনোদনের জন্য ইউটিউবে ভিডিও দেখেন।
তাই, আপনি যখন কোন ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করবেন তখন অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনার টার্গেটেড মানুষরা দিনের কোন সময়টাতে ইউটিউবে বেশি একটিভ থাকে।
তাদের একটিভ সময়টাতে আপনি পোস্ট না করে যদি অন্য কোন সময়ে পোস্ট করেন তাহলে তারা ইউটিউবে যখন আসবে তখন অন্য ভিডিওর ভিড়ে আপনার ভিডিও অনেক নিচে পড়ে যাবে। তাই সঠিক সময়ে পোস্ট করুন। যখন ইচ্ছে তখন ভুলেও পোস্ট করবেন না। কারণ, সঠিক সময়ে ভিডিও পোস্ট আপনার ভিডিও ভিউ অনেকাংশে বাড়িয়ে দিতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ১০ টি ব্রিলিয়েন্ট ইউটিউব চ্যানেল আইডিয়ায় লক্ষ টাকা ইনকাম করুন
কৌতুহলী টাইটেল ব্যবহার করুন
একটি আকর্ষণীয় টাইটেল যেকোন ভিডিও এর ভিউ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, টাইটেল নির্বাচনে মনোযোগ দিন।
যত কম শব্দের মধ্যে আকর্ষণীয় টাইটেল তৈরি করতে পারবেন, তত বেশি ভিডিও ভিউ হবে। আবার যদি অনেক লম্বা টাইটেল তৈরি করেন তাহলে মোবাইলের স্পেস কম হওয়াই আপনার সম্পূর্ণ টাইটেল দর্শকরা পড়তেই পারবেন।
তাই, টাইটেল বেশি লম্বা করবেন না। এমন ভাবে টাইটেল তৈরি করুন যাতে আপনার টাইটেল পড়লেই যেকারো আপনার ভিডিওটি দেখতে কৌতুহল তৈরি হয়।
ভিডিও এর মান এবং সময়ের দিকে খেয়াল রাখুন
আপনি যদি অনেক লম্বা সময় নিয়ে কোন ভিডিও তৈরি করেন তাহলে দর্কশরা শেষ পর্যন্ত দেখার ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলবে।
এক জরিপে দেখা গেছে, স্বল্প সময়ের ভিডিও গুলোই বেশি ভিউ হয়, লাইক এবং শেয়ার হয়। তাই, অধিক সময় নিয়ে কোন ভিডিও তৈরির দরকার নাই। আপনার ভিডিওটি দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন। লম্বা ভিডিও বানাতে গিয়ে ভিডিও এর মান নষ্ট করে ফেলবেন না। ভিডিওর মান যত ভাল হবে আপনার ভিডিও তত বেশি সফল হবে।
ভিডিও প্রচার করুন
আপনার ভিডিও যদি ভাইরাল করতে চান তাহলে শুরুতে অবশ্যই আপনাকে কিছু জনপ্রিয় মাধ্যমে আপনার ভিডিওটি শেয়ার করতে হবে।
ভিডিও প্রচারের সবচেয়ে কার্যকরী সাইটগুলোর মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্যাগ্রাম। তাছাড়া কিছু জনপ্রিয় সাইট আছে, যেগুলোতে আপনি আপনার ভিডিওর লিংকআপ করে দিতে পারেন। এমন সাইটগুলোর মধ্যে আছে আমাদের সাইট (প্রশ্ন-উত্তর সেকশন), কোরা, বিস্ময় আনসার ইত্যাদি।
তাতে মূলত আপনি, আপনার ভিডিও রিলেটেড কিছু প্রশ্ন খুঁজে বের করে তার একটি আকর্ষণীয় উত্তর দিয়ে আপনার ভিডিওর লিংক দিয়ে দিতে পারেন।
ফলে যারা আপনার উত্তরটি পড়বে তাদের অনেকেই আপনার ভিডিও দেখতে চাইবে। অর্থাৎ আপনার ভিডিও ভিউ কয়েক হাজার বেড়ে যাবে।
সর্বোপরি, একটি ভাইরাল ভিডিও বানাতে হলে আপনার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনি যত নিখুত ভাবে আপনার ভিডিওটি বানাতে পারবেন, আপনার ভিডিও তত বেশি ভাইরাল হবে।
আপনি যদি মজাদার ভাবে ভিডিওটি উপস্থাপন করতে না পারেন তাহলে আপনার সফলতা অনেকটাই কমে আসবে।
তবে অবশ্যই, অধিক মানুষ আগে থেকেই পরিচিত বা সবাই বুঝতে পারে এমন টপিক নিয়ে ভিডিও তৈরি করুন, তাহলে সবাই মজাটা উপভোগ করতে পারবে। ফলে ভিডিও শেয়ার বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। পরিশ্রমীরা সর্বদাই জয়ী হয়।
তাই একবার ভিডিও হিট না করলে হতাশ না হয়ে আবার চেষ্টা করুন। কাজ করে যান, সফলতা আসবেই।